× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

পিয়াজের দাম কমবে কবে?

শেষের পাতা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১৯ অক্টোবর ২০১৯, শনিবার

গত ১৭ই সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে এ আশা প্রকাশ করে বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের সদস্য আবু রায়হান আল বিরুনি বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশে পিয়াজের দাম কমে আসবে। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার এক মাস পূর্ণ হলেও দাম কমেনি পিয়াজের। বর্তমানে পাইকারি বাজারে পিয়াজের কেজি ৯০ থেকে ৯৫ টাকার ঘরে। আর খুচরা বাজারে ১০০ ও ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ওই দিন আবু রায়হান বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পিয়াজের দাম কমে আসবে। আমরা যথেষ্ট নিশ্চিত যে, আজকের বৈঠকের পর দাম কমে আসবে।

এ সময় প্রায় একই আশাবাদ ব্যক্ত করেন, বাণিজ্য সচিব মো. জাফর উদ্দীনও। তিনি বলেন, যে পরিমাণ পিয়াজ মজুত ও আমদানির পর্যায়ে রয়েছে, তাতে সহসাই দাম কমে আসবে।
বাণিজ্য সচিব বলেন, দেশে পিয়াজের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। ফলে দাম নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। শিগগিরই পিয়াজের দাম কমে স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে আসবে। কিন্তু বাজারে কোনো প্রভাব নেই।

এদিকে, পিয়াজের দাম কমাতে সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও কোনটাই যেন ফলপ্রসূ হচ্ছে না। বিভিন্ন দেশ থেকে পিয়াজ আমদানিতে এলসি খোলা হলেও তা থেকে কোন ফল আসছে না।
গত ২৯শে সেপ্টেম্বর ভারত পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিলে বেড়ে যায় পিয়াজের দাম। দুই দিনেই পিয়াজের দাম বেড়ে হয় ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। মাঝে মিয়ানমার ও মিশর থেকে পিয়াজ আমদানির ফলে কিছুটা দাম কমলেও আমদানি করা পিয়াজ ভালো পাননি ব্যবসায়ীরা। ফলে, অন্যান্য দেশে এলসি খোলা হলেও পিয়াজ আমদানিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না তারা।

পুরান ঢাকার শ্যামবাজারে মিয়ানমারের পিয়াজ প্রতি কেজি ৭৫ থেকে ৭৮ টাকায় বিক্রি হয়। আর দেশি কিং জাত ৭৮ থেকে ৮২ এবং দেশি ৮৫ থেকে ৮৮ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে।
শ্যামবাজারের পিয়াজ আমদানিকারক মোশাররফ সিকদার বলেন, পিয়াজ নিয়ে সরকার বেশ আন্তরিক। আমরা এলসি খুলে যাচ্ছি।

কাওরান বাজারের পাইকারি বাজারে দেশি পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকায়। ভারতীয় পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়।
পাবনার উৎপাদিত দেশি পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়; আমদানি করা পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা থেকে ৯০ টাকায়।

কাওরান বাজারের লাকসাম বাণিজ্যালয়ের মালিক মো. হাবিবুর রহমান মোস্তফা বলেন, পাইকারি বাজারে দেশি পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকায়। ভারতীয় পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। মজুদ কম থাকায় দাম বাড়ছে।
আশরাফ নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, পাইকারি বাজারে পিয়াজের দাম বাড়ছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়ছি আমরা। আরেক পাইকারি বিক্রেতা বলেন, বাজারে মিয়ানমারের পিয়াজ নেই। দাম কম থাকলেও এর স্বাদ তেমন ভালো না। তাই ক্রেতারা তা তেমন পছন্দ করেন না। আগের চেয়ে এখন পিয়াজের বিক্রিও কম।

কাওরানবাজারে পিয়াজ কিনতে আসা ফার্মগেটের বাসিন্দা সোহেল রানা বলেন, দাম বাড়ায় আগের চেয়ে এখন পিয়াজ কম কিনি। তারপরও তো আগের চেয়ে বেশি খরচ হচ্ছে। বাজার খরচ সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এদিকে, মহাখালীর বউবাজারে দেশি পিয়াজ ১১০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। ভারতীয় পিয়াজের কেজি ১০০ টাকা। এই বাজারের পিয়াজের বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, গত শুক্রবারের পর থেকে খুচরা বাজারে পিয়াজের দাম বেড়েছে। ভারতীয় পিয়াজের কেজিই এখন ১০০ টাকা। ৯০ টাকায় নামলেও দেশি পিয়াজ এখন ১১০ টাকা। অন্য বাজারেও একই দামে পিয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে।

এদিকে, বাজারে শীতের নতুন সবজি আসলেও দাম অনেকটাই আকাশছোঁয়া। এতে নাকাল রাজধানীবাসী। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতের সবজিতে বাহারি রঙে সেজেছে দোকানগুলো। শীতকালীন সবজির তালিকায় বাজারে উঠেছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, শিম, বরবটি, লাউ, ক্ষীরা, পালংশাক। গত এক দেড় মাস থেকে বাজারে টমেটো, শিম ও গাজর বাজারে অবস্থান করলেও দাম কমছে না সবজিগুলোর। এখনো বাজারে টমেটো ও শিম বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। আর গাজর বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি। শীতের সবজি ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৩০ থেকে ৪০ টাকা। আর মুলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি।

এদিকে, গত সপ্তাহের থেকে কিছুটা দাম বেড়ে বাজারে বরবটি, ঢেঁড়স, কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। পাশাপাশি পটল ও ঝিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে একই দামে। তবে বেগুন, করলা, উস্তা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। আর একটু কম দামের তালিকায় রয়েছে মিষ্টি কুমড়া ও পেঁপে। বাজারে প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি। আর পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা কেজি।

অপরদিকে হঠাৎ করেই বেড়েছে কাঁচামরিচ ও আলুর দাম। কাওরান বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি। যা গত সপ্তাহেও বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। আর বাজারে কেজিপ্রতি আলুর দাম বেড়েছে ৫ থেকে ৮ টাকা। যে আলু গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১৮ থেকে ২২ টাকা। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ২৮ টাকা।

এদিকে মাছের বাজার ঘুরে দেখা যা, বাজারে তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-৭০০ টাকা, মাগুর ১৮০-২০০ টাকা, সুরমা ৪৫০ টাকা, পাঙ্গাস ১৩০ টাকা, রুই ২৩০-৩০০ টাকা, কাতলা ২৫০-৩০০ টাকা, কোরাল ৪৫০-৮০০ টাকা, ছোট ইলিশ ৬৫০-৮০০ টাকা, বড় ইলিশ ১২০০-১৫০০ টাকা এবং প্রতি কেজি রূপচাঁদা বিক্রি হচ্ছে ৬০০-১২০০ টাকায়।

বেড়েছে মুরগির দামও। ব্রয়লার মুরগির ১৩০-১৪০ টাকা, কক মুরগি ২৪০-২৫০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়। এছাড়া প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৫৭০ টাকা। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি।
বাজারে আসা ফাতেমা বেগম বলেন, প্রতি সপ্তাহেই কিছু না কিছু পণ্যের দাম বাড়ছে। এর আগে পিয়াজ, ডিমের দাম বাড়ল। আর এখন বেড়েছে আলুর দাম। গত সপ্তাহে যে আলু ১৮ টাকা কেজি কিনেছি, এখন তা ২৫ টাকা চাচ্ছে। তিনি বলেন, প্রতিনিয়তই কোনো না কোনো পণ্যের দাম বাড়বে, এটা এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। এই দেখেন ১০০ টাকা কেজি পিয়াজ কিনে খাচ্ছি। একাধিক সবজির কেজি ১০০ টাকা, তা নিয়েও দেখেন কারও কোনো আপত্তি নেই। আসলে সবকিছুই আমাদের সয়ে গেছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর