ভারত, পাকিস্তান না থাকায় ক্রিকেটে স্বর্ণ জয়ে বাংলাদেশের একমাত্র বাধা শ্রীলঙ্কা। আসরে একমাত্র টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে নামার আগে মালদ্বীপের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। দুর্বল প্রতিপক্ষ মালদ্বীপের অনভিজ্ঞ বোলিং লাইনআপের বিরুদ্ধেও কাল কাঠমান্ডুতে প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারেননি না সৌম্য সরকার, নাঈম শেখ, নাজমুল হোসেন শান্তরা। হাফ সেঞ্চুরির দেখা পাননি বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যান। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট থেকে এসেছে সর্বোচ্চ ৪৯ রান। সৌম্য ৪৬ রান নাঈম শেখের ৩৮ রানের উপর ভর করে মালদ্বীপকে ১৭৫ রানের টার্গেট দেয় টাইগাররা। ১৭৪ রানের টার্গেটে মালদ্বীপ গুটিয়ে গেছে ৬৪ রানে। মালদ্বীপের দশ উইকেটের মধ্যে নয়টিই নিয়েছে বাংলাদেশের স্পিনাররাই।
এর মধ্যে তানভীর ইসলাম একাই নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। দু’টি করে উইকেট ঝুলিতে ভরেছেন মিনহাজুল আবেদিন আফ্রিদি ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। গতকাল কাঠমান্ডুর পাহাড় ঘেরা ত্রিভুবন ইউনিভার্সির্টি ক্রিকেট মাঠে শীতের সকালে উইকেটের চরিত্র বুঝতে টসে জিতে ব্যাটিং নেয় টাইগাররা। বিশ বছর আগে এই স্টেডিয়ামে এসিসি’র টুর্নামেন্ট খেলতে এসেছিল বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়ন ওই দলের সদস্য হাবিবুল বাসার সুমন ম্যানেজার এই দলের। ম্যাচের আগে উইকেট দেখে আগাম একটি ধারণা দিয়েছিলেন সুমন। তার ধারণা মতে এই উইকেটে ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং করা কঠিন হবে। সৌম্য-শান্তদের ব্যাটিং দেখে তাই হয়েছে। ম্যাচে পাঁচ উইকেট নেয়া তানভীরও জানালেন উইকেট থেকে বাড়তি সুবিধা পাওয়ার কথা। ‘আমাদের ব্যাটিংয়ের সময়ই বুঝতে পারি এটা টার্নিং উইকেট। ভালো জায়গায় বল করতে পারলে উইকেট পাবো।’ এ ধরনের উইকেটে ব্যাট করাটা কঠিন জানিয়ে এই স্পিনার বলেন, আমি বলবো আমাদের ব্যাটসম্যানরা খুব ভালো ব্যাট করেছে। ভালো ব্যাটিংয়ে আমরা বড় একটা স্কোর দাঁড় করিয়েছে। এসএ গেমসে প্রত্যাশা নিয়ে তানভীর বলেন, যে ভাবে শুরু করলাম এটা যদি ধরে রাখতে পারি অবশ্যই এখান থেকে স্বর্ণ জিতে ফিরতে পারবো আমরা।
টস জিতে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দেন দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও সৌম্য সরকার। ৭.২ ওভারে এই জুটি তোলে ৫৯ রান। দুই ওপেনারের মধ্যে তুলনামূলক আগ্রাসী ব্যাটিং করা নাঈমকে রানআউট করে জুটি ভাঙেন মোহামেদ মাহফুজ। ২৮ বলে চারটি চার ও এক ছক্কায় নাঈম করেন ৩৮ রান। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে এরপর দলকে আরও কিছুটা টানেন সৌম্য। দু’জনের জুটিতে ৩৬ বলে আসে ৫৩ রান। ৩৩ বলে চারটি চার ও দু’টি ছক্কায় ৪৬ রান করে মাহফুজের বলে আউট হন সৌম্য। ক্রিজে এসেই বোলারদের উপর চড়াও হয়েছিলেন আফিফ হোসেন। কিন্তু খুব বেশি সময় টেকেননি। ৯ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ১৬ রান করে স্টাস্পড হন আজিয়ান ফারহাতের বলে। ইয়াসির আলী চৌধুরীর সাথে শান্তর ১৫ বলে ২৯ রানের চতুর্থ উইকেট জুটিতে এরপর দলের সংগ্রহ আরও বাড়ে। ইনিংসের শেষ ওভারে ইব্রাহিম হাসানের বলে আউট হওয়ার আগে এক চার ও তিন ছক্কায় ৩৮ বলে ৪৯ রান করেন শান্ত। ইয়াসির অপরাজিত থাকেন ১২ রানে। রান তাড়ায় মালদ্বীপ কখনোই ঠিক জয়ের পথে ছিল না। রান তোলার গতি ছিল শ্লথ, পুরো ২০ ওভার ক্রিজে কাটিয়ে দেওয়াই যেন ছিল লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যটাও পূরণ হয়নি তাদের।