রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্ত্রীর লাশ ফেলে রেখে পালিয়েছে রহিদুল ইসলাম (৩৪) নামে এক ব্যক্তি। গত বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রহিদুল ইঞ্জিনচালিত ভ্যানে করে তার স্ত্রী শিমু খাতুনকে (২৭) অচেতন অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। শিমু বিষপান করেছেন বলে তিনি চিকিৎসকদের জানান। তাই দ্রুত চিকিৎসা শুরু করার অনুরোধ করেন। পরে বিষপানের কোনো নমুনা না পেয়ে চিকিৎসকরা শিমুকে ইনজেকশন দেন। এর কিছুক্ষণ পর শিমু মারা যান। এ খবর পেয়ে শিমুর স্বজনরা হাসপাতালে ছুটে আসেন। বিষয়টি টের পেয়ে স্ত্রীর মরদেহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ফেলে রেখেই স্বামী রহিদুল সটকে পড়েন।
রাতে থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ হাসপাতালে আসে। রহিদুল বাগমারা উপজেলার বড়বিহানালী ইউনিয়নের কুলিবাড়ি গ্রামের মৃত আহসান আলীর ছেলে।
শিমুর পরিবারের সদস্যরা জানান, প্রায় ১২ বছর আগে বাগমারা উপজেলার কাঁঠালবাড়ি গ্রামের শিমুর সঙ্গে একই উপজেলার কুলিবাড়ি গ্রামের রহিদুল ইসলামের বিয়ে হয়। তাদের দু’টি কন্যাসন্তান রয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে তাদের মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। স্ত্রী পরকীয়া করছেন বলে স্বামী রহিদুল সন্দেহ করতেন। এছাড়া অন্য কোনো বিরোধ ছিল না।
শিমুর ছোট ভাই রেজাউল করিম অভিযোগ করেন, তার বোনকে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে। তার বোনের পরকিয়া সম্পর্ক আছে এমন অভিযোগে ভগ্নিপতি রহিদুল প্রায়ই নির্যাতন করতেন। গত তিনদিন ধরে থেমে থেমে তার বোনের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। এর ফলেই বোনের মৃত্যু হয়েছে।
বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মৌসুমি সরকার বলেন, তিনি চিকিৎসা দেওয়ার পরই গৃহবধূ মারা গেছেন। তবে শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন বা বিষপানের আলামত পাওয়া যায়নি। ঘটনাটি রহস্যজনক মনে হচ্ছে। বাগমারা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আতাউর রহমান বলেন, পুলিশ মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।