× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

একজন প্রতিবাদী শারমিন

ষোলো আনা

শাহাদাত হোসাইন স্বাধীন
৩ ডিসেম্বর ২০১৯, মঙ্গলবার
ছবি: জীবন আহমেদ

শারমিন আক্তার। অধ্যয়নরত আছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগে। দ্বিতীয় বর্ষে। থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রীতিলতা হলে। দু’চোখে আলো নেই কিন্তু মনের আলোতে আলোকিত তিনি। সেই সঙ্গে সমাজকে আলোকিত করতে চান তিনি।

শারমিনের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ইউনিয়নে। জন্মের পর কিছুটা চোখের আলো থাকলেও তৃতীয় শ্রেণিতে উঠার পর থেকে চোখে একদমই দেখতে পান না।
কিন্তু আলোহীন চোখ নিয়ে মনের আলোতে পার হয়েছেন দীর্ঘপথ।

২০১৫ সালে কৈখালী এস আর মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন শারমিন। এরপর ঢাকা এসে ভর্তি হন পুরান ঢাকার বদরুন্নেসা কলেজে। ২০১৭ সালে এইচএসসি পাস করেন শারমিন। স্বপ্ন ছিল একজন আইনজীবী হবেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাগ্যের লটারিতে ভর্তি হয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগে।

সমপ্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান ভিসিবিরোধী আন্দোলনে এসে আলোচিত হয়েছেন শারমিন। দৈনিক মানবজমিন-এ শারমিনকে নিয়ে ‘জাবি’র আন্দোলনে একজন শারমিন’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়।

শারমিন বলেন, মূলত ব্রেইল পদ্ধতিতে তাদের পড়াশোনা করতে হয়। তবে বোর্ড পরীক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগুলোতে তিনি সহযোগিতা নেন শ্রুতি লেখকের। সে ক্ষেত্রে শারমিনের সহযোগিতায় পাশে দাঁড়ান বন্ধু ও বিভাগের জুনিয়ররা। শারমিন বলেন, যেহেতু আমাদের দেশে ব্রেইল পদ্ধতি সহজলভ্য নয় তাই শ্রুতি লেখকের সহযোগিতা নিতে হয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের।

তবে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রচলিত রাইটিং ফ্রেমে লিখতেও পারদর্শী শারমিন। পড়াশোনার পাশাপাশি বিতর্ক করতে পছন্দ করেন তিনি। তবে দেশের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ও পাবলিক এরিয়া এখনো প্রতিবন্ধীবান্ধব না বলে আক্ষেপ করেন তিনি।

সমপ্রতি ভিসিবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেয়া নিয়ে জানতে চাইলে শারমিন বলেন, মূলত মিডিয়ার মাধ্যমে ঘটনা জানতে পারি। নৈতিক জায়গা থেকে আন্দোলনে যুক্ত হই। প্রথমে আন্দোলনে সরাসরি যুক্ত ছিলাম না। তবে আন্দোলনকারীদের উৎসাহ দিয়ে আসতাম। পরে আপনারা জানেন ছাত্রলীগ ও ‘শিক্ষকলীগ’-এর হামলায় কি বাজে পরিস্থিতি তৈরি হয়। জরুরিভিত্তিতে অনেককে হাসপাতালে নিতে হয়েছে। আন্দোলনের উপর এই ধরনের ন্যক্কারজনক হামলার পর আমি আর বসে থাকতে পারিনি। এরপর সরাসরি আন্দোলনে যোগ দেই। আমি এখন বাড়িতে এসেছি। আন্দোলনে এখনো যারা আছেন তাদের আমি স্যালুট জানাই। ক্যাম্পাসে ফিরলে আমি আবারো আন্দোলনে যোগ দেবো।

এভাবে একনাগাড়ে কথাগুলো বলছিলেন শারমিন। ব্যক্তিজীবনে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি তিনি। ন্যায়ের পক্ষে লড়ে যেতে চান। মনের দুয়ারের আলোর শক্তিতে জেগে ওঠা শারমিনরা যুগে যুগে বেঁচে থাকুক। যারা চোখ থাকিতে অন্ধ, তাদের মনে আলো ফুটুক শারমিনদের অনুপ্রেরণায়।
 
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর