জেলেদের ওপর নির্যাতন, মারপিট ও জিম্মি করে অর্থ আদায়ের অভিযোগে পশ্চিম সুন্দরবনের নীলকমল স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামা প্রসাদ রায়সহ ৬ বনরক্ষীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মৎস্য ব্যবসায়ী মো. আব্দুল হান্নান গাজী বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অপর আসামিরা হলেন মো. ইকরামুল হক (বি এম), মমিন (বি এম), লালন (বি এম), মঞ্জু (এফ জি) ও ফারুককে (বি এম)। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, সাগরে ইলিশ মাছ ধরার জন্য মাসে আড়াই লাখ টাকা পরিশোধের চুক্তি হয় স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শ্যামা প্রসাদের সাথে। চুক্তি অনুযায়ী গত তিন মাসে তারা ওসিকে সাত লাখ টাকা পরিশোধও করেন। গত ৭ই অক্টোবর ইলিশ ধরা বন্ধ হলে অফিসের স্টাফ নিয়ে জেলেদের আটক করে মাসিক চুক্তির টাকা অগ্রিম দাবি করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। মাছ ধরা বন্ধ থাকায় অগ্রিম টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে জেলেদের বেদম মারপিট শুরু করে। অন্যদিকে ট্রলারযোগে সাগরে গিয়ে জেলেদের নৌকা আটকে সিওআর করার নামে লাখ লাখ টাকা আদায় করেন।
যার রশিদ চাইলে তাদের হুমকি দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ডিএফও এবং সিএফকে মাছ দেয়ার কথা বলে প্রায় ৩ লাখ টাকা মূল্যের ৩২০টি ইলিশ মাছ নিয়ে গেছে। এছাড়াও ওসি’র বিরুদ্ধে অভয়ারণ্য এলাকায় বিনাপাশে মাছ ধরতে দেয়ারও অভিযোগ করেন এজহারে।
এর আগে গত ১২ই অক্টোবর খুলনা প্রেসক্লাবে জেলা মৎস্যজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন, অভয়ারণ্যের বন কর্মকর্তা শ্যামা প্রসাদের ঘুষের টাকা অগ্রিম না দেয়ায় জেলেদের ক্রসফায়ারে মারার হুমকি দিয়েছিলেন।
সুন্দরবন ও দুবলার চর এলাকায় মৎস্য আহরণে পাস পারমিট নিয়ে গেলেও প্রতি মাসে আড়াই লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে নীলকমলে কর্মরত ওসি শ্যামা প্রসাদ রায়, মো. ইকরামুল হক (বি এম), মমিন (বি এম), লালন (বি এম), মঞ্জু (এফ জি) ও ফারুককে (বি এম)। দাবি অনুযায়ী তাদের এই ঘুষের অর্থ অগ্রিম না দিতে পারায় জেলেদের চরম মারপিট ও ফাঁকাগুলি করে ‘ক্রসফায়ার’র হুমকি দেয়া হয়। অভিযোগ অস্বীকার করে বন কর্মকর্তা শ্যামা প্রসাদ বলেন, পরে এসব বিষয়ে কথা হবে।