× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মিয়ানমারের ওপর সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা চায় ইইউ

দেশ বিদেশ

কূটনৈতিক রিপোর্টার
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, রবিবার

রাখাইনে গণহত্যার বিচার নিশ্চিতে মিয়ানমারের ওপর সর্বাত্মক অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। অবিলম্বে মিয়ানমারে অস্ত্র, যুদ্ধ-উপকরণ এবং অন্যান্য সামরিক ও নিরাপত্তা সরঞ্জামের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সরবরাহ, বিক্রয় বা স্থানান্তর স্থগিত করার পাশাপাশি দেশটিতে সব ধরনের নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ বা অন্যান্য সামরিক সহায়তা বন্ধে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ২৮ রাষ্ট্রের জোট ইইউ’র সংসদ সদস্যরা। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবারের ভোটাভুটিতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব পাস হয়। প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দেন ৫৪৬ জন। অবশ্য ১২ জন সংসদ সদস্য এর বিরোধিতা করেন। ৯৪ জন সাংসদ ভোটাভুটিতে উপস্থিত থাকলেও তারা প্রস্তাবটির পক্ষে বা বিপক্ষে ভোট প্রদানে ইচ্ছাকৃতভাবে বিরত (অ্যাবস্টেইন) ছিলেন। ইইউ পার্লামেন্টে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় গৃহীত প্রস্তাবে এটা স্পষ্ট করেই বলা হয়- পার্লামেন্ট মনে করে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় গুরুতর অপরাধের জন্য দায়ী বলে চিহ্নিত মিয়ানমারের এমন ব্যক্তিদের (জেনারেলদের) বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও সম্পদ ব্যবহার বন্ধসহ সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকেই। পার্লামেন্ট এ বিষয়ে  সম্পূর্ণভাবে একমত হয়েছে যে, অবশ্যই মিয়ানমারকে তাদের স্বীকৃত ১৩৫টি গোষ্ঠীর সঙ্গে রোহিঙ্গাদেরও নাগরিক হিসাবে স্বীকৃতি দিতে হবে।
পুঞ্জীভূত রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে এটি অপরিহার্য, যদি মিয়ানমার এ সংকটের সমাধানে সত্যিকারভাবে আন্তরিক হয়। প্রস্তাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও এর জনগণের প্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি বিষয়ক ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে- প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে রাখাইনে বসবাস  করছে মিয়ানমারের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রোহিঙ্গারা। কিন্তু আজ তাদের নাগরিকত্বই কেড়ে নেয়া হয়েছে। রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে গিয়ে রাখাইনে বসতি করেছে এমন দাবি করে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ‘বেঙ্গলী’ আখ্যা দিয়ে কয়েক দশক ধরে তাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করে আসছে। যা দিনে দিনে কেবলই বেড়েছে। ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জাতিগতভাবে নিধন চেষ্টায় বর্মী সেনাবাহিনী সাড়াশি অভিযান চালায়। এতে হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়। নারী ও কিশোরীদের ওপর চলে বর্বর গণধর্ষণ। বর্মী বর্বরতা, গণহত্যা, গণধর্ষণ থেকে প্রাণে বাঁচতে বাংলাদেশ সীমান্তে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের ঢল নামে। যার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক নারী, শিশু ও বৃদ্ধ-অসুস্থ লোকজন ছিল। নাফ নদে বইছিল রক্তের বন্যা। সারি সারি লাশ ভেসে আসছিল। মানবতার আর্তনাদে বাংলাদশ সে দিন সীমান্ত খুলে দিতে বাধ্য হয়েছিল। এক মাসের ব্যবধানে সেই সময়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে নিরাপদ আশ্রয় পেয়েছিল প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা। এখানে আগে থেকে ছিল প্রায় আরও ৪ লাখ রোহিঙ্গা। নানা রকম সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ বাংলাদেশ বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে অস্থায়ী আশ্রয় এবং মনবিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। চেষ্টা চলছে তাদের স্বেচ্ছায় ও নিরাপত্তার সঙ্গে তাদের আদি নিবাস রাখাইনে প্রত্যাবাসনে। কিন্তু মিয়ানমার তাদের অঙ্গীকার অনুযায়ী রাখাইনে প্রত্যাবাসনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারেনি বা করেনি। বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে চীনের মধ্যস্থতায় মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ও বৈঠকাদির পাশপাশি আন্তর্জাতিকভাবে ইস্যুটির বিষয়ে ‘ফোকাস’ ধরে রাখার চেষ্টায় রয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর