× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কেমন কাটছে চীনের ‘প্রযুক্তি প্রিন্সেসের’ একটি বছর

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৪ বছর আগে) ডিসেম্বর ২, ২০১৯, সোমবার, ২:২০ পূর্বাহ্ন

কেমন কাটছে জামিনে থাকা চীনের টেকনোলজি জায়ান্ট হিসেবে পরিচিত হুয়াওয়ের প্রধান অর্থনৈতিক নির্বাহী কর্মকর্তা মেং ওয়ানঝো’র সময়! এক বছর আগে তাকে কানাডায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তিনি জামিন পান। তবে মুক্তি মেলেনি। কিভাবে এই জামিনে থাকা জীবন অতিবাহিত করছেন তা তিনি নিজেই বিস্তারিত বলেছেন। তিনি বলেছেন, এ সময়ে বইয়ের পর বই পড়ার জন্য অনেক সময় তার হাতে। অথবা সতর্কতার সঙ্গে তেলচিত্র অঙ্কন করেন। প্রাতিষ্ঠানিক কোনো দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে না তাকে। ফলে এ সময়টা তার জন্য অন্যরকম এক সুযোগ এনে দিয়েছে।
এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

হুয়াওয়ের প্রতিষ্ঠাতা রেন ঝেংফেই’য়ের মেয়ে মেং ওয়ানঝো। তাকে বলা হয়ে থাকে চীনা প্রযুক্তির ‘প্রিন্সেস’। ইরানের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গোপনে তাদের সঙ্গে ব্যবসা চালানোর অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে গত বছর তাকে কানাডার ভ্যানকোভার বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চীন, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। কানাডার দু’জন নাগরিককে আটক করে চীন। তারা হলেন কনসালট্যান্ট মাইকেল স্পাভোর। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্ক আছে বলে অভিযোগ। অন্যজন সাবেক কূটনীতিক মাইকেল কোভরিগ। তিনি একটি এনজিওর সঙ্গে কাজ করতেন। এই দু’জনের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনে চীন। তবে কানাডা দাবি করে তাদেরকে খেয়ালখুশিমতো গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আটক ওই দুই কানাডিয়ানকে রাখা হয়েছে একটি বন্দি শিবিরে। কনস্যুলেটের স্টাফদের সঙ্গে শুধু তাদেরকে সাক্ষাত করতে অনুমতি দেয়া হয়েছে। এপ্রিলে রিপোর্ট পাওয়া যায় যে, তাদেরকে দিনে ৬ থেকে আট ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল। কখনো কখনো ২৪ ঘন্টা কৃত্রিম আলোর মধ্যে রাখা হয় বলেও খবর বের হয়। জুলাইয়ে প্রহরীরা মাইকেল কোভরিগের পড়ার চশমা কেড়ে নেয় বলে খবর প্রকাশিত হয়।

ওদিকে আটক করার ১১ দিন পরেই জামিন পান মেং ওয়ানঝো। হুয়াওয়ে’র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে তার খোলা চিঠি। এতে তিনি বলেছেন, তাকে জামিন দেয়ার আদালতের সিদ্ধান্তে উপস্থিত জনগণের মধ্যে যে স্বস্তি দেখা গিয়েছিল তাতে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। জামিনের শর্ত হিসেবে মেং’কে দেয়া হয়েছে একটি ইলেক্ট্রনিক ট্যাগ, রাত ১১টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত তিনি থাকবেন কারফিউয়ের মধ্যে। তবে তাকে ভ্যানকোভারের বেশির ভাগ স্থান ঘুরে বেড়ানোর অনুমতি দেয়া হয়েছে। রোববার মেং লিখেছেন, যখন আমি চীনের শেনঝেংয়ে ছিলাম তখন খুব দ্রুতগতিতে সময় ফুরিয়ে যেতো। আমার সব সময় মনে হতো, সব কিছু করার জন্য আমার সামনে কখনোই যথেষ্ট সময় আসবে না।

আর এখন মেং লিখেছেন, সময় এত আস্তে আস্তে যাচ্ছে যে, বই পড়ার জন্য আমার হাতে প্রচুর সময়। সহকর্মীদের সঙ্গে টুকিটাকি বিষয় নিয়ে কথা বলার সময় পাচ্ছি। আবার সতর্কতার সঙ্গে একটি তেলচিত্র অঙ্কন শেষ করতে পারছি। সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন মেং ওয়েনঝো। তাদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, এখানে কানাডার মানুষগুলো খুব দয়ালু। অ্যালোউটি কারেকশনাল সেন্টার ফর ওমেন-এর সংশোধনী বিষয়ক কর্মকর্তা ও সহ-বন্দিরা খুব দয়ালু। এই সংশোধনী কেন্দ্রে এখন অবস্থান করছেন মেং। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তাকে তুলে দেয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। এ বিষয়ে মামলার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে জানুয়ারিতে। ওই চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ নিয়ে কিছু বলেন নি মেং।

উল্লেখ্য, গত বছর আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ারসে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে এক নৈশভোজে বাণিজ্য যুদ্ধ ইস্যুতে আলোচনায় বসেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি জিনপিং এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এর পর পরই খবর প্রকাশিত হয় মেং ওয়ানঝো’কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুয়েন্স আয়ারসে দুই নেতা একটি সমঝোতায় আসেন এবং একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। কিন্তু কানাডা থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে চীনে তখন শুরু হয়ে যায় নতুন এক লড়াই। মেং’কে গ্রেপ্তারকে দেখা হয় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্যিক যুদ্ধের একটি টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে। চীনের দিক থেকে মেং’কে গ্রেপ্তার দেখা হয় একটি আক্রমণ হিসেবে, যেটাকে অন্যকিছুর সঙ্গে মেলানো যায় না। যদি হুয়াওয়েকে দেখা হয় চীনের প্রযুক্তি খাতের ক্রাউন জুয়েল হিসেবে, তাহলে মিসেস মেং হলেন এর প্রিন্সেস।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর