মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরে এখন নিঃস্ব হয়ে গেছেন এক হতভাগা পিতা। এখন আর তিনি রাগে, ক্ষোভে ও দুঃখে মেয়ে হত্যার বিচার চান না। উল্টো বিচার চাইতে গিয়ে গত ৮ মাসে সাড়ে ৪ লাখ খরচ করে তিনি নিঃস্ব। মঙ্গলবার দুপুরে মাধবপুর প্রেস ক্লাবে এসে রিপা আক্তারের বাবা ফারুক মিয়া কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় তিনি বলেন, আমার মেয়ে হত্যার বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি। ঘুরতে ঘুরতে এখন তিনি ক্লান্ত। মামলার প্রধান আসামি রিপার স্বামী মূল ঘাতক বেনু মিয়াকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। মামলা চালাতে এই পর্যন্ত সাড়ে ৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।
তিনি বলেন এখন আমি নিঃস্ব। মামলা চালানোর মত টাকা আর আমার কাছে নেই। মাধবপুর উপজেলার কড়রা গ্রামের মৃত তৈয়ব আলীর ছেলের সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার শ্রীঘর গ্রামের প্রবাসী ফারুক মিয়ার মেয়ের সঙ্গে ৫ বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক বাবদ দুই লক্ষ টাকা ও পরে মেয়ের সুখের জন্য একটি বসত ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়। এরপরও ঘাতক বেনু মিয়া আরো যৌতুকের টাকার জন্য রিপা আক্তার কে মারধোর করত। এছাড়া বেনু মিয়া গত ২৪শে জুন নাসিরনগর উপজেলার ধরমন্ডল গ্রামে মায়ানুর নামে এক যুবতী কে বিয়ে করেন। দ্বিতীয় বিয়ের পর রিপার উপর অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যায়। এরজের ধরে গত ৬ই ফেব্রুয়ারি স্বামী বেনু মিয়া রিপা আক্তার কে হত্যা করে ঘরের তীরের (আড়া) সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। এ ঘটনায় রিপার মা জেসমিন আক্তার গত ৮ই ফেব্রুয়ারি ঘাতক বেনু মিয়া কে প্রধান আসামি করে মাধবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে পুলিশ পলাশ মিয়া নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে। সে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা এসআই লিটন ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করে বাদীর কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া মাত্রই কল কেটে দেন। মাধবপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক গোলাম দস্তগীর জানান, আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা চলছে। শিগগিরই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।