একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষে ভোট দেয়ায় ৩০শে ডিসেম্বর রাতে ৪ সন্তানের জননী গৃহবধূকে গণধর্ষণের চাঞ্চল্যকর মামলায় গতকাল সাক্ষীগণের দ্বিতীয় দিন রাষ্ট্রপক্ষ ২ সাক্ষীকেই বৈরি ঘোষণা করেন। এ মামলাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় হোমওয়ার্ক করে প্রস্তুতি নিয়ে মামলা পরিচালনার জন্য আইনজীবীদের প্রতি বিচারক আহ্বান জানান। নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ এর সরকারি কৌঁসুলি মামুনুর রসিদ লাবলু জানায়, দ্বিতীয় দিনের মতো এ চাঞ্চল্যকর মামলার সাক্ষীর দিন সাক্ষী করিম ও জুলেখা আক্তার সাক্ষী দেন। স্বামী করিম আদালতকে জানায়, ঘটনার দিন সে বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিল। ধর্ষিতার স্বামীর শোর চিৎকারে জেগে উঠে প্রতিবেশীদের সাথে সে ঘটনাস্থলে যায়। গিয়ে ধর্ষিতাকে বিবস্ত্র ও অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পায়। তবে কে ধর্ষণ করেছে সে দেখেনি। ভিকটিমকে ভীষণ মারধর করে আহত করেছে বলে সে জানায়।
ডকে থাকা আসামিদের শনাক্ত করতে সে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে এবং আসামিদের পক্ষ নিয়েছেন অভিযোগ এনে রাষ্ট্রপক্ষ তাকে বৈরী ঘোষণা করেন। এরপর দ্বিতীয় স্বাক্ষী জুলেখা আক্তার সাক্ষ্য দিতে উঠলে দু’পক্ষের আইনজীবীদের তুমুল হট্টগোলের মধ্যে সে কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়লে বিচারকের নির্দেশে তাকে কাঠগড়ায় চেয়ার দেয়া হয়। জুলেখা আদালতকে জানায়, সে আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা রুহুল আমিন, বাসু চৌধুরী, সোহেলসহ সবাইকে চেনে। ভোটের দিন শোর চিৎকার শোনে রাত ১টা দেড়টার সময় ভিকটিমের বাড়ি যায়। পাকঘরের পেছনে বাগানে ভিকটিমকে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকতে দেখে। সেখানে তার স্বামী সিরাজ জানায়, সোহেল, বাসু, স্বপন, বেচু তার স্ত্রীকে বে-ঈজ্জুতি করেছে ও মারধর করে আহত করেছে। জুলেখা আবার বলে, সকালে ভিকটিম বলেছে আবুল, সোহেল, জসিম, চৌধুরী, বাসু, সালাউদ্দিন, কালা সোহেল সহ আরো কয়েকজন তার ঘরের দরজা ভেঙে তাকে ধর্ষণ করেছে। সে পুলিশের জব্দ করা আলামতের জব্দ নামায় সাক্ষী হয়ে স্বাক্ষর করেছে। জেরার জবাবে সে আলামত শনাক্ত না করায় রাষ্ট্রপক্ষ তাকেও বৈরী ঘোষণা করেন। এ সময় আদালত উভয় পক্ষের আইনজীবীদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, এটি একটি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চাঞ্চল্যকর মামলা। তাই সকল পক্ষকে প্রস্তুতি নিয়ে আসতে হবে। মামলার সাক্ষীর আসামি তারিখ ১৭ই অক্টোবর। ঐদিন মামলার ভিকটিমের সাক্ষীর দিন ধার্য রয়েছে।