জাতীয় লীগের তৃতীয় দিন শেষে লিড নিয়েছে ঢাকা মেট্রো। প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেট হারালেও মার্শাল আইয়ুবের দল এগিয়ে ৫৯ রানে। ক্রিজে অপরাজিত থাকেন উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান জাবিদ ৮১ রান করে। তাকে সঙ্গ দেন শহিদুল ৮২ রানে করে। দুজনই আছেন সেঞ্চুরির পথে। অথচ গতকাল একটা সময় শঙ্কায়ই পড়েছিল মেট্রো। চট্টগ্রাম বিভাগের ২৯০ রানের জবাবে মেট্রোর সংগ্রহ তৃতীয় দিন শেষে ৩৪৯ রান। বলার অপেক্ষা রাখে না আজ চতুর্থ দিন বড় কোন অঘটন না হলে ম্যাচটি ড্র’র দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে আজ ফতুল্লা খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে হারের শঙ্কায় আগের আসরের চ্যাম্পিয়ন মুশফিকুর রহীমের দল রাজশাহী বিভাগ। ঢাকা বিভাগের প্রথম ইনিংসে করা ২৪০ রানের জবাবে তারা গুটিয়ে গেছে ১৯৭ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ঢাকা বিভাগও পড়েছে ব্যাটিং বিপর্যয়ে। তৃতীয় দিন শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে তাদের সংগ্রহ ২০৬ রান। তবে এরই মধ্যে তাদের লিড ছুঁয়েছে ২৪৯ রান। আজ চতুর্থ দিন তারা শেষ চার উইকেটে আরো বড় সংগ্রহের পথেই হাঁটবে। তাই জবাবে ব্যাট করতে নেমে চতুর্থ দিন রাজশাহীর সামনে ৩’শর বেশি রান তাড়া করার লক্ষ্য থাকতে পারে।
ফতুল্লায় তৃতীয় দিন সকালে ক্যারিয়ারে প্রথম পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে দলকে লিড এনে দিলেন ঢাকা বিভাগের ১৯ বছর বয়সী বোলার সুমন খান। ৬ উইকেটে ১৭৩ রান নিয়ে দিন শুরু করে রাজশাহী থামে ১৯৭ রানে। ঢাকার দুই পেসার সালাউদ্দিন শাকিল ও সুমনের তোপে মাত্র ২৪ রান যোগ করেই বাকি চার উইকেট হারায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। জবাব দিতে নেমে সাবধানী শুরু করেন ঢাকার দুই ওপেনার। তবে ৫৯ বলে ৮ রান করা আব্দুল মজিদকে ম্যাচে দ্বিতীয়বারের মতো আউট করেন তাইজুল। ২০ রান করে ফেরেন প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা রনি তালুকদার। থিতু হয়ে রান আউটে কাটা পড়েন জয়রাজ শেখ। চতুর্থ উইকেটে ৯৫ রানের জুটিতে দলকে পথ দেখান রাকিবুল ও তাইবুর। ৬৫ রান করা রাকিবুলকে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন রেজা। পরে ঢাকা বিভাগের অধিনায়ক শুভাগত হোম চৌধুরীকেও ফেরান ডানহাতি এই পেসার। ৮২ রানে ৩ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল।
ঢাকা মেট্রোকে পথ দেখাচ্ছেন শহিদুল-জাবিদ
গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ২ উইকেটে ৬৬ রান নিয়ে দিন শুরু করে ঢাকা মেট্রো। এদিন ব্যাটিংয়ে নামতে পারেননি অধিনায়ক মার্শাল আইয়ুব। আগের দিন হাঁটুতে বল লাগায় ব্যাটিংয়ে নামতে পারেননি তিনি। তাই জাতীয় দলের তারকা মাহমুদুল্লাহ দলকে এগিয়ে নেন আগের দিনের আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যান শামসুর রহমান শুভকে সঙ্গে নিয়ে। দু’জনই ফিফটি তুলে নেন। কিন্তু দলকে লিড নেয়ার পথ দেখাতে পারেননি। তবে ব্যাট হাতে নৈপুণ্য দেখান জাবিদ ও শহীদুল। অষ্টম উইকেটে ১৪৮ রানের জুটিতে দলকে এনে দেন ৫৯ রানের লিড। এর আগে মাসুম খানের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেন শামসুর রহমান। ৪টি চারের মারে করেন ৫৫ রান। এরপর তরুণ মিনহাজুল আবেদীন আফ্রিদি দারুণ এক ডেলিভারিতে আল আমিন জুনিয়রকে বোল্ড করে দেন। শুধু তাই নয় তার বলে কট বিহাইন্ড হন সৈকত আলী। এই স্পিনারের বলে উড়িয়ে মারার চেষ্টায় মাসুমের হাতে ধরা পড়েন আরাফাত সানি। মাহমুদুল্লাহ অবশ্য তখন দলের হাল ধরেছিলেন। তিন উইকেট তুলে নেয়া আফ্রিদিকে বেরিয়ে দারুণ এক ছক্কাও হাঁকান। কিন্তু রানের গতি বাড়াতে গিয়ে অফ স্পিনার রনি চৌধুরীকে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে ফিরে যান শর্ট মিডউইকেটে সহজ ক্যাচ দিয়ে। ৫ চার ও ১ ছক্কায় মাহমুদউল্লাহ করেন ৬৩ রান।
২০১ রানে ৭ উইকেট তুলে নিয়ে লিডের আশা করেছিল চট্টগ্রাম। কিন্তু তাদের সেই স্বপ্ন ভেঙে দেন শহিদুল ও জাবিদ। জাতীয় লীগে আগের সেরা ৫৮ ছাড়িয়ে ৮২ রানে খেলছেন শহিদুল। তার ১৩৭ বলের ইনিংস গড়া ৯ চার ও এক ছক্কায়। অন্যদিকে শুরুতে একটু নড়বড়ে ছিলেন জাবিদ। সময় গড়ানোর সঙ্গে নিজেকে ফিরে পাওয়া এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান খেলেন আস্থার সঙ্গে। ২১০ বলের ইনিংসে হাঁকান চারটি ৪ চার। স্পিনার আফ্রিদি ১০৩ রানে নেন ৩ উইকেট। একটি করে উইকেট নেন মাসুম, রনি ও নোমান চৌধুরী।