দেশি পিয়াজের সরবরাহ, যোগান ও ভারতীয় পিয়াজ চোরাচালানের মাধ্যমে সীমান্ত দিয়ে দেশে প্রবেশ করায় একদিনের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে প্রতিকেজি পিয়াজের পাইকারি ও খুচরা মূল্য ৫০ থেকে ৬০ টাকা কমেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন- পিয়াজের সরবরাহ ঠিক থাকলে সামনের দিনে দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই। পাতা পিয়াজ বাজারে আসতে শুরু করেছে। এখন বাজার নিম্নমুখী, একদিন আগেও হিলি স্থলবন্দরে প্রতিকেজি পিয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। সোমবার তা বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন পিয়াজের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ার কারণে পিয়াজের বেচাকেনায় ধস নেমে ছিল। ক্রেতার সংখ্যা ছিল অনেক কম। এখন পিয়াজের দাম কমায় ক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে ও পিয়াজের বেচাকেনাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাজার নজরদারিতে রাখলে সামনের দিনে আরো পিয়াজের দাম কমে আসবে।
গত ২৯শে সেপ্টেম্বর ভারত সরকার পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণার পর ৪ঠা অক্টোবর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ৫৭টি ট্রাকে প্রায় ১ হাজার টন পিয়াজ আমদানি হয়েছিল। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত আর কোনো পিয়াজ আমদানি হয়নি বন্দর দিয়ে। ফলে পিয়াজের বাজার ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠে। এখন দেশী পিয়াজের সরবরাহ ও ভারতীয় চোরাচালানের মাধ্যমে আসা পিয়াজের কারণে দাম অনেকটা কমে এসেছে। এদিকে পরিবহন নেতাদের মুখ থেকে শোনা যাচ্ছে দু’একদিনের মধ্যে পরিবহন ধর্মঘট শুরু হতে পারে। যদি পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়, তখন পিয়াজের বাজারে নতুন করে দামের বিরূপ প্রভাব পড়া শুরু হতে পারে। তাই কর্তৃপক্ষকে কঠোর নজরদারি করতে বলছেন ক্রেতারা। হিলি স্থলবন্দরের পিয়াজের আড়তদার ফেরদৌস রহমান জানান, পিয়াজের বাজার ঊর্ধ্বগতি হওয়ার কারণে বেচাকেনা একেবারে কমে গিয়েছিল। এখন দাম মোটামুটি কমায় বাজারে ক্রেতাদের দেখা মিলছে। দাম কমের কারণে ক্রেতারাও কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন। দেশী নতুন পিয়াজ পুরোদমে ওঠা শুরু হলে পাশাপাশি ভারত থেকে পিয়াজ আসা অব্যাহত থাকলে পিয়াজের বাজার নিম্নমুখী সহ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তার পরেও দেশী পিয়াজের সরবরাহ ও দামের ওপর নির্ভর করে অন্যান্য দেশের পিয়াজের দাম। এদিকে হিলি কাস্টমস-এর তথ্যমতে জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ২ লাখ ৪২ হাজার টন পিয়াজ আমদানি হয়েছিল।
চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৪ মাসে প্রায় ৪৮ হাজার টন পিয়াজ আমদানি হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় পিয়াজের জন্য অনেকটা নির্ভরতা করতে হয় ভারতের ওপর। সে দেশে পিয়াজের দাম বাড়লে বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়ে।