গাজীপুর মিনিস্টার ইলেকট্রনিক্স কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডটি বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে হয়েছে এবং আগুনে কারখানার বিপুল পরিমাণ টেলিভিশন ও হোম অ্যাপ্লায়েন্সসহ বিভিন্ন মালামাল পুড়ে একশ’ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন কারখানার চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক খান রাজ। গতকাল সকালে কারখানা গেটে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে কারখানার চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক খান রাজ বলেন, অগ্নিনিরাপত্তাসহ আগুন নেভানোর সকল সরঞ্জাম কারখানায় বিদ্যমান ছিল। প্রতিমাসে ফায়ার ফাইটিং টিমকে ট্রেনিং করানো হয়। ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশের লাইসেন্স ঠিক আছে। পৌরসভা থেকে নেয়া লাইসেন্স ঠিক আছে। কারখানাটি বিল্ডিং কোড মেনে এবং ফায়ার সার্ভিসের সমস্ত নীতিমালা অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছে। কালকে আগুন লাগার পরে হয়তো সবার মাথা ঠিক ছিল না।
যেহেতু কারখানাটি অনেক দিনের তাই কিছুটা ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে। তারপরও আমরা সকল কিছু মেইনটেন্যান্স করেছি। ত্রুটি যদি থেকেও থাকে ভবিষ্যতে যেন না হয় সেজন্য আমরা কাজ করবো। এই প্রতিষ্ঠানের সকল মালামাল প্লাস্টিক, ফোম জাতীয় সে কারণে অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম থাকা সত্ত্বেও আগুন ব্যাপক আকার লাভ করে এবং বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়। প্রাথমিকভাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে বিস্তারিত তদন্তের পর বলা যাবে। আগুনে বিভিন্ন মালামাল পুড়ে কারখানার অন্তত একশ’ কোটি টাকারও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করছেন তিনি। যেহেতু কারখানাটি বীমা করা আছে তাই সবার সহযোগিতায় আমি মনে করি আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবো।
এ সময় রাজ্জাক খান বলেন, কারখানাটি আমি তিল তিল করে গড়ে তুলেছি। এ কারখানায় প্রায় দুই হাজার শ্রমিক কাজ করে। এ ধরনের দুর্ঘটনা যেন আবার না ঘটে সেজন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, দেশের মানুষকে স্বল্পমূল্যে টিভি-ফ্রিজ দেয়ার জন্য ২০০৯ সালে এ কারখানাটি স্থাপন করা হয়। বর্তমানে দেশের চাহিদা মিটিয়ে এ কারখানার পণ্য বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। এ সময় কারখানার পরিচালক (অপারেশন) হাজী গোলাম মোস্তফা খান, পরিচালক (অর্থ) মুজিবুর রহমান, কারখানার জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মনিরুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, জেলা প্রশাসন গঠিত ৬ সদস্যের তদন্ত টিম আগামীকাল থেকে কাজ শুরু করবে বলে জানিয়েছেন তদন্ত দলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. শফিউল্লাহ। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহীনুর ইসলাম ট্রেনিংয়ে থাকায় তিনি তদন্তের দায়িত্বে কাজ করছেন। শফিউল্লাহ বলেন, ইতিমধ্যে তদন্ত দলের অপর সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। আগামীকাল বিকালে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত শুরু করা হবে।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মামুনুর রশিদ জানান, এখনো ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে আলাদা কোনো তদন্ত টিম গঠন করা হয়নি। তদন্ত টিম গঠন সদর দপ্তরের সিদ্ধান্তের বিষয়। শুক্রবার সকালে মিনিস্টার কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট ৭ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভায়। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।