সেনাবাহিনীর চাপে পদত্যাগ করেছেন বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস। রোববার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে নিজের পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। তার প্রতি সমর্থন জানিয়ে পদত্যাগ করেছেন সম্প্রতি নির্বাচিত সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাও। নির্বাচনটি ঘিরে কারচুপির অভিযোগ তুলেছে বিরোধী দলগুলো। এ নিয়ে দেশজুড়ে চলছে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ। এমতাবস্থায় মোরালেসকে পদত্যাগের আহ্বান জানায় সেনাবাহিনী। তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে রোববার তিনি বলেন, আমি প্রেসিডেন্ট হিসেবে পদত্যাগ করলাম। এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা।
খবরে বলা হয়, ২০০৬ সাল থেকে বলিভিয়ার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন মোরালেস।
লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রেসিডেন্ট হিসেবে পরিচিত তিনি। গত মাসে দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তাতে প্রতিদ্বন্দ্বী কার্লোস মেসাকে হারিয়ে ফের নির্বাচিত হন তিনি। তবে মেসা অভিযোগ করেন, নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। তিনি নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে দেশব্যাপি সরকারবিরোধী বিক্ষোভের ডাক দেন। বিক্ষোভের মুখে নতুন নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মোরালেস। এরপরই তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানান দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার উইলিয়ামস কালিম্যান।
তিনি বলেন, চলমান সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি বিবেচনা করার পর, বলিভিয়ার মঙ্গলের জন্য আমরা প্রেসিডেন্টকে পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছি। যাতে শান্তি ফিরে আসে ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।
এদিকে, রোববার মোরালেস দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, ভাই ও বোনেরা, আমি আপনাদের বলতে চাই যে, লড়াই এখানে শেষ হয়নি। সমতা ও শান্তির জন্য সামাজিক আন্দোলন চলবে।
প্রসঙ্গত, বলিভিয়ার প্রথম আদিবাসী প্রেসিডেন্ট মোরালেস। ২০০৬ থেকে শুরু করে টানা তিন বার নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। তার শাসনামলে দেশটিতে অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে। গত মাসের ২০ তারিখ নির্বাচন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে চতুর্থবারের মতো লড়ে জয়ী হন তিনি। যদিও দেশে এক গণভোটে নির্ধারিত নিয়ম অনুসারে, কোনো প্রেসিডেন্ট সর্বোচ্চ তিন বার নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। তার এমন সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্টি দেখা দেয় জনগণের মাঝে।
মোরালেস নতুন নির্বাচন আয়োজন, নির্বাচন কমিশনে পরিবর্তন আনা ও পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে, অনুষ্ঠেয় নির্বাচনটিতে তিনি নিজে লড়বেন কিনা তা নিশ্চিত করেননি। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মেসা বলেছেন, আপনার মাঝে যদি দেশপ্রেমের ছিটেফোঁটাও থাকে তাহলে আপনার সরে দাঁড়ানো উচিৎ।