× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

দুদুলতা ধানের আবিষ্কারক দুদুর সাফল্য

বাংলারজমিন

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
১৬ নভেম্বর ২০১৯, শনিবার

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কালুহাটি গ্রামের ইমদাদুল হক দুদু ২০১১ সাল থেকে ধান আবিষ্কারের কার্যক্রম শুরু করেন। সর্বপ্রথম তিনি সুবল লতা ধান থেকে একটি ধান উদ্ভাবন করেন। ওই ধান থেকেই তিনি দুদুলতা পোলাও ধানের আবিষ্কার করেন। গত বছর তিনি প্রায় ২ একর জমি থেকে দুই লক্ষাধিক টাকার ধান ও বীজ বিক্রয় করেন। আগামীতে দুদুলতা ধান থেকে আরো তিনটি উন্নত জাতের ধান উপহার দিতে পারবেন। এ থেকে পোলাও চালের ধান সুলভ মূল্যে বাজারে বিক্রয় করতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি। এই ধানের বীজ আগামীতে এই এলাকার সাধারণ কৃষকেরা চাষাবাদ করবেন বলে জানান তিনি। জানা যায়, ২০১২ সালে সদর উপজেলার কালুহাটি গ্রামের কৃষক ইমদাদুল হক দুদু মিয়া সুবল লতা ধানের মধ্যে নতুন জাতের তিনটি গোছা ধানের গাছ দেখতে পান তিনি।
ঐ তিন গোছা ধান সংগ্রহ করে এই নতুন ধানের আবিষ্কার করেন। প্রাথমিকভাবে দুই বছর পরিচর্যার পর ওই ধানের বীজ তৈরি করে নিজের জমিতে আবাদ শুরু করেন। রোগবালাই-সহিষ্ণু ওই ধানের জাতটি উচ্চতায় খাটো হওয়ার কারণে ঝড় বা বাতাসে হেলে পড়ে না। পোকা-মাকড়ের আক্রমণও হয় কম। এ ছাড়া এ ধানে রোগবালাই নেই বললেই চলে। গত ২০১৭ সালে দুদু মিয়া তিন বিঘা জমিতে ১০০ মণ ধান উৎপাদন করেন। এ বছরও ধানের উৎপাদন ভালো হয়েছে। নতুন জাতের এ ধানের প্রতিটি শীষে ৩৫০ থেকে ৪০০টি পর্যন্ত পুষ্ট ধান হচ্ছে, যা অন্যান্য ধানের শীষের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি। এ ধানের গোছায় চিটা হয় না, তাই ফলন ভালো হচ্ছে। ধান থেকে যে চাল পাওয়া যাচ্ছে, তা দেখতে অনেকটা বেগুনের বিচির মতো। স্বাদও ভালো। বাজারে দামও ভালো পাওয়া যায়। গত বছরের সাফল্যের পর এ বছর ধানের আবাদ বাড়ানোর জন্য কৃষক দুদু মিয়া বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের মাঝে ধানের বীজ সরবরাহ করেন। এই মৌসুমে ওই সব জমিতে ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষিরা। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোফাকখারুল ইসলাম বলেন, নতুন ধানের জাতের উদ্ভাবক কৃষক দুদু মিয়াকে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। ধান উৎপাদনে সার, সেচ, আগাছা দমনসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা বিষয়াবলি আমাদের তত্ত্বাবধানে হচ্ছে। ধানটি দেখে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, এবারো ফলন গতবারের মতো আশানুরূপ হবে। জাতটির চাল চিকন, ভাত খেতে সুস্বাদু, ধানের বাজারমূল্য অপেক্ষাকৃত বেশি, ফলনও ভালো। যার পরিপ্রেক্ষিতে এ জাতের ধানটি দ্রুত দেশব্যাপী ছড়িয়ে যাবে বলে আশা করছি। নড়াইল জেলার কৃষক আব্দুল কায়েস, সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার পাওয়া গ্রিন চাষি মো. ইদ্রিস আলী, শৈলকুপা উপজেলার ভাটই গ্রামের সাহেব আলীসহ একাধিক কৃষক জানান, দুদু মিয়া কয়েক বছর ধরে নতুন ধানের আবাদ করছেন। অন্যদের জমিতে কোনো কারণে ধানের ফলন কম হলেও কয়েক বছর ধরে দেখে আসছি তার নতুন জাতের ধানে ফলন ভালো হচ্ছে। তাই এ বছর তার কাছ থেকে বীজ ধান নিয়ে আবাদ করেছি। ফলন ভালো হবে বলে আশা করছি। ধান বর্তমানে থোড় অবস্থায় আছে। পাশের ক্ষেতের অন্য জাতের ধানের তুলনায় অপেক্ষাকৃত এই ধানের গাছ ভালো বলে মনে হচ্ছে। এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জিএম আব্দুর রউফ বলেন, দুদুলতা ধান প্রতি শতকে গড়ে এক মণ ফলন হচ্ছে। তাছাড়া সার্বক্ষণিক যেকোনো প্রয়োজনে কৃষি অফিস খোঁজখবর রাখছেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর