× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শফিকুল হত্যার এক বছরে উদ্ধার হয়নি ক্লু

বাংলারজমিন

আমিনুল ইসলাম লিটন, ঝিনাইদহ থেকে
২৪ অক্টোবর ২০১৯, বৃহস্পতিবার

ঝিনাইদহের শফিকুল ইসলাম (৩৯) হত্যার এক বছর পার হলেও এই মামলার কোন মোটিভ ও ক্লু উদ্ধার সম্ভব হয়নি। কোন অগ্রগতি না হওয়ায় তার পরিবার হতাশ হয়ে পড়েছেন। পুলিশের কাছ থেকে গত ১০ মাস আগেই মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডিতে হস্তান্তর করেছে। আজ পর্যন্ত কোন পুলিশ বা সিআইডি হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার বা শনাক্ত করতে পারেনি। এজাহারভুক্ত একমাত্র আসামি শহরের কাঞ্চনপুর গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে রফিকুল ইসলাম জামিনে মুক্ত রয়েছেন। হত্যার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামিরা আজো ধরাছোঁয়ার বাইরে। বাদী নিহতর বোন মাহবুবা জামান খালেদা জানান, গত ২রা নভেম্বর ২০১৮ ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কের লাউদিয়া এলাকার মহাসড়কের পাশে শফিকুলকে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে ঘাতকরা মোবাইলে শফিকুলকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়।
এখনো পর্যন্ত শফিকুলের মামলা তদন্ত রিপোর্ট ও মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের কোন খবর পুলিশ বা সিআইডি আদালতে মামলার ফাইলে নথিভুক্ত করেনি। ফলে এই মামলার ভবিষ্যৎ ও ন্যায় বিচার নিয়ে বাদী ও তার পরিবার শংকিত। এই মামলা সঠিক বিচার আদৌ পাবে কি তারা জানে না। নিহত শফিক ঝিনাইদহ শহরের কলাবাগান পাড়ার আব্দুল ওয়াদুদ তরফদার ওরফে পটলা ডাক্তারের ছেলে। পরিবারের অভিযোগ পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ ও মার্কেট ভাড়া নিয়ে গোলযোগের জের ধরে এজাহার নামীয় আসামি ও বিমাতা ভাইয়েরা যৌথ পরিকল্পনায় শফিককে হত্যা করতে পারে বলে ধারণা করছে। বাদী অভিযোগ করেন হামদহ বাসস্ট্যান্ডে তাদের পৈত্রিক মার্কেট ও বসতবাড়ির জমি জায়গা নিয়ে বিরোধের জের ধরে আসামি রফিকুল সন্ত্রাসী দিয়ে তার ভাইকে মারধর করে। আসামি রফিকুল সাড়ে ১১ লাখ টাকা মূল্য নির্ধারণ করে শফিকুলের নামীয় একটি দোকান ঘর ক্রয়ের বায়না করেন। কিন্তু সে ৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা দিয়ে বাকি টাকা পরিশোধ না করেই দোকান ঘরটি রেজিষ্ট্রি করার জন্য বিভিন্ন সময় চাপ সৃষ্টি করে। পাওনা টাকা চাওয়ার কারণে শফিকুল হত্যার দেড়মাস আগে ক্ষিপ্ত হয়ে রফিকুল কাঠের বাটাম দিয়ে বেদম মারপটি করে। এসময় শফিকুল আহত হয়ে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ও ঢাকা মেডিকেলে ১০/১২ দিন  আহত অবস্থায় ভর্তি থাকেন। এরপর সুস্থ হয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তি গনের মধ্যস্থতায় বকেয়া টাকা পরিশোধ করে দোকানঘরটি রেজিস্ট্রি করা শর্তে মীমাংসা করা হয়। ঠিক এ ঘটনার দেড় মাস পরেই পরিকল্পিতভাবে শফিকুলকে  বাসার সামনে চায়ের দোকানে বসে থাকা অবস্থায় মোবাইল ফোনে তাকে ডেকে নিয়ে ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কের লাউদিয়া নামক স্থানে ফাঁকা মাঠের মধ্যে নিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে তাকে মৃত ভেবে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে চলে যায় সন্ত্রাসীরা । এ সব কথা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হলেও আসামি রফিকুলকে রিমান্ডে নিয়ে কোন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি।  যে কারণে এজাহারভুক্ত একমাত্র আসামি রফিকুল জামিনে মুক্তি পেয়ে এখন বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং বিভিন্ন সময় রফিকুল ও আমার বিমাতা ভায়েরা মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি/ধামকি  দিচ্ছে। আমার বিমাতা ভাইদের নাম মামলার এজাহরে উল্লেখ থাকলে ও পুলিশ বা সিআইডি তাদেরকে  জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজো আটক করেনি। ফলে অন্যান্য আসামিরাও সিআইডি বা পুলিশের নজরদারির বাইরেই রয়েছে গেছে। গত এক বছর ধরে আমরা চরম নিরাপত্তাহীন অবস্থায় জীবন যাপন করছি ।  প্রাণ ভয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে কোথাও যেতে পারি না। আমাদের ছেলে মেয়েরাও স্কুলে যেতে পারছে না। ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া প্রায় বন্ধের পথে। মামলার বাদী নিহতের বোন মাহবুবা জামান খালেদা বলেন, পুলিশ প্রশাসন, আইন আদালত ও গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে আমার আকুল আবেদন ভাইয়ের হত্যাকারী ঘাতকদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তির  দাবি জানাচ্ছি।
 এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা মো. রিয়াজুল ইসলাম জানান, গত ১০ মাস আগে শফিকুল হত্যার তদন্তর জন্য মামলাটি  সিআইডিতে আসে। এই মামলার বাদী বা নিহতের স্ত্রী আমাদের কোন তথ্য দিয়ে সহায়তা করছে না। নিহতের ৩টি মোবাইল সিম ট্র্যাকিংসহ অন্যান্য পদ্ধতি অনুসরণ করে হত্যার মোটিভ ও ক্লু যরদূর উদ্ধার করেছি তা তদন্তের স্বর্থে আপনাদের বলতে পারছি না। তারপরও বলবো আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই হত্যার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে পারবো।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর