× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

এমপি বুবলীকে নিয়ে কী করবে সংসদ

প্রথম পাতা

কাজী সোহাগ
২৪ অক্টোবর ২০১৯, বৃহস্পতিবার

পরীক্ষা জালিয়াতি ঘটনায় বিতর্কের জন্ম দিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে সংরক্ষিত মহিলা আসন-২৪ এর সংসদ সদস্য তামান্না নুসরাত বুবলী। তিনি নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও নরসিংদীর প্রয়াত মেয়র লোকমান হোসেনের স্ত্রী। বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) প্রশাসন এরই মধ্যে সব পরীক্ষা ও রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে । তার এ ঘটনায় বিব্রত এমপিরা। বিষয়টিকে নৈতিক স্খলনজনিত ঘটনা বলে তারা অভিহিত করছেন। বলছেন, এটা এমপিদের জন্য খুবই লজ্জাজনক ঘটনা। এদিকে সংসদ নিয়ে কাজ করেন এমন বিশ্লেষকরা বলছেন, নৈতিক স্খলনজনিত ঘটনা ঘটানোর জন্য ওই এমপির পদত্যাগ করা উচিত। এ বিষয়ে সংসদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
ওদিকে প্রশ্ন উঠেছে এমপি তামান্না নুসরাত বুবলীকে নিয়ে কি করবে সংসদ।

এ বিষয়ে আপাতত কোন মন্তব্য করতে চান না স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, এ ব্যপারে আমি এখন কিছুই বলতে চাই না। দেখা যাক, সংসদ অধিবেশন শুরু হোক। চলতি বছরের ২০শে ফেব্রুয়ারি স্পিকারের কাছে শপথ বাক্য পাঠ করেন ওই সংসদ সদস্য। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে নুসরাত বুবলীর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে প্রিন্স নামের এক ব্যক্তি তার ভাই পরিচয় দিয়ে বলেন আপা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মানসিকভাবে একেবারে ভেঙ্গে পড়েছেন। বাড়িতে চিকিৎসক এসে তাকে স্যালাইন দিয়ে রেখেছেন। একইসঙ্গে পুরোপুরি বিশ্রাম নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক। সুস্থ হলে তিনি সবার সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান। এদিকে বুবলীকে নিয়ে বিব্রত সরকারি দল আওয়ামী লীগও।

২০শে অক্টোবর বিষয়টি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তামান্না নুসরাত বুবলী নিজের পরীক্ষা অন্যকে দিয়ে দেয়াটা অন্যায় করেছেন। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এদিকে আগামী ৭ই নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে সংসদ অধিবেশন। স্পিকার তার বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য এরইমধ্যে অধিবেশনকে ইঙ্গিত করেছেন। বিষয়টি নিয়ে সংসদ সচিবালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, এ ইস্যুতে আসলে সংসদের কিছু করার নেই। ঘটনাটি নৈতিক স্খলনজনিত হলেও তাকে এমপি পদ থেকে সরিয়ে দেয়া সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে সংবিধানকে অনুসরন করতে হবে। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে বলা আছে, কোন এমপি নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্থ হয়ে কমপক্ষে দুই বৎসরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন তাহলে সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। সংসদ সচিবালয়ের এ যুক্তির সঙ্গে দ্বিমত জানিয়েছেন সংসদ পর্যবেক্ষনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। মানবজমিনকে তিনি বলেন, যে কোন ব্যক্তির নৈতিক স্খলন ও জালিয়াতি অপরাধ।

ওই এমপি শপথ বাক্য পাঠ করেছেন। তাই এ ঘটনার মাধ্যমে তিনি শপথ ভঙ্গ করেছেন বলে মনে করি। নিজের থেকেই তার পদত্যাগ করা উচিত ছিলো। এখনও তিনি সেটা করেননি। যদিও সেই সংস্কৃতি আমাদের দেশে নেই। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, স্পিকার তাকে শপথ বাক্য পাঠ করিয়েছেন। তাই নিজের ও সংসদের মর্যাদার স্বার্থে এমপির বিষয়ে স্পিকারের ভূমিকা নেয়া প্রয়োজন। তা নাহলে সংসদের মর্যাদা ও আস্থায় ঝুঁকি সৃষ্টি হবে। এখন ওই এমপির বিষয়ে সব ধরনের কর্তৃত্ব ও দায় স্পিকারের। নির্বাচনী হলফনামায় এমপি বুবলী তার শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে এইচএসসি পাস দেখান। কিন্তু নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাড়িয়ে নিতে বাউবির বিএ কোর্সে ভর্তি হন তিনি। পরীক্ষা শুরু হলে তার জায়গায় ৮ জন পরীক্ষা দেন।

নরসিংদীতে পরীক্ষার কেন্দ্র হলেও সংরক্ষিত মহিলা আসনের ওই এমপি পরীক্ষা চালাকালীন সময়ে ঢাকাতেই অবস্থান করেন। প্রথম ৭টি পরীক্ষায় ধরা না পড়লেও শেষ দিনের পরীক্ষায় তার হয়ে প্রক্সি দিতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েন একজন। এরপর বিষয়টি গণমাধ্যমে আসলে নড়েচড়ে বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বুবলীর এ ধরনের কাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট করেছে। তিনি বাউবির কোনো প্রোগ্রামেই আর কখনও ভর্তি হতে পারবেন না। এ ধরনের কাজ একটি ঘৃণিত ও গর্হিত অপরাধ। যারা তার হয়ে প্রক্সি দিয়েছে তাদের পরিচয়প্রাপ্তি সাপেক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর