× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান /ছুরিকাঘাতে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে চবি ভর্তিচ্ছু ছাত্রী

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
১৭ নভেম্বর ২০১৯, রবিবার

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে ভর্তির অপেক্ষায় ছিল ইয়াসমিন আক্তার (১৯)। চোখে-মুখে তার উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন। তখনই আসে বিয়ের প্রস্তাব। কিন্তু প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করা হয় মেয়েটিকে। আহত ইয়াসমিন এখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যন্ত্রণায় ছটফট করছে। একইসঙ্গে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মেয়েটি। তবে এ ঘটনায় পুলিশ ছুরিকাঘাতে জড়িত আবু নেওয়াজ শরীফ (২৪) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। পরে শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম সরওয়ার জাহানের আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয় সে।


জবানবন্দিতে ছুরিকাঘাতে হত্যার নির্দেশদাতা প্রবাসী নুরুল কাদের (২২) ঘটনার পরদিনই ওমানে চলে গেছে বলে জানায় সে। নুরুল কাদের কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামের আবদুল জব্বার সিকদার পাড়ার মো. জাফরের ছেলে।
গ্রেপ্তার নেওয়াজ শরীফ একই গ্রামের মাস্টার আবু জাফরের ছেলে। সে চট্টগ্রাম নগরীর ওমরগণি এমইএস কলেজ থেকে এবার এইসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। শুক্রবার ভোরে নেওয়াজ শরীফকে কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
জবানবন্দিতে শরীফ জানায়, তারেক, মেহেদী ও তার এক বন্ধু মিলে ইয়াসমিনের ওপর হামলা চালায়। নুরুল কাদের, শরীফ ও তারেক একই গ্রামের বাসিন্দা এবং বন্ধু। মেহেদী, নুরুল কাদেরের পরিচিত। হামলার জন্য মেহেদীকে ৫ হাজার টাকা দেয় নুরুল কাদের। প্রতিদিনের মতো ১২ই নভেম্বর মঙ্গলবার সকাল ১১টায় ইয়াসমিন নগরীর কোতোয়ালি থানার সার্সন রোডে চট্টগ্রাম গ্রামার স্কুলের সামনে এসে পৌঁছালে তারা হামলা চালায়। ঘটনার পরদিন নুরুল কাদের ওমানে চলে যায়।

কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ঘটনার পর ইয়াসমিনের ভাই বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেন। এরপর আমরা গ্রেপ্তার অভিযানে নামি। মূল পরিকল্পনাকারী নুরুল কাদের দেশে নেই। ঘটনায় জড়িত নেওয়াজ শরীফকে গ্রেপ্তার করি। বাকিদেরও গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি বলেন, হামলায় গুরুতর আহত ইয়াসমিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। যন্ত্রণায় সে ছটফট করছে। মানসিকভাবেও সে ভেঙে পড়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলায় সে টিকেছে।
মামলার বাদী ইয়াসমিনের ভাই শাহাদাত জানান, স্কুলে পড়ার সময় থেকেই ইয়াসমিনকে উত্ত্যক্ত করতো নুরুল কাদের। তিন বছর আগে এসএসসি পাস করে দুজন। ইয়াসমিন ভর্তি হয় চট্টগ্রাম নগরীর মহসিন কলেজে। আর নুরুল কাদের চলে যায় বিদেশে।
তিন মাস আগে নুরুল কাদের দেশে ফিরে ইয়াসমিনকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। ইয়াসমিন এইচএসসি পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছে। পরিবারেরও ইচ্ছে। ফলে ইয়াসমিনকে এখন বিয়ে দিতে অসম্মতি জানায়। এ কারণে ইয়াসমিনকে প্রায়ই হুমকি দিতো নুরুল কাদের।

শাহাদাত বলেন, ইয়াসমিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার জন্য নগরীর চকবাজার এলাকায় কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়। সার্সন রোড এলাকা দিয়েই আসা-যাওয়া করতো সে। মঙ্গলবার তাকে একা পেয়ে নুরুল কাদেরের নেতৃত্বে কয়েকজন মিলে তার ওপর হামলা চালায়। তার শরীরের বিভিন্নস্থানে ছুরিকাঘাত করা হয়। স্থানীয় লোকজন ইয়াসমিনকে তাদের হাত থেকে রক্ষা করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সে এখনো মেডিকেলে ভর্তি রয়েছে।

শাহাদাত জানান, আমার বোনের সঙ্গে নুরুলের কোনো সমপর্ক ছিল না। স্কুলে পড়ালেখা করার সময় থেকেই নুরুল ইয়াসমিনকে বিরক্ত করতো। তবে তা আমরা এতদিন জানতাম না। বিয়ের প্রস্তাব দেয়ার পর সে আমাদের কথাগুলো জানায়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর