শ্রীমঙ্গলে বিয়ের ৩ মাসের মাথায় এক নববধূকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এনিয়ে নববধূর পিতা মো. সুলতান মিয়া মেয়ের জামাতা, শ্বশুর, শাশুড়ি, খালাকে আসামি করে শ্রীমঙ্গল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। স্থানীয় ও থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২২শে আগষ্ট উপজেলার খাসগাঁও এলাকার মরিয়ম বেগম (২৫) এর সাথে রামনগর গাজিপুর এলাকার মনিরুল ইসলাম মনিরের সাথে পূর্ব প্রেমের সূত্র ধরে মনিরুলের মায়ের অজান্তে বিয়ে হয় বিয়ের পর থেকেই মনির মরিয়মকে ঘরে তুলে নেয়। মনিরের প্রবাসী মা মনি বেগম গত সেপ্টেম্বরে দেশে ফিরেন। তিনি ছেলের এই বিয়ে মন থেকে মেনে নিতে পারেননি। কিছু দিন পর মনি বেগম মরিয়মকে অনুষ্ঠান করে ঘরে তোলার কথা বলে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। এরপর পরই মনি ছেলেকে নিয়ে দেশের বাড়ি নোয়াখালী যায়। সেখান থেকে শারমিন নামে এক ভাইঝিকে নিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
শারমিনের উপস্থিতির খবর পেয়ে মরিয়ম স্বামীর বাড়িতে আসে। মনিরের সঙ্গে শারমিনের বিয়ের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়লে সংসারে অসোন্তষের সৃষ্টি হয়। অভিযোগে মরিয়মের বাবা জানান, গত ১৪ই অক্টোবর রাত ১১টার দিকে একটি অজ্ঞাত ফোন থেকে জানতে পারেন তার মেয়ে মরিয়ম বিষপান অবস্থায় মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ খবর জানার সঙ্গে সঙ্গে মরিয়মের পিতা সুলতান মিয়া বড় মেয়ে ফাতেমা বেগমকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটে যান। এসময় মরিয়ম জানায়, মনিরের সাথে তার মামাত বোনের বিয়ে হয়েছে। এখবর জানার পর রাতে স্বামী ও শাশুড়ির কাছে জানতে চাইলে তারা মরিয়মকে অকথ্য নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে মরিয়ম পানি চাইলে স্বামী ও শাশুড়ি শরবতের সাথে বিষ মিশিয়ে পান করায়। সে নিস্তেজ হয়ে পড়লে তারা তাকে বাড়ির পুকুরের পানিতে ফেলে দেয় বলে মরিয়ম তার বাবার কাছে জানায়। পরে স্থানীয়রা মরিয়মকে পানি থেকে উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সেখান থেকে দ্রুত মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর শুক্রবার ১৮ই অক্টোবর পর্যন্ত মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন মরিয়ম। শুক্রবার দুপুরে মরিয়মের অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে প্রেরণ করেন। পরদিন শনিবার ভোর রাতে মরিয়ম সেখানে মৃত্যুবরণ করেন। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
জানতে চাইলে শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আব্দুছ ছালেক বলেন, ‘আপাতত অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। এটা আত্মহত্যা না কি বিষ প্রয়োগে হত্যা তা নিরূপণের চেষ্টা চলছে। এ জন্য মরদেহের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি। রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে’।