× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বৈধ হতে রাজনৈতিক আশ্রয়!

দেশ বিদেশ

আবদুল মোমিত (রোমেল), ফ্রান্স থেকে
১৪ অক্টোবর ২০১৯, সোমবার

স্বপ্ন কিংবা জীবিকার তাগিদে মানুষ পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশে। অনেকের জন্য আবার বিদেশ যাত্রাটি শুধুমাত্র জীবন বাঁচানোর উপায়। তাই নির্যাতন আর নিপীড়ন থেকে বাঁচার মানবিক যুক্তি দিয়ে ভিন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় বা অ্যাসাইলাম নেন সংঘাতকবলিত দেশের মানুষগুলো। তবে দৃশ্যমান যুদ্ধ সংঘাত না থাকলেও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য পাড়ি দেয়া বাংলাদেশিদের সংখ্যা বাড়ছে প্রতি বছরই। আর তাই বাংলাদেশিরা ইউরোপে আসার পর অবৈধ থেকে বৈধ হতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। শরণার্থী, হিউম্যানিটারিয়ান ও সাবসিডিয়ারি- এই তিন ক্যাটাগরিতে আশ্রয় দেয়া হয় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে- যারা শরণার্থী স্ট্যাটাসের যোগ্য নন, কিন্তু দেশে ফিরে গেলে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ার ঝুঁকিতে আছেন, তাদের সাবসিডিয়ারি সুরক্ষা দেয়া হয় আর অসুস্থতা ও অভিভাবকহীন শিশুদের মানবিক (হিউম্যানিটারিয়ান) বিবেচনায় আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়, ইউরোপীয় কমিশনের পরিসংখ্যান বিষয়ক সংস্থা ‘ইউরোস্ট্যাট’-এর গত ১০ বছরের হিসাব বলছে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিদের আশ্রয়ের আবেদন সফল হওয়ার হার বাড়তির দিকে। ২০১৫ সালে সফলতার হার ছিল ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ, আবেদন পড়েছিল ১১,২৫০টি। ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হয়েছে ১,৭৮৫টিতে।
কয়েকটি দেশের পরিসংখ্যান এরকম- জার্মানি (আবেদন ২৬৫; সফল ৩৫), যুক্তরাজ্য (আবেদন ১,০১৫; সফল ১২০), ইতালি (আবেদন ৫,০১০; সফল ১,২২৫) এবং ফ্রান্স (আবেদন ৩,৫৬০; সফল ৩১৫)। ২০১৬ সালে বাংলাদেশিরা ১৪,০৮৫টি আবেদন করেছেন। ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে ২,৩৬৫টিতে। অর্থাৎ সফলতার হার ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ। কয়েকটি দেশের পরিসংখ্যান এরকম- জার্মানি (আবেদন ৬৬৫; সফল ১১০), যুক্তরাজ্য (আবেদন ১,৪০৫; সফল ৮০), ইতালি (আবেদন ৬,২২৫; সফল ১,৬১০) এবং ফ্রান্স (আবেদন ৪,১১০; সফল ৪৪০)। ২০১৭ সালে বাংলাদেশি নাগরিকদের পক্ষ থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ১৬,০৯৫টি আশ্রয়ের আবেদন পড়েছে। আর একই সময়ে বাংলাদেশিদের করা ২,৮৩৫টি আবেদন সফল হয়েছে। শতকরা হিসাবে সেটি ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ। জার্মানিতে আবেদন পড়েছে ২,৭২৫টি। সফল হয়েছে ৩১৫টি। এমনিভাবে অন্য কয়েকটি দেশের পরিসংখ্যান এরকম- যুক্তরাজ্য (আবেদন ১,৬৩০; সফল ৬৫), ইতালি (আবেদন ৫,৭৭৫; সফল ১,৮৮৫) এবং ফ্রান্স (আবেদন ৪,১১৫; সফল ৪৪০)। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) তথ্য অনুযায়ী, ভূমধ্যসাগর দিয়ে যত মানুষ প্রবেশ করেছেন, সেই তালিকার শীর্ষ দশ দেশের নাগরিকদের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এখন অষ্টম। বিরোধী রাজনীতিতে জড়িত থাকার কারণে গ্রেপ্তার, নির্যাতন, মামলাসহ নানা কারণে হাজার হাজার বাংলাদেশি রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন। ইউরোপীয় কমিশনের পরিসংখ্যান দপ্তর ইউরোস্ট্যাট-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৮ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এক লাখেরও বেশি বাংলাদেশি ইউরোপের দেশগুলোতে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছেন। এই বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে না নিলে ভিসা বন্ধের হুমকিও দিয়েছিল ইউরোপ। ইউরোস্ট্যাটের হিসাব অনুযায়ী ২০১৮ সালে সব থেকে বেশি অবৈধ অভিবাসী আশ্রয় নিয়েছেন জার্মানিতে। ওই সময়ে দেশটিতে প্রবেশ করেন ১ লাখ ৩৪ হাজার অবৈধ অভিবাসী। ১ লাখ ৬ হাজার অভিবাসীকে আশ্রয় দিয়ে তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ফ্রান্স। ওদিকে ইউএনএইচসিআর-এর তথ্য অনুযায়ী গত পাঁচ বছরে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন ১ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি। আগের পাঁচ বছরের তুলনায় এ সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম সমপ্রতি তরুণদের মধ্যে যে জরিপ করেছে, তাতে দেখা গেছে আরো ভালো জীবনযাপন এবং পেশার উন্নতির জন্য বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার ৮২ শতাংশ তরুণই নিজের দেশ ছেড়ে চলে যেতে চান। এসব তরুণ মনে করেন না যে, নিজের দেশে তাদের ভবিষ্যৎ আছে। তাছাড়া এমনিতেই বাংলাদেশিদের মধ্যে বিদেশ যাওয়ার স্বপ্ন ভয়াবহ।
 
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর