গাজীপুরের শ্রীপুরে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে (কথিত) এক যুবক নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে শ্রীপুরের সাতখামাইর বাজারের পাশে এ ঘটনা ঘটে। নিহত যুবক শ্রীপুরের বরমী মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত আজিজুল হকের ছেলে মাসুদ পারভজ (৩৩)। র্যাব-১ এর সহকারী পরিচালক মো. কামরুজ্জামান জানান, ঘটনার সময় সাতখামাইর এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতি চলছে বলে র্যাব গোপন সংবাদে জানতে পারে। পরে র্যাবের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে গেলে ডাকাতরা উপস্থিতি টের পেয়ে র্যাবকে উদ্দেশ্য করে গুলি ছোড়ে। র্যাব সদস্যরাও পাল্টা গুলি ছোড়লে আক্রমণকারীরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলে একজনকে পড়ে থাকতে দেখে তাকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। এ সময় সোহরাব হোসেন নামে র্যাবের একজন কনস্টেবল আহত হন।
তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলের আশপাশ থেকে ১টি বিদেশি পিস্তল, ৬টি শর্টগান এবং ১টি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়। নিহত মাসুদ পারভেজের নামে বিভিন্ন থানায় ৮টি ডাকাতি, ২টি হত্যা এবং অস্ত্র আইনে ১টি মামলা রয়েছে। শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. মাহমুদ হাসান জানান, বুধবার ভোর ৪টার দিকে মাসুদ পারভেজকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তার দেহে গুলির আঘাত ও রক্তাক্ত জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে নিহত পারভেজের মা রানী বেগম বলেন, পারভেজের নামে ৫টি মামলা চলমান। সবগুলোতে সে জামিনে রয়েছে। কোনো হত্যা এবং অস্ত্র মামলা নেই। মামলা সংক্রান্ত কারণে সে তার শ্বশুরবাড়ি ময়মনসিংহে থাকত। পারভেজের বন্ধু ইয়াবা ব্যবসায়ী মিজান সোমবার বিকাল ৪টার দিকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া যাওয়ার কথা বলে প্রাইভেটকারযোগে তুলে নিয়ে যায়। কিন্তু সোমবার রাতে পারভেজ আমাকে (রানী বেগম) ফোন করে জানায়, মিজান তাকে এনে কাদের হাতে যেন তুলে দিয়েছে। আমার মেয়েকে তোমার কোল থেকে ছেড় না। আমাকে আর পাওয়া যাবে না। এ কথা বলার পরই তাকে কে যেন একটা গালি দিয়ে ফোন বন্ধ করে দেয়। এরপর ওই রাত তিনটার দিকে মিজান আমাকে ফোন করে জানায়, চাচি তোমার ছেলের প্রতি আমার প্রতিশোধ নেয়া হয়ে গেছে বলে ফোন বন্ধ করে দেয়।
অভিযোগের ব্যাপারে র্যাব-১ এর সহকারী পরিচালক মো. কামরুজ্জামান জানান, মাদকসেবী ও অপরাধীরা মুখে বলে এক এবং করে আরেক। তার পরিবারকে সে সঠিক তথ্য দেয়নি। তা ছাড়া এ ব্যাপারে তার পরিবারের অভিযোগগুলেওা সঠিক নয়। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী জানান, মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।