সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে অপরিকল্পিতভাবে বৌলাই নদী খননের ফলে ড্রেজিংয়ের মাটি ভরাট করায় চিকসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি গত দুইদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে। ভবনের ভেতর পানি, বারান্দার উপর দু’তিন ফিট কাদা থাকায় খোলা যাচ্ছে না মাটিতে আটকে পরা বিদ্যালয়ের দরজা। রোববার চিকসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ে প্রাঙ্গণে ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবকসহ গ্রামের লোকজন দাঁড়িয়ে আছেন। তারা জানান, শনিবার রাতে ড্রেজার দিয়ে বৌলাই নদীর খননের মাটি ঠিকাদার ইচ্ছেমতো ভরাট করায় বিদ্যালয়ের এ দুরাবস্থা সৃষ্টি হয়। তারা রাতে ড্রেজারের লোকজনকে বাধা দিলেও ড্রেজার বন্ধ করেনি। যার ফলে ড্রেজারের পানি ও মাটিতে বিদ্যালয়ের দুটি ভবনের নীচতলার বারান্দা ও কক্ষের ভেতর দু’তিন ফিট করে কাদা মাটিতে ঢাকা পড়েছে। বিদ্যালয় আঙ্গিনায় একটি গভীর নলকূপ ৩-৪ ফিট কাদামাটির নীচে চাপা পড়েছে।
বিদ্যালয়ে আসা চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রজ্ঞা তালুকদার জানায়, বিদ্যালয়ের দরজা খুলতে না পারায় শিক্ষক তাদের ছুটি দিয়েছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন জানান, সকালে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখেন বিদ্যালয় ভবন মাটির নীচে চাপা পড়েছে এবং পানি ও কাদামাটি বিদ্যালয়ের রুমের ভেতর ঢুকে পড়েছে।
তিনি আরো বলেন, বিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করতে না পারার বিষয়টি তিনি দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাদাত মিয়া জানান, অটিবিএল নামক একটি কোম্পানি বৌলাই নদী খননের কাজ করছে। তিনিসহ গ্রামের লোকজন কোম্পানির প্রতিনিধি রাজু আহমেদ ও সোহেলকে বিষয়টি শনিবার রাতেই জানিয়েছেন কিন্তু তারা তাদের কথা না শুনে ইচ্ছামতো মাটি ফেলার কারণে বিদ্যালয়ের এ দুরবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
চিকসা গ্রামে আব্দুন নূর মিয়া বলেন, কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানে মাটি ফেললে তারা এলোমেলোভাবে ফেলে রাখে। আর যখনই স্থানীয় দালালের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে কোনো ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায় মাটি ফেলে তখন সুন্দরভাবে মাটি ভরাট করে দেয়।
এ বিষয়ে অটিবিএলের প্রতিনিধি রাজু আহমদ বলেন, তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন এসে বিষয়টি দেখবেন। তাহিরপুর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাঈদ বলেন, বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমাকে জানিয়েছেন।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মুনতাসির হাসান বলেন, বিষয়টি আমি সরজমিন গিয়ে দেখবো।