ভারতের মধ্যপ্রদেশে নারীকে ব্যবহার করে পাতা ফাঁদ বা বারে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ও অন্যান্য কর্মকর্তারা ৬৭ যুবতী ও অল্প সংখ্যক যুবককে উদ্ধার করেছে। মধ্যপ্রদেশে নারীদের ব্যবহার করে পাতা ‘হানি ট্রাপ’ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আছে ইন্দোর-ভিত্তিক একজন ব্যবসায়ীর। তার নাম জিতেন্দর সোনি। তিনি স্থানীয় একটি পত্রিকার মালিক। তার একটি নাইট ক্লাব ও অন্যান্য স্থাপনা থেকে ওইসব যুবতী ও যুবকদের উদ্ধার করে পুলিশ। এসব যুবক-যুবতী সেখানে বার ড্যান্সার হিসেবে কাজ করতো। এ খবর দিয়েছে ভারতের অনলাইন জি নিউজ।
শনিবার রাতে জিতেন্দর সোনির বাসভবন ও অন্যান্য স্থাপনায় অভিযান চালায় পুলিশের একটি টিম।
তারা সেখানে থেকে উদ্ধার করে ওই যুবতীদের। তাদেরকে একটি আশ্রয়ে রাখা হয়েছে এবং তাদের বক্তব্য রেকর্ড করেছে পুলিশ। পুলিশের মতে, এসব যুবতীর বেশির ভাগই আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের। তাদেরকে গীতা ভবন ক্রসিংয়ে জিতেন্দর সোনি পরিচালিত বার ‘মাই হোম’-এ রাখা হয়েছিল খুব নাজুক পরিবেশে। এসব যুবতীকে বার-এ নাচতে বাধ্য করা হতো। কাস্টমাররা যে অর্থ দিতেন তার থেকে সামান্য অংশই পেতেন ওই যুবতীরা।
তল্লাশিকালে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাইভ বুলেট ও ইলেক্ট্রিক ডিভাইস উদ্ধার করেছে। জিতেন্দর সোনির দুটি আবাসন সিল করে দেয়া হয়েছে। ভারতীয় দন্ডবিধির ৩৭০ ধারার অধীনে দুটি এফআইআর করেছে পুলিশ। সিনিয়র এসপি রুচি বর্ধন মিশ্র বলেছেন, অভিযুক্ত জিতেন্দর সোনি পলাতক রয়েছেন। তার ছেলে অমিত সোনিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যুবতীদের আটকে রেখে এভাবে ব্যবসা করায় অমিত সোনির ভূমিকার বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। তবে যদি তার বিরুদ্ধে ‘হানি ট্রাপে’ নারীদের ব্যবহার করার তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। রোববার জিতেন্দর সোনির পত্রিকা অফিস সিল করে দিয়েছে পুলিশ।
মধ্যপ্রদেশে হানি ট্রাপ চক্রের সঙ্গে প্রভাবশালী রাজনীতিক ও আমলাদের জড়িত থাকার একটি অডিও-ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ করে তার স্থানীয় পত্রিকা ‘সাঞ্ঝা লোকস্বামী’। এরপরই পুলিশ তৎপর হয়। জিতেন্দর সোনির অফিসে এভাবে তল্লাশির নিন্দা জানিয়েছে ইন্দোর প্রেসক্লাব ও সাংবাদিকদের অন্য সংগঠনগুলো। তারা বলেছে, পুলিশের এই কাজ হলো মিডিয়াকে ভয় দেখানো। তবে রাজ্য সরকারের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ইন্দোর মিউনিসিপ্যালের সাময়িক বরখাস্তকৃত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হরভজন সিংয়ের করা আইটি আইনের অধীনে অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর করা হয়েছে। হরভজন সিং দাবি করেছেন, জিতেন্দর সোনির পত্রিকা তার ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করে বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর প্রকাশ করেছে। কিছু আপত্তিকর ভিডিও ক্লিপের মাধ্যমে তাকে ব্লাকমেইল করা হয়েছে বলেও তিনি দাবিকরেছেন। তার অভিযোগ এর মাধ্যমে তার কাছ থেকে ৩ কোটি রুপি আদায় করে নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
এর আগে সেপ্টেম্বরে ইন্দোর ও ভুপাল থেকে একই রকম অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫ নারী ও এক পুরুষকে। অভিযুক্তরা হলেন আরতি দয়াল (২৯), মনিকা যাদব (১৮), শ্বেতা বিজয় জৈন (৩৯), শ্বেতা স্বপ্নীল জৈন (৪৮), বারখা সোনি (৩৪) ও ওমপ্রকাশ কোরি (৪৫)।