× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কীন ব্রিজ নিয়ে নাটকীয়তা

শেষের পাতা

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
১৬ অক্টোবর ২০১৯, বুধবার

সিলেটের কীন ব্রিজ নিয়ে নানা নাটকীয়তা চলছে। বন্ধের পর থেকে ব্রিজ খুলে দেয়ার দাবিতে সোচ্চার এলাকাবাসী। দিয়েছেন আন্দোলনের ডাক। অবস্থা কিছুটা আঁচ করতে পারেন সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। ছুটে গিয়েছিলেন এলাকায়। খুলে দেয়ার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। শিগগিরই ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলেও জানান। কিন্তু তার আশ্বাসে কোনো কাজ হয়নি।
খুলে দেয়া হয়নি কীন ব্রিজ। উল্টো কীন ব্রিজ এখন দখল করে নিচ্ছে হকাররা। ফল বিক্রেতা, ভাসমান কাপড় ব্যবসায়ী এখন কীন দখলে নিয়ে নিচ্ছে। এ কারণে আরো ক্ষোভ বেড়েছে এলাকায়। এখন ক্ষোভ আর নদীর ওপারে তিন ওয়ার্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে গোটা উপজেলায়। সব এলাকার জনপ্রতিনিধি সহ পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা এসে যুক্ত হচ্ছেন। এই অবস্থায় সোমবার রাতে দক্ষিণ সুরমায় হয়েছে বিশাল সভা। এতে কয়েক হাজার মানুষের উপস্থিতি ছিল। আর আমন্ত্রিত হয়েছিলেন সিলেটের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য বদর উদ্দিন আহমদ কামরানও। দক্ষিণ সুরমার লোকজন জানিয়েছেন- হঠাৎ করে গত ১লা সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী কীন ব্রিজের দুই পাশে লোহার খোটা মেরে দেন। এরপর থেকে কীন ব্রিজ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে করে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদীপথে পারি দিতে হচ্ছে। নতুবা দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে তারা কাজিরবাজার কিংবা উপশহরের ব্রিজ দিয়ে আসতে হচ্ছে। এতে বিশেষ করে অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। পরবর্তীতে এই আন্দোলনে এসে যুক্ত হয়েছেন সব শ্রেণি পেশার মানুষ। সিলেট সিটি করপোরেশনের দক্ষিণ অংশের তিনটি ওয়ার্ডের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট রোকশানা বেগম শাহনাজ জানিয়েছেন- দেড়মাস ধরে কীন ব্রিজ বন্ধ। এখনো সেটির সংস্কার কাজ শুরু হচ্ছে না। কবে নাগাদ সংস্কার কাজ শুরু হবে সেটি কেউ জানে না। আর কবেই বা খুলে দেয়া হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এদিকে- শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ায় অভিভাবকরা বিপাকে পড়েছেন। এ কারণে মানুষের ক্ষোভ বেড়েছে। তিনি বলেন- কীন ব্রিজ বন্ধ করার আগে এলাকার  মানুষের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বললে মানুষ ক্ষুব্ধ হতো না। না বলেই হঠাৎ বন্ধ করে দেয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে সোমবার রাতে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২৫, ২৬ ও ২৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও মুরব্বিদের সঙ্গে সর্বস্তরের জনসাধারণের মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন- মোল্লারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ শেখ মো. মকন মিয়া। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য কালে সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, কীন ব্রিজে বাতি লাগানোর দায়িত্ব সিসিকের, সংস্কারের নয়। সিলেটে ইদানিং চলছে তুঘলকী কাণ্ড, যার যেমনি ইচ্ছা তেমনি কাজ করছে। দক্ষিণ সুরমাবাসীর সঙ্গে আলোচনা না করে সিটি মেয়র কীন ব্রিজ বন্ধ করে বোকামী করেছেন। ব্রিজ সংস্কার করার দায়িত্ব সড়ক ও জনপথ বিভাগের, সিসিকের নয়। কীন ব্রিজ বন্ধ করার আগে সিসিকে কোনো সভা হয়নি। কোনো কাউন্সিলর জানেন না ব্রিজ বন্ধ করার ব্যাপারে। মেয়রের একক সিদ্ধান্তে ব্রিজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ ব্রিজ বন্ধ করলে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করতো। কিন্তু তা হয়নি। এমনকি ব্রিজ বন্ধের ব্যাপারে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটিতেও কোনো আলোচনা হয়নি। সাবেক মেয়র কামরান আরো বলেন, দক্ষিণ সুরমার ঐতিহ্য আছে, একতা আছে। সেটা ধরে রাখতে হবে। তাই আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয় এমন কাজ কেউ করবেন না। আমরা দক্ষিণ সুরমা ঐতিহ্য বিনষ্ট হতে দেব না। ভার্থখলা স্বর্ণালী সংঘের সভাপতি শিপল চৌধুরী ও সিলেট উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি মো. আলী আহমদের যৌথ পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন, সিলেট সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র তৌফিক বকস লিপন, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি, সাবেক কাউন্সিলর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ সাইফুল আলম, বরইকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ হাবিব হোসেন, জালালপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা সুলাইনাম হোসেন, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ মইনুল ইসলাম, সিসিকের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র ও ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজম খান, ২৫, ২৬ ও ২৭নং ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট রোকসানা বেগম শাহনাজ, তেতলী ইউপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফারুক মিয়া, ভার্থখলা পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি হাজী মিছবাহ উদ্দীন আহমদ, রাজনীতিবিদ অ্যাডভোকেট এটিএম ফয়েজ, জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মহসিন কামরান, লাউয়াই স্পোর্টি ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুস ছত্তার, ২৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেমিম আহমদ, ২৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম শিরুল, ২৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিন ইরান, সাধারণ সম্পাদক মো. ছয়েফ খান, কুচাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আখতার হোসেন, ভার্থখলা পঞ্চায়েত কমিটির সহসভাপতি মখলিছুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আলী সাধু, ঝালোপাড়া পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম জুনেদ, সমাজসেবী হাজী আব্বাস উদ্দীন জালালী, বন্ধন সামাজিক সংগঠনের সভাপতি আব্দুল মালেক তালুকদার, টার্মিনাল রোড ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ছালিক খান, স্টেশন রোড ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকির হোসেন চৌধুরী, ভার্থখলা স্বর্ণালী সংঘের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম সাহেদ প্রমুখ। সভায় বক্তারা বলেন- সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সভায় উপস্থিত হয়ে ব্রিজ খোলে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে মেয়র দক্ষিণ সুরমাবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। সভা থেকে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করার নিন্দা জানিয়ে বক্তারা বলেন, যদি তার দ্বারা ব্রিজ খুলে দেয়া সম্ভব না হয়, কেন জনসম্মুখে আশ্বাস দিয়েছিলেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি না দেয়ার আহ্বান জানান। বক্তারা বলেন, রাতের আঁধারে মেয়র আরিফ কীন ব্রিজ বন্ধ করেছেন। তিনি নিজে উপস্থিত হয়ে ব্রিজ খুলে দিতে হবে। সংস্কারের নামে সংস্কারের নামে ব্রিজ বন্ধ করার হলেও সংস্কারের কোন লক্ষণ নেই। আগামী ২২শে অক্টোবরের মধ্যে ব্রিজ খুলে দেয়া না হলে বিক্ষুব্ধ দক্ষিণ সুরমাবাসী নগর ভবন ঘেরাও সহ কঠো কর্মসূচি দেবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর