শতাব্দী ওয়াদুদ। শতাব্দী নামের অর্থ হচ্ছে একশ’ বছর আর ওয়াদুদ মানে প্রেমময়। ছোটবেলা থেকে অভিনয়ের প্রতি এক ধরনের পাগলামি ছিল এই অভিনেতার। থিয়েটার করতেন, এখনো করেন। একটা সময় তার মনে হলো অভিনয় করে যদি জীবন চালানো যায় তাহলে পেশা হিসেবে কাজটা সিরিয়াসলি নেয়া যায়। তাই সব বাদ দিয়ে শুধু অভিনয় শুরু করলেন। প্রাচ্যনাটের সেই তরুণ অভিনেতা শতাব্দী ওয়াদুদকে এখন কে না চিনেন! প্রতিনিয়ত অভিনয়ের দ্যুতি ছড়াচ্ছেন মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে। এরইমধ্যে ‘গেরিলা’ ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। প্রাচ্যনাট্যের হয়ে মঞ্চে ‘সার্কাস সার্কাস’, ‘এ ম্যান ফর অল সিজনস’, ‘কইন্যা’, ‘রাজা’, ‘গন্ডার’ নাটকগুলোতে পারফর্ম করেছেন। ছোটপর্দায় আফসানা মিমির পরিচালনায় ‘গৃহগল্প’ নাটকে অভিনয় করে সাড়া পেয়েছিলেন। এরপর ‘সাইকেলের ডানা’, ‘সাড়ে তিনতলা’, ‘গৃহগল্প’, ‘ঘুমঘর’সহ অনেক নাটকে অভিনয় করে প্রশংসিত হন। ‘বাপজানের বায়োস্কোপ’, ‘গেরিলা’, ‘জীবনঢুলী’, ‘ঢাকা অ্যাটাক’, ‘অজ্ঞাতনামা’সহ কয়েকটি সিনেমায় তার ব্যতিক্রমী অভিনয় নজর কাড়ে দর্শকদের। বর্তমান ব্যস্ততা প্রসঙ্গে এ অভিনেতা বলেন, মির্জা সাখাওয়াত হোসেনের ‘অর্জন ৭১’ সিনেমায় অভিনয় করছি। এরইমধ্যে এফডিসিতে এর কিছু অংশের কাজ হয়েছে। শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ অফিসার আবদুল কাদের মিয়ার মুক্তিযুদ্ধে বিশাল অবদান ছিল। এই চরিত্রেই দর্শকরা আমাকে দেখতে পাবেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চ লাল সবুজের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। একই বছর তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ছবিতে আমার স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করছেন মৌসুমী আপা। ছবিটি নিয়ে শতাব্দী আরো বলেন, সিনেমার গল্পে দেখা যাবে, যুদ্ধের সময় সেই পুলিশ অফিসারকে সাহস যোগায় তার স্ত্রী। দিন শেষে যুদ্ধটা সবার। আর এই যুদ্ধে আমার ট্রেনিংটা কাজে লাগানো যাবে-এসব কথা বলে সাহস যোগায় পুলিশ অফিসারের স্ত্রী। এরপর একটা সময় যুদ্ধে চলে যায় আবদুল কাদের মিয়া। আসছে জানুয়ারিতে উত্তরবঙ্গে এর বাকি কাজ হবে। এদিকে শতাব্দী ওয়াদুদ দীপংকর দীপনের নতুন সিনেমা ‘অপারেশন সুন্দরবন’-এ কাজ করতে যাচ্ছেন। পাশাপাশি গতকালই তার অভিনীত ‘ইতি তোমারই ঢাকা’ সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। সামনে মুক্তির অপেক্ষায় আছে রুবাইয়াত হোসেনের পরিচালনায় ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ও রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিতের ‘নোনা জলের কাব্য’। এসব সিনেমা নিয়ে শতাব্দী বলেন, দীপংকর দীপনের সিনেমায় আমাকে ভিন্ন লুকে দেখা যাবে। আর ‘ইতি, তোমারই ঢাকা’ ছবিতে আমাকে একজন গ্যারেজের মালিকের চরিত্রে দর্শকরা দেখতে পাচ্ছেন। ১১টা আলাদা গল্প আছে এ সিনেমায়। আমাদের গল্পের নাম ‘ঢাকা মেট্রো’। দারুণ একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি আমি। এর পর ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ও ‘নোনা জলের কাব্য’ ছবি দু’টি দর্শকরা দেখতে পাবেন। আসলে বছরে একটা ভালো সিনেমাতে কাজ করতে পারলেও এটা আমার কাছে বড় প্রাপ্তি। এদিকে টিভিতেও নিয়মিত কাজ করছেন বলে জানালেন এ অভিনেতা।