রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও হেডম্যান (মৌজা প্রধান) দ্বীপময় তালুকদারকে (৪৫) অপহরণের পর গুলি করে এবং নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে গেছে সন্ত্রাসীরা। গতকাল সকালে উপজেলার গাইন্দ্যা ইউনিয়নের তাইতং পাড়ার জঙ্গলে তার লাশ পাওয়া যায়। এই ঘটনার প্রতিবাদে রাঙ্গামাটি শহরে তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ মিছিল করেছে রাঙ্গামাটি জেলা বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। অপরদিকে রাজস্থলী উপজেলা সদরে নিহতের লাশ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশের মাধ্যমে অবিলম্বে দ্বীপময়কে হত্যার সঙ্গে জড়িত পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে উপজেলাবাসী। এর আগ পর্যন্ত উপজেলা সদরের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলেও সমাবেশ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল সকাল ৭টার দিয়ে দিকে দ্বীপময় তালুকদারের লাশ দেখতে পায়ে পুলিশে খবর দেয় এলাকাবাসী। সকাল ৮টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দ্বীপময়ের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। দ্বীপময় উপজেলায় ৩৩৩ নম্বর ঘিলাছড়ি মৌজার প্রধান ও ঘিলাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।
তিনি ঠিকাদারি পেশার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছেন তার স্বজনেরা। পুলিশ জানায়, গত মঙ্গলবার দুপুরে দ্বীপময় উপজেলার তাইতং পাড়ার জিরোমাইল এলাকায় ঠিকাদারির কাজ পরিদর্শনে যান। সেখান থেকে একদল দুর্বৃত্ত অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায় তাকে। গতকাল সকালে সেই অপহরণ হওয়ার স্থানের এক কিলোমিটার দূর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। রাজস্থলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মফজল আহম্মেদ খান বলেন, দ্বীপময় তালুকদারের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে গতকাল দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তাকে গুলি করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। লাশ উদ্ধারের পর রাজস্থলী বাজারে উত্তেজনা চলছে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, দ্বীপময়ের মুখে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েই ক্ষান্ত হয়নি সন্ত্রাসীরা, তার মাথায় গুলিও করা হয়েছে। এদিকে নিহতের মরদেহ উদ্ধারের পর সেটি নিয়ে স্থানীয়রা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিও জানিয়েছে এলাকাবাসী। এই ঘটনার সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি জেএসএস এর অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা জড়িত রয়েছে বলে পারিবারিক একটি সূত্র জানিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পরিবারিক ঐ সদস্য জানান, আমরা অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরপরই রাতে জেএসএস এর শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তারা বিষয়টি অস্বীকার করেছে এবং আমাদেরকে ধৈর্য্য ধরার পরামর্শ দিয়েছিল। বর্তমানে রাজস্থলী উপজেলাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।