সাগর পথে মালয়েশিয়া পাচারকালে মাঝি-মাল্লাসহ ১২২ জন নারী-পুরুষ ও শিশুকে আটক করেছে কোস্ট গার্ড। এর মধ্যে শিশু ১৫ জন ও ৫৯ জন নারী রয়েছেন। উদ্ধার সবাই বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। তারা মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন দালালের মাধ্যমে ট্রলারে উঠেছে বলে জানিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সেন্টমার্টিনের অদূরে দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গোপসাগর থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। জানা যায়, টেকনাফ থেকে গত ১২ই নভেম্বর একটি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ফিশিং ট্রলার দিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য রওয়ানা দেয়। যাত্রাকালে সেন্টমার্টিন থেকে ৭ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ট্রলারটি বিকল হয়ে ভাসতে থাকে। স্থানীয় জেলেরা ভাসমান ট্রলারটি দেখে সেন্টমার্টিন কোস্ট গার্ডকে খবর দেয়।
পরে কোস্ট গার্ড জওয়ানরা ১২২ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীসহ মাঝি-মাল্লা ও ট্রলারটি উদ্ধার করে সন্ধ্যা ৭টায় টেকনাফে নিয়ে আসে। এর মধ্যে শিশু ১৫ জন ও ৫৯ জন নারী রয়েছে। মালয়েশিয়াগামী বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আতা উল্লাহ জানান, বাংলাদেশে চলতে ফিরতে কষ্ট হচ্ছে, তাই দালালের মাধ্যমে ট্রলার করে মালয়েশিয়া যাচ্ছি। গত মঙ্গলবার টেকনাফের রাজারছড়া ঘাট থেকে আরিফ আলী ও নুরুল আমিন নামক দুই ব্যক্তির মাধ্যমে ফিশিং বোট নিয়ে ট্রলারে উঠি। বালুখালী সি-ব্লকের মো. আয়াছ (১৯) জানান, ট্রলারযোগে সাগর পথে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা ধরে মালয়েশিয়া পৌঁছে দেয়ার কথা ছিল। নগদে ৩০ হাজার টাকা ও বাকি মালয়েশিয়ার উপকূলে পৌঁছলে পরিশোধের কথা রয়েছে। কিন্তু পথিমধ্যে ট্রলার বিকল হয়ে গেলে কোস্ট গার্ড আমাদের উদ্ধার করে। আফিয়া বেগম (১৫) বলেন, মালয়েশিয়াতে বউ হয়ে যাচ্ছি। দালালের মাধ্যমে দুই দিন ধরে ট্রলারে উঠেছি। এ অবস্থায় কোস্ট গার্ড আমাদের আটক করেছে।
রশিদ আহমদের কন্যা সাবেকুন্নাহার নাহার (১৮) জানান, বাংলাদেশে আমার কেউ নেই। স্বামী মালয়েশিয়াতে রয়েছে। পাসপোর্ট করতে কড়াকড়ি হওয়ায় দালালের মাধ্যমে সাগর পথে আমাকে নিয়ে যাচ্ছেন। কোস্ট গার্ড টেকনাফ স্টেশন কমান্ডার লে. সোহেল রানা বলেন, বঙ্গোপসাগরে একটি ট্রলার বিকল হয়ে ভাসমানের খবর পেয়ে উদ্ধার করতে যায়। ওই ট্রলারে মাঝি-মাল্লাসহ ১২২ জন রোহিঙ্গা রয়েছে। পরে তাদের উদ্ধার করে টেকনাফে নিয়ে আসি। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।