× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সৌদি তেলক্ষেত্রে হামলা বিশ্ববাজারে সৃষ্টি করবে বড় ধরনের অস্থিরতা

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৪ বছর আগে) সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৯, সোমবার, ৮:৪৮ পূর্বাহ্ন

সৌদি আরব তথা বিশ্বের সব থেকে বড় তেলক্ষেত্রে ইরানপন্থি হুতিদের ড্রোন হামলা হতে যাচ্ছে পৃথিবীর দেশগুলোর জন্য বড় একটি পরীক্ষা। এতে দেখা যাবে দেশগুলো এই ধাক্কা সামাল দিতে কতটুকু সক্ষম। হামলার ফলে তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্বের সব থেকে বেশি তেল রপ্তানিকারী দেশ সৌদি আরবের তেল উৎপাদন অর্ধেকেরও নিচে নেমে এসেছে। ফলে অপরিশোধিত তেলের একটি বড় ধরনের সরবরাহ থেমে গেছে। এর ফলে শিগগিরই একটি সংকটের আশংকা করা হচ্ছে।
সৌদি আরবের তেল উৎপাদনের হৃৎপি- নামে পরিচিত দুটি তেলক্ষেত্রে হুতিদের হামলায় বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে দেশটি। ইতিমধ্যে এর দায় স্বীকার করেছে ইরানপন্থি হুতি যোদ্ধারা। এ হামলার ফলে সৌদি আরবের দৈনিক উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। অর্থাৎ প্রত্যেক দিন এখন ৫৭ লাখ ব্যারেল তেল কম উৎপাদন করতে হবে সৌদিকে।
এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আরামকো।
ফলে ধারণা করা হচ্ছে, সামনের দিনগুলোতে বিশ্বব্যাপী তেলের দাম মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। এবং রোববার রাতে যখন বাজার খুলবে তখনই এটি ¯পষ্ট হয়ে যেতে পারে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা তেলনির্ভর রাষ্ট্রগুলো। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছে, পরিস্থিতি সামাল দিতে তারা তাদের রিজার্ভ থেকে তেল সাপ্লাই দেবে।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর জ্যাসন বর্ডফ এ নিয়ে বলেন, এই হামলার ফলে বিশ্বব্যাপী তেলের দাম লাফিয়ে বাড়তে থাকবে। সৌদি আরব আবার আগের মতো উৎপাদনে ফিরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত অবস্থা এরকম থাকবে। এখনো দেশটি প্রকাশ করছে না তেলক্ষেত্রগুলোতে ভয়াবহতার মাত্রা কেমন। আরামকো’র প্রধান নির্বাহী আমিন নাসির জানিয়েছেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তারা বিষয়টি নিয়ে স¤পূর্ণ ধারণা পাবেন।
বৈশ্বিক তেল শিল্পে আরামকো’র তাৎপর্যতা
সৌদি আরবের দুটি তেলক্ষেত্রে ইরানপন্থি হুতিদের ভয়াবহ ড্রোন হামলার পর আলোচনায় চলে এসেছে বিশ্বের সব থেকে বড় তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আরামকো। এটি দেশটির রাষ্ট্রীয় তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠানটির রিজার্ভ ছিল প্রায় ২৬০ বিলিয়ন ব্যারেল তেল। যা এক্সন মোবাইল কর্প, শেভরন কর্প, রয়েল ডাচ্ শেল ও বিপি পিএলসি’র মতো জায়ান্ট কো¤পানিগুলোর সম্মিলিত রিজার্ভের থেকেও বেশি।
হুতি হামলার পূর্বে কো¤পানিটি গড়ে প্রতিদিন ১০.৩ মিলিয়ন ব্যারেল তেল উৎপাদন করতো। এর উৎপাদন খরচ অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর থেকে কম। এটি শুধু তেল নয়, প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনও করে থাকে। প্রতিদিন প্রতিষ্ঠানটি ১.১ মিলিয়ন ব্যারেল প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন করে।
তেল রপ্তানিতেও এটি বিশ্বে প্রথম স্থানে রয়েছে। এর উৎপাদিত তেলের তিন ভাগের একভাগ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোতে রপ্তানি করা হয়। এই রাষ্ট্রগুলোতে আরামকো’র তেলের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এশিয়ায় এর ক্রেতা রাষ্ট্রগুলো হচ্ছেÑ চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, জাপান ও তাইওয়ান। এ ছাড়া এটি উত্তর আমেরিকার দেশগুলোতে প্রতিদিন এক মিলিয়ন ব্যারেল করে তেল সরবরাহ করে থাকে।
কো¤পানিটি সৌদি আরবে তেল উৎপাদন করে ও এখান থেকেই সরাসরি অন্যান্য দেশে রপ্তানি করে থাকে। তবে এর তেল শোধনাগার রয়েছে সমগ্র বিশ্বজুড়েই। প্রতিষ্ঠানটি তার তেল শোধনাগার ও রিজার্ভের পরিমাণ বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। এ জন্য দেশটির টার্গেট ভারত ও চীন। ২০১৮ সালে আরামকো বিশ্বব্যাপী প্রতিদিন ৩.১ মিলিয়ন ব্যারেল তেল শোধন করতে পারতো।
এত বড় একটি কো¤পানি পরিচালনা করতেও ব্যাপক সংখ্যক কর্মীর প্রয়োজন হয়। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৭৬ হাজারেরও বেশি। এ ছাড়া এশিয়া, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠানটির আছে নানা শাখা প্রতিষ্ঠান, গবেষণা কার্যক্রম ও কার্যালয়ও। বেইজিং, নয়াদিল্লি, সিঙ্গাপুর, নিউ ইয়র্ক, লন্ডন, হাউস্টনসহ বিশ্বের বড় বড় শহরগুলোতে দপ্তর রয়েছে আরামকো’র।

অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর