বৈদেশিক অর্থায়ন বিষয়ক নিয়ম বা আইন ভঙ্গের অভিযোগে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের স্থানীয় অফিসগুলোতে তল্লাশি চালিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)। এক বিবৃতিতে সিবিআই বলেছে, তাদের কাছে অভিযোগ আছে যে, ফরেন কন্ট্রিবিউশন (রেগুলেশন) অ্যাক্ট ২০১০ এবং ভারতীয় দন্ডবিধি লঙ্ঘন করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সরকারের বিধিনিষেধ সত্ত্বেও বৃটেন থেকে অর্থ পেয়েছে এ সংগঠনের ভারতীয় শাখা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। এতে আরো বলা হয়েছে, ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যাঙ্গালোর এবং নয়া দিল্লিতে অ্যামনেস্টির অফিসগুলোতে তল্লাশি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। তাদের বিরুদ্ধে গত বছর বৈদেশিক তহবিল সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ করা হয়।
জবাবে অ্যামনেস্টি বলেছে, মানবাধিকারের পক্ষে অবস্থান নেয়া এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কথা বলার পর থেকেই গত বছর থেকে প্রতিটি সময়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইন্ডিয়াকে হয়রানি করা হচ্ছে।
এটা একটি রীতিতে পরিণত হয়েছে। আগস্টে বিতর্কিত জম্মু-কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে মোদি সরকার। এর মধ্য দিয়ে তারা সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এ ছাড়া জম্মু-কাশ্মীরে প্রতিবাদ বিক্ষোভকে শক্ত হাতে দমন করে রাখারও সমালোচনা করে। এ ছাড়া বৃটিশ লেখক অতীশ তাসিরের ভারতীয় নাগরিকত্ব সম্প্রতি বাতিল করে ভারত সরকার। তাদের এমন সিদ্ধান্তেরও সমালোচনা করে অ্যামনেস্টি। তারা ভারত সরকারের এমন আচরণকে লিঙ্গ ও জাতিভিত্তিক অথবা জাতীয়তা ভিত্তিক বৈষম্য বলে অভিহিত করে।
নরেন্দ্র মোদি প্রথম ক্ষমতায় আসেন ২০১৪ সালে। তখন থেকেই সেখানে অলাভজনক সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে নজরদারি কড়াকড়ি করেছে ভারত। নাগরিক সমাজের হাজার হাজার সংগঠনের বিদেশ থেকে দান বা অনুদান পাওয়ার লাইসেন্স বাতিল করেছে অথবা স্থগিত করেছে সরকার। গত বছর পরিবেশ বিষয়ক পর্যবেক্ষক সংস্থা গ্রিনপিস ইন্ডিয়া’র ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করেছে ভারতের আর্থিক অপরাধ তদন্তকারী এজেন্সি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এর ফলে ওই সংগঠন তার স্টাফ সংখ্যা কমিয়ে অর্ধেক করতে বাধ্য হয়েছে।