× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

গাজীপুরের কাওরাইদ ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র /পিয়ন দিয়ে চলছে স্বাস্থ্যসেবা

বাংলারজমিন

ইকবাল আহমদ সরকার, গাজীপুর থেকে
২৪ অক্টোবর ২০১৯, বৃহস্পতিবার

গাজীপুর জেলার প্রায় সব ক’টি ইউনিয়নেই আছে ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মধ্যে অনেক ইউনিয়নের স্বাস্থ্যকেন্দ্র এখন নিজেই রোগী হয়ে পড়েছে। এমন একটি হলো কাওরাইদ ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র। যেখানে চিকিৎসকসহ লোকবল থাকার কথা চারজন, সেখানে আছে মাত্র একজন। ওই কেন্দ্রে নানা অনিয়ম আর চাকরিস্থলে চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় নাগরিকরা। কোনো কোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিত্যক্ত ভবনে প্রায় নিয়মিত বসছে মাদকসেবী ও জুয়াড়িদের আসর। তবে, স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, জনবল কম থাকায় কোথাও দুরবস্থা থাকলেও অধিকাংশ কেন্দ্রের অবস্থাই ভালো।
স্থানীয় অনেক নারী-পুরুষের অভিযোগ, জেলার শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে ডাক্তার এবং ওষুধ দুটিরই সংকট। কর্মচারীরা মানেন না অফিস সিডিউলও।
বর্তমানে মূলত একজন অফিস পিয়ন আনিছুর রহমানের খেয়ালখুশিমতোই চলে স্বাস্থ্যসেবা। পিয়ন আনিছ আর একই বিল্ডিংয়ে থাকা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের একমাত্রকর্মী দিয়েই চলে স্বাস্থ্যসেবা। পরিবার-পরিকল্পনা বিভাগের কর্মী জন্ম নিয়ন্ত্রন সামগ্রী দেয়া ছাড়াও ডাক্তারের অনুপস্থিতিতে কিছু কিছু রোগের ওষুধ দিয়ে থাকেন।
চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ফজলুল হকের বিরুদ্ধেও আছে নানা অভিযোগ। দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মাঝে মাঝে কেন্দ্রে গেলেও কাগজে-পত্রে সই রয়েছে প্রতিদিনের। এই অবস্থায় অনেক ধরনের ওষুধ যাবার কথায় নয় হাসপাতালে। সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সীমানার ভেতরে, পুরারো ভবনে নেশাখোর, জুয়াড়ি আর অসামাজিক কর্মকাণ্ডের আস্তানায় পরিণত হওয়ায় এলাকার সামাজিক পরিবেশ খারাপ হচ্ছে। পুরানো ভবনের একটি পরিত্যক্ত কক্ষে পড়ে আছে হেরোইন সেবনের বিভিন্ন আলামত। কেন্দ্রের পাশের একজন নারী জানান, পরিত্যক্ত বিল্ডিং এ অসামাজিক কার্যকলাপ হয়, জুয়া খেলা চলে। এ জন্য তারা নিজেরা একটি কক্ষে লাকড়ি রেখে তালা দিয়ে রেখেছেন। অন্য একজন বৃদ্ধা জানান, তাশ দিয়ে জুয়া খেলা হয়। আর কিছুদিন পরপর নেই তাশ নিয়ে তিনি চুলার আগুনের কাজে লাগান। স্থানীয়রা বলছেন, স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসক না থাকলেও উপজেলা সদর থেকে কেন্দ্রে যাচ্ছে নানা ধরনের ওষুধ। রোগীদের মাঝে বিতরণ না করে সেসব ওষুধের বড় অংশই হরিলুট হচ্ছে। হাসপাতালে হাজির না হয়েও কয়েকদিন পর পর গিয়ে একসঙ্গে কয়েকদিনের হাজিরা দেন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ফজলুল হক। এলাকাবাসীর নানা অভিযোগ মানতে নারাজ তিনি। স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ফজলুল হক বলছেন, এসব অভিযোগ ষড়যন্ত্রমূলক। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পোস্টিং তার। এরপরও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নির্দেশে ওই ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে অত্যন্ত নিষ্ঠা, সততা ও সুনামের সঙ্গে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। আজ পর্যন্ত কেউ তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ তুলতে পারেননি। এলাকাবাসী আরো বলছেন, রাজধানী ঢাকার পাশের জেলা গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা শহর থেকে ১০ মাইলের বেশি দূরত্বে থাকা কাওরাইদ ইউনিয়নের প্রায় অর্ধলাখ লোক কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এই হাসপাতাল থেকে। এলাকার জনগণ গুরুত্বপূর্ণ এই সরকারি প্রতিষ্ঠানের ওপর আস্থা হারাতে বসেছে। এই স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে বর্তমানে কর্মরতদের অন্যত্র বদলিসহ চিকিৎসাসেবা বাড়ানোর দাবি রয়েছে সচেতন মহলের। এসব অভিযোগের বিষয়ে গাজীপুর জেলার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সিভিল সার্জন, ড. মো. খায়রুজ্জামান বলেন, হাসপাতালের নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসক অন্তত চারমাস ধরে ঢাকায় আছেন প্রেষণে। এছাড়া বর্তমানে এই কেন্দ্রের কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ও ফার্মাসিস্টসহ চারটি পদের মধ্যে তিনটি পদই শূন্য রয়েছে। অন্য অভিযোগের বিয়ষগুলো আমার জানা ছিল না। তবে যখন জানলাম অভিযোগের বিষয়গুলো কেন হচ্ছে, কীভাবে হচ্ছে এসব বিষয় খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর