× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সহকারী প্রক্টরের পদত্যাগ /বশেমুরবিপ্রবি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা

শেষের পাতা

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, রবিবার

গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা। এ সময় অন্তত ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। গতকাল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানায়, ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন ঠেকাতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগ না করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ আশেপাশের বিভিন্ন স্থা?নে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করতে থাকেন। এ সময় বাই?রে থে?কে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পা?সে আস?তে গে?লে শিক্ষার্থী?দের ব?হিরাগতরা নবীনবাগ, হাসপাতাল এলাকা, এলজিই?ডি অফিস  মোড়, সোনাকুড়, নিলারমাঠ, সুবান সড়ক, বিশ্ব?বিদ্যালয়ের মেইন গে?টে বাধা দেয়। শিক্ষার্থীরা বাধা উ?পেক্ষা ক?রে আস?তে চাই?লে তা?দের ওপর হামলা চালা?নো হয়। এসময় কমপক্ষে ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়।
আহত?দের  গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালসহ বি?ভিন্ন স্থা?নে চি?কিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে  ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. মো. বশির উদ্দিন জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তানের মতো। তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। আমরা তাদের বুঝিয়ে আন্দোলন থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।

গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. অসিত মল্লিক  জানিয়েছেন, আহতদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ডাক্তার ও এম্বুলেস মোতায়েন রাখা হয়েছে। কোথাও কেউ আহত হওয়ার খবর  পেলেই এম্বুলেন্স পাঠানো হচ্ছে। দুইজন শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা  দেয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত  পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ক্যাম্পাসের বাইরে মোতায়েন রাখা হয়েছে।
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে পদত্যাগের দাবিতে বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা। পরে বিকাল থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করে তারা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, শুক্রবার রাত থেকে আমাদের হলে খাবার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে হলে বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। আমাদের ওপর বহিরাগতরা হামলা চালিয়েছে। হল ত্যাগের বিষয়ে তারা বলেন, এখনো আমরা হল ত্যাগের আদেশের চিঠি পাইনি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ও হল ত্যাগের নির্দেশের বিষয়টি শুনেছি। তাদের একমাত্র দাবি ভিসির পদত্যাগ। ভিসি পদত্যাগ করলেই আন্দোলন থেকে সরে যাবো আমরা। না হলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন সহকারী প্রক্টর হুমায়ুন কবির। হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে গেলে সহকারী প্রক্টর হুমায়ুন কবিরকে ঘিরে ধরেন শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে প্রক্টর হুমায়ুন কবিরের পা ধরে কান্না করে বাঁচার আকুতি জানান শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দেন সহকারী প্রক্টর হুমায়ুন কবির। পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করে সহকারী প্রক্টর হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমার সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে। কিন্তু আমি কিছুই করতে পারিনি। আমি আমার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছি, তাই নৈতিক জায়গা থেকে পদত্যাগ করেছি।’ তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় সরাসরি পদত্যাগপত্র জমা দিতে না পারলেও মৌখিকভাবে বিষয়টি রেজিস্ট্রারসহ প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।

হুমায়ুন কবিরের পদত্যাগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. নুরউদ্দিন আহমেদ বলেন, পদত্যাগপত্র এখনো জমা দেননি সহকারী প্রক্টর। তাহলে তিনি কীভাবে পদত্যাগ করলেন। হুমায়ুন কবির পদত্যাগ করতে চাইলে করতে পারেন। এটি তার ব্যক্তিগত বিষয়। আন্দোলন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটির বিষয়ে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ২২শে সেপ্টেম্বর থেকে ৩রা অক্টোবর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের শনিবার সকাল ১০টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এজন্য হলের কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসককে ১৪৪ ধারা জারি ও পুলিশ সুপারকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ ক্যাম্পাসে মোতায়নের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাননি তিনি।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গত ছয় মাসে ৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বহিষ্কৃত ওই শিক্ষার্থীদের অপরাধ উপাচার্য ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের অনিয়মের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়া। সর্বশেষ গত ১১ই সেপ্টেম্বর ফেসবুকে শিক্ষকদের নিয়ে স্ট্যাটাস দেয়ায় আইন বিভাগের ছাত্রী ও সাংবাদিক ফাতেমা-তুজ- জিনিয়াকে বহিষ্কার করা হয়। জিনিয়াকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা আন্দোলন শুরু করেন। সাংবাদিকদের আন্দোলনের মুখে গত বুধবার জিনিয়ার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ওইদিন রাত  থেকেই ভিসি খন্দকার নাসির উদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর