দুর্নীতির মামলায় সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে হাইকোর্টের দেয়া ছয় মাসের জামিন বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। আজ রোববার হাইকোর্টের জামিন আদেশের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা লিভ টু আপিল খারিজ করে জামিন বহাল রাখেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। ফলে হাইকোর্ট থেকে পাওয়া ছয় মাসের জামিন বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আদালতে লতিফ সিদ্দিকীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী ও শাহ মঞ্জুরুল হক। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। পরে আইনজীবী মনসুরুল হক বলেন, লতিফ সিদ্দিকীর বয়স এবং অসুস্থতা বিবেচনা করে আপিল বিভাগ দুদকের লিভ টু আপিলটি খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে হাই কোর্টের দেয়া জামিন বহাল। দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান বলেন, লতিফ সিদ্দিকীর জামিন স্থগিতে আনা আবেদন আপিল বিভাগ ডিসমিসড করে দিয়েছেন।
গত ৪ঠা নভেম্বর, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ লতিফ সিদ্দিকীকে ছয় মাসের জামিন দিয়ে রুল জারি করে। হাইকোর্টের এই আদেশ স্থগিত চেয়ে গত ৭ই নভেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করে দুদক।
সেদিন চেম্বার আদালত দুদকের আবেদনে কোনো আদেশ না দিয়ে আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে ১১ই নভেম্বর শুনানির জন্য রাখে। এর মধ্যে লতিফ সিদ্দিকী যেন মুক্তি না পান সংশ্লিষ্ট পক্ষকে সে বিষয়টিও নিশ্চিত করতে বলে চেম্বার আদালত। ১১ই নভেম্বর হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে করা দুদকের আবেদনটি সর্বোচ্চ আদালত স্থগিত করে। এনপর দুদুক আদেশের বিরুদ্ধে নিয়মিত লিভ টু আপিল করলে আদালত রোববার আদেশের জন্য রাখে। সে অনুযায়ী শুনানির পর তা খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ।
২০১৭ সালের ১৭ই অক্টোবর রাতে দুদকের বগুড়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে আদমদীঘি থানায় পাটকলের প্রায় আড়াই একর জমি দরপত্র ছাড়াই বিক্রির মাধ্যমে সরকারের প্রায় ৪০ লাখ ৭০ হাজার টাকা আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ এনে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীসহ দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার অপর আসামি হলেন- ওই জমির ক্রেতা বগুড়া শহরের কাটনারপাড়া এলাকার মৃত হারুন-অর-রশিদের স্ত্রী জাহানারা রশিদ। তদন্ত শেষে গতবছরের ১৮ই ফেব্রুয়ারি লতিফ সিদ্দিকীকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। এরপর ওই বছরের ২০শে জুন লতিফ সিদ্দিকী বগুড়ার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। কিন্তু বিচারক তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।