বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক অমিত সাহাকে সংগঠন থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। অমিতের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ‘অধিকতর তদন্তে’ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে বহিষ্কারের কথা জানিয়েছে ছাত্রলীগ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুয়েটের সামপ্রতিক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রলীগ দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি করে। ওই কমিটির অধিকতর তদন্তে উঠে এসেছে, অমিত সাহা ওই ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথোপকথনের মাধ্যমে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অধিকতর তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হলো।
অমিত সাহা বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর সবুজবাগ এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগ।
এদিকে, আবরারের হত্যাকাণ্ডের পর অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকা বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা গতকাল শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে কয়েকটি কেন্দ্র পরিদর্শন করেন বুয়েট ভিসি অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। এ সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণে আমরা কাজ করছি। আবরার হত্যার প্রতিবাদে চলমান আন্দোলন ভর্তি পরীক্ষায় প্রভাব ফেলেনি। বুয়েটের সংকট নিরসনে কয়েকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবি আমরা মেনে নিয়েছি। আশা করি, দ্রুতই সংকট নিরসন হবে। তিনি বলেন, বুয়েটের হলে হলে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
নিয়মিত শিক্ষার্থীদের বাইরে কেউ হলে থাকতে পারবেন না। বুয়েটে ছাত্র-শিক্ষকদের সাংগঠনিক রাজনীতিও থাকবে না। এদিন আন্দোলনকারীরা আবরার হত্যার ঘটনায় দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালিত করে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এদিন অনেকে আবরারের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গণস্বাক্ষর করেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সাইদুল আরাফাত বলেন, তাঁরা শিক্ষার পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আন্দোলন করছেন। সব দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলবে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিয়েছে, তাহলে আন্দোলন কেন, জানতে চাইলে সাইদুল আরাফাত বলেন, মেনে নেওয়ার ঘোষণা আর বাস্তবায়ন এক নয়। শিক্ষার্থীরা কেবল আশ্বাস নয়, বাস্তবায়নও দেখতে চান।