কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নে তীব্র ভাঙনে দু’শতাধিক বসতবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের ফলে আধাপাকা ধান কাটতে বাধ্য হয়েছেন কৃষকরা। বারবার জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে মাথা ঠুঁকেও গলেনি তাদের মন। অসহায় ভাঙনকবলিতদের দাবি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের। কিন্তু তীর রক্ষা বাঁধের প্রকল্প প্রস্তাবনা ফাইলবন্দি থাকায় কপাল পুড়ছে ভাঙন কবলিতদের। স্থানীয় আতিকুর ও নবাব আলী জানান, এই ইউনিয়নে ৬টি গ্রামে ৩ কিলোমিটার এলাকাব্যাপী ভাঙন চলছে। গত দেড় মাসে দুই শতাধিক বসতবাড়ি, কয়েকশ’ একর আবাদি জমি, গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গ্রামের ৩০/৪০ জন লোক জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে নদী ভাঙন রোধে কথা বলতে গেলেও তাদের কাছ থেকে কোনো আশ্বাস পাওয়া যায়নি।
ভাঙনকবলিত এলাকার মৃত নৈমুদ্দিনের পুত্র নবাব আলী এবং প্রতিবেশী বাচ্চু, আতিকুর ও হালিমা জানান, ভোরবেলা আমরা ঘর সরিয়েছি। আপাতত অন্যের জমিতে আশ্রয় নিলেও ভবিষ্যতের কথা ভেবে হতাশ এসব পরিবারের অভিভাবকরা। এই দীর্ঘ জীবনে অনেকবার তাদেরকে এই ধরনের পরিস্থিতিতে মুখোমুখি হতে হয়েছে। তখন জমির দাম কম ছিল। মানুষও অসহায়দের আশ্রয় দিতে কুণ্ঠা বোধ করতেন না। এখন সবকিছুর মূল্য বেড়ে গেছে। নদী ভাঙতে ভাঙতে মেইন ল্যান্ডে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় চলে এসেছে। এখানে জমির মূল্য অনেক বেশি। তাই কেউ জমি দিতে চায় না। এক বাঁধে হাজার হাজার ভিটেহীন পরিবার ঠাসাঠাসি করে বসবাস করছে। সেখানেও ঠাঁই নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। ফলে ভাঙনকবলিতদের অনেকেই খোলা আকাশে ছাপড়া তুলে আশ্রয় নিয়েছে। এখন পর্যন্ত এসব পরিবারের পাশে দাঁড়ায়নি কেউই। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর দাবি দ্রুত ডাম্পিং-এর কাজ শুরু করা। যাতে বসতভিটাসহ আবাদি জমি রক্ষা পায়। এ ব্যাপারে হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন জানান, ভাঙনের বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছি। যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, আমরা তীর রক্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত ৬০ মিটার জায়গায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করেছি। এখানে নতুন করে তীররক্ষা বাঁধের জন্য প্রকল্প পাঠানো হয়েছে।