সকাল ১০টায় ইডেনে অনুশীলনে আসে বাংলাদেশ দল। তখন থেকেই গেটের বাইরে ছোট ছোট জটলা। না, বাংলাদেশের মানুষ নয়, এবার বাংলার ক্রিকেট সমর্থকরা ভিড় জমিয়েছে বাংলার ক্রিকেট হিরোদের দেখতে। সেই ভিড় বাড়তে বাড়তে দুপুর নাগাদ প্রায় জনসমাবেশে রূপ নেয় এলাকা। মুমিনুল হক সৌরভের দল যখন একজন একজন করে বের হচ্ছিল তখন সেকি চিৎকার। টাইগাররা ভাবতেই পারেনি এখানেও তাদের জন্য এমন সমর্থক থাকতে পারে। বিশেষ করে মুশফিকুর রহীম, মাহমুদুল্লাহ ও মোস্তাফিজ বের হতে জনতাকে থামাতে কলকাতা পুলিশের হিমশিম খেতে হলো। তবে ক্রিকেটারদের মনে কিন্তু চিন্তার শেষ নেই।
কেমন হবে গোলাপি বল! আর দিন রাতের টেস্ট কি হবে আবহাওয়ার আচরণ? এই সব কিছুই যে দলকে ভাবাচ্ছে তা অনেকটাই অনুমেয় অনুশীলন দেখে। নয়া স্পিন কোচ ড্যানিয়েল ভেট্টরির কথাতেও সেই চিন্তা স্পষ্ট। বিশেষ করে সন্ধ্যা নামতে কি হবে পরিস্থিতি। বিশেষ করে গোধূলি আলোয়। এ নিয়ে ভেট্টরি বলেন, ‘গোলাপি বল এমনিতে দিনের বেলাতে স্বাভাবিকই। কিন্তু যখন রাত নামবে তখন ব্যাপারটা ভিন্ন। সূর্যাস্ত এই অঞ্চলে খুব তাড়াতাড়ি হয়। আমার মনে হয় ওই সময়টাই গোলাপি বল প্রভাব রাখবে। যখন গোধূলির সময় হবে তখন আলো-আঁধারি অবস্থা, বল দেখা কঠিন। আমার অভিজ্ঞতা কেবল টিভিতে দেখেই। বিশেষত এই সময়টাই কিছু ভিন্নতা আমরা দেখব। উইকেট খুব ভালো হবে। শেষ সেশন খুব কৌতুহলউদ্দীপক হতে পারে।’
ইডেনে কাল দিন-রাতের টেস্ট শুরু হবে স্থানীয় সময় দুপুর ১টায়। দিনের আলোয় গোলাপি বল খুব বেশি ফারাক পার্থক্য তৈরী করবেনা বলেই ধারণা। তবে চিন্তার কারণ হলো সন্ধ্যায়। দুই দলই বলছে আলো থেকে আঁধারে যাওয়ার ওই সময়টাই নাকি ভীষণ কঠিন হতে পারে। পৌনে চারটা থেকে দ্বিতীয় সেশন শেষ হবে পৌঁনে ছয়টায়। ছয়টা থেকে রাত আটটায় হবে শেষ সেশন। তার মানে দ্বিতীয় সেশনের শেষ দিকটায় অনেকখানি সময় থাকবে গোধূলি আলোয়। যেখানে দুই দলই মুখোমুখি হতে পারে বড় সমস্যা। কারণ আলো থেকে অন্ধকারে যাওয়ার এই সময়টা দৃষ্টিশক্তিতে প্রভাব ফেলতে পারে। তখন গোলাপি রংয়ের বল দেখা, পিক করা, সামলানো হবে কঠিন। টাইগারদের স্পিন কোচ অবশ্য একটু ধারণা দিয়েছেন কি সমস্যা হতে পারে।
অন্যদিকে ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে গোলাপি বলে ম্যাচ খেলেছেন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান ঋদ্ধিমান সাহা। সে ম্যাচ কোকাবোরা বলে খেলা হলেও টেস্ট ম্যাচ হতে যাচ্ছে এসজি বলে। এ কারণেও ঋদ্ধিমানকে ভাবাচ্ছে গোধূলির সময়টা। তিনি বলেন, ‘গোধূলি বেলায় বল দেখা, পিক করা একটু কঠিন হয়। সেটা মানিয়ে নিতে হবে। এখন তো আর কিছু করার নেই। আর নতুন বলটা অন্যরকম বানিয়েছে। বোলারদের জন্য একটু সাহায্য থাকতে পারে।’ তবে আলো আধার নিয়ে যাই হোক দুই বাংলার ক্রিকেট সমর্থকরা অপেক্ষা করছেন চরম উত্তেজনা নিয়েই।