× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সিলেটে চ্যালেঞ্জের মুখে আসাদ

এক্সক্লুসিভ

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
২ ডিসেম্বর ২০১৯, সোমবার

সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে সাবেক মেয়র কামরানের প্রতিদ্বন্দ্বী নেই কেউ। এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে কেউ প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেননি। ফলে এখন পর্যন্ত এই পদে অপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কামরানই। তবে- সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে শুরু হয়েছে কাড়াকাড়ি। এই পদের জন্য লড়াইয়ে নেমেছেন অর্ধডজন প্রার্থী। ২০১১ সালে সাধারণ সম্পাদক পদকে ঘিরেই সিলেট আওয়ামী লীগে ক্ষোভ দেখা দিয়েছিলো। পরবর্তী সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে সেই ক্ষোভ প্রশমিত হয়। এ কারণে ৮ বছর পরের সম্মেলনকে ঘিরে আবারো সেই পুরনো বিভক্তি নতুন করে জেগে উঠেছে।
এতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ। এক সময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা আসাদ পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত। বিগত দিনের সেই ‘তকমা’ বহাল রেখেছেন। এরপরও স্বস্তিতে নেই আসাদ।

কারণ- তার সঙ্গে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন তারাও যোগ্য প্রার্থী। এরা হচ্ছেন- সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ফয়জুল আনোয়ার বিজিত চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ও শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ। এরা চারজনই সিলেটের রাজনীতিতে ফ্যাক্টর ও পরিচিত মুখ। দলের হাইকমান্ডের কাছে রয়েছে গ্রহণযোগ্যতা। ফলে এবার তারা আসাদকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে লবিং চালাচ্ছেন। আর আসাদও নিজেকে নিয়ে এবার নিজেই ধোঁয়াশা তৈরি করে রেখেছেন। এখনও জোর দিয়ে তিনি বলেননি কোন পদ চান। চোখ রয়েছে তার সভাপতি পদে। আর সেখানে না পারলে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হবেন- এমনটি জানিয়েছেন তার অনুসারীরা। বিগত ৮ বছরে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনে আসাদ ছিলেন নির্ভার। তার কমিটির সভাপতি অধিকতর সিনিয়র নেতা বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। মহানগরকে কামরান নিজের মতো করে পরিচালনা করেন। আসাদও তার সঙ্গে একাত্ম হয়ে সহযোগিতা করেছেন। এ কারণে জেলার মতো সাংগঠনিক ভাবে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ এবার বিতর্কিত হয়নি। বরং সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিয়ে সন্তুষ্ট রয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

তবে- বিগত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভূমিকা আসাদের রাজনীতির ক্যারিয়ারকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। যার কারণে আসাদ সহ সিলেটের তিন নেতা কেন্দ্রের শোকজও পেয়েছিলেন। মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন- সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের শুরুতে আসাদ মেয়র পদে মনোনয়নের জন্য দলের অভ্যন্তরে লড়াইয়ে নামেন। কামরানের সঙ্গে তিনি প্রতিদ্বন্ধিতাও গড়ে তোলেন। তার এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতাকে সবাই স্বাগত জানান। পরবর্তীতে দলীয় প্রধান ঢাকায় ডেকে নিয়ে কামরানকে মনোনয়ন দেন। আর আসাদকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সিলেটে ফিরে আসাদ সেই ভূমিকা পালন করেননি। নৌকার প্রার্থী পক্ষে তিনি ভোটের মাঠে নীরব থাকায় প্রশ্ন তোলেন সিলেটের কামরান অনুসারীরা। আসাদকে নিয়ে তুমুল বিতর্ক দেখা দেয় সিলেটে। নির্বাচনে কামরানের পরাজয়ে সিলেট আওয়ামী লীগ হোঁচট খায়। সব সিটি নির্বাচনে নৌকার জয় হলেও সিলেটের হার নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন। এরপর আসাদ সহ তিন নেতাকে শোকজ করা হয়।

পরবর্তীতে তারা শোকজের জবাবও দেন। এই ঘটনার পর থেকে মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ব্যাকফুটে ছিলেন আসাদ। পরে চেম্বার নির্বাচনের প্রশাসক হয়ে তিনি সেই কালিমা মুছে দেন। সিলেট চেম্বারের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের পর আসাদকে প্রশাসক করা হয়। আর আসাদের হাত ধরেই চেম্বার ফের গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে। সেখানে ভূমিকা রাখেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নাসির উদ্দিন খানও। ৮ বছর ধরে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ। এ কারণে রাজনীতিতে তিনি নিজেও তার অবস্থান সুসংহত করেছেন। আর এই সুসংহত করার পেছনে তিনি নিজেও জড়িয়ে পড়েছেন গ্রুপিং রাজনীতিতে। সিলেট আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ‘আসাদ বলয়’ নামে এই গ্রুপ ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগসহ অঙ্গ সংগঠনে তার ন্যায্য হিস্যা চায়। এসব অঙ্গ সংগঠনের কমিটিতে আসাদ গ্রুপের নেতারা গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আসীন হয়েছেন।

নিজের বলয় তৈরি করতে গিয়ে আসাদ কখনো কখনো গ্রুপিং রাজনীতিতে বিতর্কিত হয়েছেন। তার বলয়ের যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড আসাদের পরিচ্ছন্ন রাজনীতির ইমেজে আঘাত করেছে। কিন্তু বিতর্কিতদের ব্যাপারে আসাদ সব সময় সোচ্ছার ছিলেন। যখনই তার গ্রুপের কেউ বিতর্কে কিংবা মামলা জড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে তিনি অবস্থান নিয়েছেন। দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের রাজনীতি করার পর ১৯৯১ সালে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি হলে সেই কমিটিতে তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক নির্বাচিত হন আসাদ উদ্দিন আহমদ। এই কমিটির সভাপতি ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহিম এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এডভোকেট আবু নসর। প্রায় একযুগ জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আসাদ উদ্দিন। ২০০৩ সালে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ গঠন হলে সেই কমিটির ১ম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান এবং ২০১১ সালের নভেম্বরে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর