ভারতে নির্বাচনের সময়ে কিছু রাজনৈতিক দল বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের ইস্যু নিয়ে রাজনীতি করে। মঙ্গলবার নয়া দিল্লিতে শেষ সাংবাদিক বৈঠকে এই অভিযোগ করেছেন ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের বিদায়ী হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলি। তিনি বলেছেন, অনুপ্রবেশের রাজনীতিকে ভারতে কিছু রাজনৈতিক দল ব্যবহার করে আসছে। বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ’র ভারতে অবৈধ বাংলাদেশিদের উইপোকার সঙ্গে তুলনা এবং পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি নেতাদের বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ নিয়ে লাগাতার অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারের এই মন্তব্যকে ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহল। উত্তর পূর্ব ভারতে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ নিয়ে প্রবল সমালোচনার প্রেক্ষিতে মোয়াজ্জেম আলি বলেছেন, ভারতে আসার চেয়ে আমার দেশের মানুষ সমুদ্রে সাঁতার কেটে ইতালিতে পৌঁছায়। আসলে বাংলাদেশের নাগরিকরা এমন সব জায়গায় যায় যেখানে বেশি উপার্জন সম্ভব। কিন্তু আপনারা তো জানেন ভারতের মাথাপিছু আয় তেমন উঁচু নয়। একই সঙ্গে বিদায়ী হাইকমিশনার জানিয়েছেন, গত বছরে বাংলাদেশ ২.৮ মিলিয়ন পর্যটক ভারতে পাঠিয়েছে। এরা ভারতীয় ভিসার নিয়ম ভঙ্গ করছে কিনা কিম্বা ভিসার মেয়াদ শেষেও থেকে যাচ্ছে কিনা তা নজরদারি করার জন্য ব্যবস্থা রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
এক প্রশ্নের উত্তরে বিদায়ী হাইকমিশনার বলেছেন, বাংলাদেশ কখনোই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মন্তব্য করেনি। জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপ বা সুপ্রিম কোর্টের অযোধ্যা রায় নিয়ে বাংলাদেশ কখনোই কোনও মন্তব্য করেনি। তবে তিনি সমাজে জঙ্গীবাদ এবং সন্ত্রাসবাদের বৃদ্ধি নিয়ে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন। একই সঙ্গে মোয়াজ্জেম আলি বলেছেন, বাংলাদেশে একাত্তরের চেতনাকে শক্তিশালী করতে ভারতের সাহায্য প্রয়োজন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ চরমপন্থীদের হুমকির মুখে রয়েছে। তাই বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত এবং একাত্তরের চেতনা শক্তিশালী করতে ভারতের সাহায্য প্রয়োজন। সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশে এখনও ধর্মনিরপেক্ষ এবং প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল রয়েছে। আগামী দিনেও তারা থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এ সব ব্যাপারেই ভারতের সহযোগিতাও প্রয়োজন। মোয়াজ্জেম আলি জানিয়েছেন, আগামী ২০২০ সালেই আখাউড়া ও আগরতলার মধ্যে রেল সংযোগ চালু হয়ে যাবে। এছাড়া আগামী বছরেই বাংলাদেশ চেন্নাইয়ে একটি উপ হাইকমিশন খুলতে চলেছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।