খুলনা মহানগরীর খালিশপুরের বাস্তুহারা কলোনির শিশু আফসানা মিমিকে (১৪) গণধর্ষণের পর হত্যা মামলায় দুইজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার বিকেলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মোহাম্মদ মহিদুজ্জামান বহুলালোচিত এ গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন- খালিশপুরের বাস্তুহারা এলাকার মৃত আব্দুল কাদের হাওলাদারের ছেলে মো. বাবুল হাওলাদার ওরফে কালা বাবুল (৩৮) ও সাদেক হোসেনের ছেলে এমদাদ হোসেন (৩৭)। এ মামলায় খালাস পাওয়া আসামীরা হলেন-খালিশপুরের বাসিন্দা মোজাফ্ফর আহমেদের ছেলে মো. আশা মিয়া (২২), মো. আব্দুল বাশার হাওলাদারের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলী (২৪), মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে মো. জাহিদুল ইসলাম ওরফে জাহিদ (৪০) ও আব্দুল মোতালেব হাওলাদারের ছেলে মো. নজরুল ইসলাম (৩৫)। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা সবাই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বাদী মিমির পিতা মো. ইমাম হোসেন এ রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে আসামীদের দ্রুত ফাঁসি কার্যকরের দাবি জানান।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০০৯ সালের ১৫ নবেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে খালিশপুর থানাধীন বাস্তুহারা কলোনীর রোড নম্বর-৯, বাড়ি নম্বর-৪৯৮ এর বাসিন্দা মো. ইমাম হোসেনের ১৪ বছরের শিশুকন্যা আফসানা মিমি দুই টাকা নিয়ে ঝালমুড়ি কিনতে যায়। কিন্তু অনেক সময় পরেও সে বাড়ি ফিরে না আসায় খোঁজাখুজি করে তাকে না পেয়ে ইমাম হোসেন রাতেই খালিশপুর থানায় জিডি করেন।
পরের দিন দুপুর ৩টার দিকে মাদরাসার খাদেম কুদ্দুস দিঘিতে আফসানা মিমির লাশ দেখতে পেয়ে ইমাম হোসেনকে খবর দেন। এ ঘটনায় ইমাম হোসেন খালিশপুর থানায় অজ্ঞাত পরিচয় আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন (যার নম্বর-১৭)।
আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করলেও ইমাম হোসেন এজাহারে উল্লেখ করেন এলাকার কালা বাবুল, কাদের ও এমদাদসহ কয়েকজন তার মেয়ে আফসানা মিমিকে উত্ত্যক্ত করতো। ২০১০ সালের ২৩ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খালিশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু মোকাদ্দেশ আলী আদালতে ছয়জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশীট দাখিল করেন। মামলায় ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জন সাক্ষ্য দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন স্পেশাল পিপি এডভোকেট ফরিদ আহমেদ ও বাদীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন মোমিনুল ইসলাম।
এডভোকেট মোমিনুল ইসলাম বলেন, আফসানা মিমিকে (১৪) গণধর্ষণের পর হত্যা মামলার রায়ে দুইজনকে ফাঁসি দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।