পশ্চিমবঙ্গের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগে সরব হয়েছে বিজেপির রাজ্য নেতারা। সেইসঙ্গে বিজেপির মেন্টর বলে পরিচিত আরএসএস ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন চালু করার দাবি তুলেছে। রাজ্যের বিজেপি নেতারা আইনশৃঙ্খলা নিয়ে অভিযোগ জানাতে রাষ্ট্রপতি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দ্বারস্থ হচ্ছেন বলে জানা গেছে। শুধু পরিস্থিতি অবগত করানোই নয়, কেন্দ্রের হস্তক্ষেপও দাবি করা হবে বলে বিজেপি সূত্রে খবর। বিজেপির উদ্যোগে শনিবার ধর্মতলায় ধরনা শুরু হয়েছে। গত মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে খুন হয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল (৪০), তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বিউটি পাল (৩০) ও পুত্র অঙ্গন (৫)। বন্ধুপ্রকাশ আরএসএস-এর সদস্য ছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে। শুধু জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ড নয়, নদীয়ায় সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক বিজেপি কর্মী (পেশায় পুরোহিত) খুন হয়েছেন বলে দাবি বিজেপির। বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, রাজ্যজুড়ে গত চারদিনে আটজন বিজেপি কর্মী খুন হয়েছেন।
দলের নেতাদের মতে, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলাই কার্যত ভেঙে পড়েছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজভবন থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, রাজ্যপালের মতে, এই ঘটনার তীব্রতা এমনই যে, তাতে বিবেক কেঁপে উঠেছে। এই ঘটনা অসহিষ্ণুতা এবং ভয়ঙ্কর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রতিফলন। এই বিবৃতির কিছুক্ষণ পরেই পাল্টা আক্রমণ করে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, সাংবিধানিক পদে থেকে রাজনৈতিক মন্তব্য করে নিজের এখতিয়ার লঙ্ঘন করেছেন রাজ্যপাল। তিনি অভিযোগ করেছেন, একটি পারিবারিক বিবাদকে নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। এদিকে জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ড নিয়ে মুখ খুলেছেন অভিনেত্রী অপর্ণা সেন। তিনি টুইটারে লিখেছেন, আরএসএস সদস্যের পরিবারের এই ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ড ‘আমাদের লজ্জা’। টুইটারে সরাসরি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে সম্বোধন করে অপর্ণা লিখেছেন, আরএসএস সদস্যের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী এবং শিশুকে হত্যা করা হলো আমাদের পশ্চিমবঙ্গে। এই বীভৎস কাজের কারণ যা-ই হোক, এ আমাদের লজ্জা। মুখ্যমন্ত্রী মহোদয়া! দয়া করে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করুন! রাজনৈতিক মতনির্বিশেষে পশ্চিমবঙ্গের সব নাগরিকের দায়িত্ব আপনার। আপনি সবার মুখ্যমন্ত্রী।