× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আলাপন / ‘এটি সারাজীবন আমার মনে থাকবে’

বিনোদন

কামরুজ্জামান মিলু
২২ অক্টোবর ২০১৯, মঙ্গলবার

কেউ আমার ঠিকমতো খোঁজ নেয় না। শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি বর্তমান বেশিরভাগ সিনেমার গল্প-চরিত্র পছন্দ না হওয়ায় অনেকদিন কাজ থেকে দূরে আমি। তারপরও আশায় থাকি ইন্ডাস্ট্রির মানুষরা আমার খোঁজ খবর নিবে। মাঝে অনেকে যোগাযোগ করলেও এখন তেমন কেউ করে না। আমার অভিনয়ের আগ্রহ থাকলেও মনের মতো চরিত্রের অভাবেই কাজ করা হয়ে উঠছে না। আর এখনকার বেশিরভাগ সিনেমায় আমার অভিনয়ের মতো চরিত্র থাকে না। তবে সবার দোয়াতে এখনো বেঁচে আছি, অভিনয় ছাড়তে চাই না। কথাগুলো দেশীয় চলচ্চিত্রের গুণী অভিনয়শিল্পী আনোয়ারা বেগমের।
মানবজমিনের সঙ্গে আলাপকালে এ কথাগুলো বলেন তিনি। ষাটের দশকের গোড়ার দিকে নৃত্যশিল্পী হিসেবে শোবিজে কাজ শুরু করেন আনোয়ারা। এরপর অসংখ্য ছবিতে অভিনয় করে আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান এই অভিনেত্রী। সোমবার রাতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ভারত-বাংলাদেশ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডে (বিবিএফএ) আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয় দেশীয় চলচ্চিত্রের এই সিনিয়র অভিনেত্রীকে। অনুষ্ঠানের আগে পুরস্কার পাওয়ার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমার জীবনে চাওয়ার কিছু নেই। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি আমি। আমি তো কখনো কল্পনাও করতে পারিনি এতো বড় সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে আমাকে। এটি সারাজীবন আমার মনে থাকবে। আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ১৯৪৮ সালের ২রা জুন জন্ম নেওয়া এই সুঅভিনেত্রী ষাটের দশকে মাত্র ১৪ বছর বয়সে অভিনেতা আজিমের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। নায়িকা হিসেবে তিনি প্রথম অভিনয় করেন ১৯৬৭ সালে উর্দু ছবি সৈয়দ আউয়াল ও শিবলী সাদিক পরিচালিত ‘বালা’তে। অভিনেত্রী হিসেবে আনোয়ারার টার্নিং পয়েন্ট একই বছর মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্র খান আতাউর রহমান পরিচালিত ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’। ওই ছবিতে আলেয়া চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করে সর্বস্তরের দর্শকের প্রশংসা কুড়ান তিনি। আনোয়ারা নৃত্যশিল্পী থেকে চরিত্রাভিনেত্রী হয়েছেন। নায়ক আলমগীর, জসিম, ইলিয়াস কাঞ্চন থেকে শুরু করে মান্না, রিয়াজ, শাকিব খানের মা হয়েছেন বিভিন্ন ছবিতে। কাজী হায়াতের ‘দাঙ্গা’ সিনেমা থেকে হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ সিনেমায় মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। শুধু যে মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তা নয়,  দেবদাসের বিখ্যাত চন্দ্রমুখী চরিত্রে যে অসাধারণ অভিনয় করেছেন তা দর্শকদের চোখেই চির অম্লান। অভিনেত্রী আনোয়ারাকে সবচেয়ে ভালোভাবে ব্যবহার করেছিলেন আমজাদ হোসেন। তার নির্মিত ‘নয়ন মনি’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই পয়সার আলতা’য় অনবদ্য অভিনয় সেটারই প্রমাণ। অভিনেত্রী আনোয়ারার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দিতে। স্বামীর নাম মহিতুল ইসলাম। স্বামী, এক মেয়ে মুক্তি আর নাতনি কারিমা ইসলাম দরদীকে নিয়েই তার ব্যস্ততা। এ অভিনেত্রীর পূর্ব নাম ছিল আনোয়ারা জামাল। চলচ্চিত্রে একটা সময় মা ও দাদী-নানি চরিত্রে তিনি তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। সবশেষ কোন কাজ করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, যতদূর মনে পড়ে অভিনেতা ডি এ তায়েবের সঙ্গে ‘আমার মা’ নামে একটি ছবিতে অভিনয় করেছি। এ ছবিটি সামনে মুক্তি পাবে। এছাড়া আকাশ আমিনের পরিচালনায় রিচ ক্যামিকেলের সরিষার তেলের বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হয়েছি। বেশ কয়েক বছর ধরে আমার স্বামী অসুস্থ। তিনি মাঝে স্ট্রোক করেছিলেন। মাঝে আগারগাঁওয়ের একটি হাসপাতালে ডা. দীন মোহাম্মদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা করানো হয়। বর্তমানে তার দেখাশুনা করছি। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে তার স্বামীর উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীও সহায়তা করেন আনোয়ারাকে। একই সময়ে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়াও সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। বর্তমান সময়ে চলচ্চিত্রকে অনেক মিস করেন বলে জানালেন এই অভিনেত্রী। সবশেষে তিনি বলেন, আমি একটা সময় আমার বাচ্চা-স্বামীকে সময় দিতে পারিনি। এখন সময় দিচ্ছি। আর এখন তো মনে হয় ভালো গল্পের চলচ্চিত্র নির্মাণও কম হচ্ছে। ভালো মানের চলচ্চিত্রে কাজ করতে চাই। কাজ করার ক্ষুধা সব সময় অনুভব করেন বলে জানালেন আনোয়ারা।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর