দুবাই এয়ার শো-২০১৯সহ দ্বিপক্ষীয় বেশ কিছু কর্মসূচিতে অংশ নিতে চারদিনের সরকারি সফরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমিরাতের শাসক মোহাম্মদ বিন রাশেদ আল মাকতুমের আমন্ত্রণে উপসাগরীয় দেশটি সফরে গেছেন তিনি। এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীরা দুবাইয়ের উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যান। ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় রাত ১০টা ১০ মিনিটে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার খবর মতে, আবুধাবিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাবেন। আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা শেষে মোটর শোভাযাত্রা সহকারে প্রধানমন্ত্রীকে দুবাইয়ের হোটেল শাংগ্রিলায় নিয়ে যাওয়া হবে। আমিরাত সফরে পুরো সময় প্রধানমন্ত্রী এই হোটেলে অবস্থান করবেন। ১৭ই নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ও সফল এয়ার শো এবং মধ্যপ্রাচ্য এশিয়া ও আফ্রিকার বৃহত্তম এয়ারোস্পেস ইভেন্ট দুবাই এয়ার  শো-২০১৯-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। সারা বিশ্বের ৮৭ হাজার অংশগ্রহণকারী ও ১ হাজার ৩শ’ এক্সিবিটর দুবাইয়ের ভবিষ্যৎ বিমান বন্দর দুবাই ওয়ার্ল্ড সেন্টারে এ উপলক্ষে সমবেত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ১৭ থেকে ২১ শে নভেম্বর দুবাইয়ের আকাশে দ্বিবার্ষিক এই এয়ার শোটি অনুষ্ঠিত হবে। আশা করা হচ্ছে এবারের ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত এয়ার শো সাফল্যকে ছাড়িয়ে যাবে। ২০১৭ সালের শুরু থেকে ১১৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যে অর্ডার পাওয়া গিয়েছিল। এতে ৬৩টি দেশের ৭৯ হাজার ৩৮০ জন যোগদানকারী ও ১২শ’ এক্সিবিটরকে স্বাগত জানানো হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর আমিরাত সফরের বিষয়ে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দুবাই সফরে দেশটির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে দুই দেশের পরস্পরিক সহযোগিতা বিষয়ক ৩টি সমঝোতা স্মারক সই হবে। সমঝোতাগুলো হলো- দুই দেশের বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষের মধ্যে সহযোগিতা চুক্তি, দুই দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে সহযোগিতা চুক্তি এবং আরব আমিরাতের দুবাইতে বাংলাদেশ দূতাবাসের স্থায়ী ভবন নির্মাণে জমি বরাদ্দ সংক্রান্ত প্রটোকল। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী ১৮ই নভেম্বর আবুধাবিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতে কমর্রত বাংলাদেশীদের ভোটারলিস্ট প্রণয়ন শুরু এবং স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণে নির্বাচন কমিশনের অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন। মোমেন বলেন, শেখ হাসিনা দুবাইয়ের শাসক ছাড়াও আবুধাবির যুবরাজ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সশস্ত্রবাহিনীর ডেপুটি সুপ্রিম কমান্ডার শেখ মুহাম্মদ বিন জায়ের আল নাহিয়ান ও ফ্যামিলি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের সুপ্রিম চেয়ার শেখ ফাতিমা বিনতে মোবারকের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সফরকালে আরব আমিরাতের বড় বিনিয়োগকারী গ্রুপ ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও প্রধানমন্ত্রীর মতবিনিময়ের আয়োজন রয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, এ সফরটি বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে আরব-আমিরাতের বিনিয়োগের ওপর ইতিবাচক প্রভাব রাখবে এবং দু’দেশের বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষের মধ্যে সহযোগিতা জোরদারে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। চারদিনের আমিরাত সফর শেষে আগামী ১৯ শে নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।