নারায়ণগঞ্জে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে ফতুল্লা মডেল থানায়। গত শুক্রবার রাতে থানা অভ্যন্তরে এক অভিযোগকারীকে মারধরের অভিযোগে গতকাল বিকেলে মীর সোহেল তার সহযোগী শাহীনসহ অজ্ঞাত পরিচয় বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন ফতুল্লার কুতুবপুর এলাকার চাঁদ শিকদার সেলিম নামে এক ব্যক্তি। চাঁদ সেলিমের বিরুদ্ধেও এলাকায় সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ওসি আসলাম হোসেন বলেন, বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্য এবং বাদীর অভিযোগের আলোকে থানার সিসি টিভির ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হওয়াতে মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলায় মীর সোহেল আলী, শাহীনসহ বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে। অভিযুক্তদেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম বলেন, অপরাধী যে হোক তাকে ছাড় দেয়া হবে না।
মামলা নেয়া হয়েছে। গ্রেপ্তারও করা হবে। গত শুক্রবার রাতে থানার ভেতরই চাঁদ শিকদার সেলিম নামে একজন ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগ উঠে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলীর বিরুদ্ধে। সেলিম ফতুল্লার ত্রাস খ্যাত মীর হোসেন মীরুর বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি অভিযোগের বাদী। সেলিমও অতীতে সন্ত্রাসী মীরু বাহিনীর সদস্য ছিলেন। সম্প্রতি মীরুর পক্ষ ত্যাগ করে সেলিম একাই একটি বাহিনী গড়ে তোলে এবং কুতুবপুর এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করে। এ নিয়ে মীরুর সঙ্গে সেলিমের বিরোধ দেখা দেয়। ওই ঘটনায় মীরুর বিরুদ্ধে গত শুক্রবার থানায় অভিযোগ করতে আসে সেলিম। ওই সময় থানার ওসি (তদন্ত) হাসানুজ্জামান আওয়ামী লীগ নেতা মীর সোহেলকে থানায় ডেকে নিয়ে ঘটনা মীমাংসা করে দিতে বলেন। ওই সময় সেলিমকে মীর সোহেল তার সঙ্গে আসতে বললে সেলিম তার সঙ্গে অশোভন আচরণ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওসির সামনেই মীর সোহেল সেলিমকে চড় দেয়। সেলিমের অভিযোগ, মীরুর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়েরের পর ফতুল্লা মডেল থানার এসআই মিজান ঘটনাস্থলে আসেন এবং পরদিন (শুক্রবার) রাতে আমাকে থানায় আসতে বলেন। সে মোতাবেক আমি থানায় প্রবেশ করছিলাম এমন সময় থানা থেকে বের হয়ে আসছিলেন মীর সোহেল আলী, শাহীনসহ আরও বেশ কয়েকজন। তখন মীর সোহেল আলী ও তার লোকজন থানার ভেতরই আমার উপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে আমাকে মারতে মারতে থানা থেকে রাস্তার নিয়ে আসে। আবার এখান থেকে টেনে ওসি তদন্তের রুমে নিয়ে যায়। সেলিম আরও বলেন, ওসি তদন্তের রুমে নেয়ার পর ওসি উল্টো আমাকে ধমকাচ্ছিলেন আর বলছিলেন, থানায় আপনার কাজ কি, কেন এসেছেন। এভাবে থানার ভেতরই যদি আমাদের উপর হামলা করে তাহলে বাইরে আমাদের নিরাপত্তা কতটুকু এবার বুঝে নেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা মীর সোহেল আলী বলেন, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। থানার ওসি (তদন্ত) হাসানুজ্জামান আমাকে থানায় ডেকে নিয়েছিলেন মীরুর সঙ্গে সেলিমের বিবাদ মিটিয়ে দেয়ার জন্য। কারণ মীরু ও সেলিম উভয়ই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। একই দলের দুই নেতার মধ্যে দ্বন্দ্ব মেটাতে আমাকে ডাকা হয়েছিল। এখন সেলিম আমাকে ফাঁসাতে উল্টো আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে।