অলেগ সোকোলভের বয়স ৬৩ বছর। এই বয়সে তার চেয়ে প্রায় ৪০ বছর ছোট এক যুবতীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তার। ২৪ বছর বয়সী ওই তরুণীর নাম এনাস্তাশিয়া ইয়েশচেংকো। রাশিয়ার সেইন্ট পিটার্সবার্গ শহরে বসবাস সোকোলভের। তিনি ইতিহাসবিদ। ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট বিশেষজ্ঞ। এ বিষয়ে সম্মানজক ফরাসি পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি। ইয়েশচেংকোর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক পরিচিত অনেকেই জানতো।
সম্প্রতি মদ্যপ অবস্থায় এক নদী থেকে উদ্ধার করা হয় তাকে। কাঁধে ব্যাগ নিয়েই নদীতে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। উদ্ধারের পর তার ব্যাগে পাওয়া যায় এক নারীর কাটা হাত। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে এক লোমহর্ষক তথ্য। জানা যায়, ঝগড়ার জেরে নিজের প্রেমিকাকে হত্যা করে কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলেছেন সোকোলভ। এরপর মদ খেয়ে মাতাল হয়ে লাশের টুকরোগুলো লুকিয়ে ফেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার আগেই নদীতে পড়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তিনি।
স্থানীয় গণমাধ্যম সোকোলভের আইনজীবী আলেক্সান্ডার পচুয়েভকে উদ্ধৃত করে জানায়, নিজের অপরাধ স্বীকার করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, লাশের টুকরো লুকানোর পর নিজে নেপোলিয়ন সেজে জনসম্মুখে আত্মহত্যার পরিকল্পনা করছিলেন সোকোলভ। পুলিশ তার বাড়িতে ইয়েশচেংকোর লাশ পেয়েছে।
সোকোলভের প্রেমিকা ইয়েশচেংকোর জন্ম রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় ক্রাসনোডার অঞ্চলে। সেখান থেকে স্নাতক শেষ করে উচ্চতর পড়াশোনার জন্য সেইন্ট পিটার্সবার্গে এসেছিলেন ওই তরুণী। সেখানেই সোকোলভের সঙ্গে তার পরিচয়। তার পরিচিতরা গণমাধ্যমে বলেছেন, ইয়েশচেংকো খুব শান্ত ও মিষ্টি স্বভাবের ছিলেন। একজন আদর্শ শিক্ষার্থী ছিলেন। প্রায় সবাই সোকোলভের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা জানতো। ফরাসি ইতিহাস নিয়ে পড়াশোনা করছিলেন। সোকোলভের সঙ্গে একাধিক কাজ করেছেজ তিনি।
অন্যদিকে, সোকোলভকে তার শিক্ষার্থীরা প্রতিভাবান শিক্ষক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি ফরাসি ভাষায় কথা বলতে পছন্দ করতেন। চাইতেন শিক্ষার্থীরা তাকে ‘সায়ার’ বলে ডাকুক। নিজে নেপোলিয়ন সেজে ঘুরে বেড়াতেও পছন্দ করতেন এই ইতিহাসবিদ। তিনি ফ্রান্সের ইন্সটিটিউট অব সোশ্যাল সাইন্স, ইকোনমিকস অ্যান্ড পলিটিকসের সদস্য ছিলেন।