× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সরকারি টাকায় ইটভাটায় সংযোগ সেতু

বাংলারজমিন

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি
৫ ডিসেম্বর ২০১৯, বৃহস্পতিবার

ফরিদপুর উপজেলার বেড়হাউলিয়া গ্রামে ব্যক্তিমালিকানাধীন একটি ইটের ভাটায় সেতু নির্মাণ করেছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস। দুই বছর আগে ৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের নির্মিত এই সেতুতে ব্যয় হয়েছিল ৫৪ লাখ টাকা। ইটভাটার পাশের একটি খালের ওপর এই সেতু নির্মাণ করা হয়। এএইচএস নামের এই ইটভাটা মালিক বেড়হাউলিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী আবদুল আলীম ও সাইফুল ইসলাম। এলাকাবাসীর অভিযোগ, আগে খালের ভেতরে একটি পায়ে চলা পথ ছিল। পরে ভাটা মালিকপক্ষ, উপজেলা পিআইও অফিস ও ইউপি চেয়ারম্যানের যোগসাজশে সেতুটি নির্মাণ করেছে। এতে জনগণের কোনো উপকার হয়নি বলে জানান তারা। পিআইও অফিসের বক্তব্য, তারা রাজনৈতিক চাপে সেতুটি নির্মাণ করতে বাধ্য হয়েছেন।
সরজমিন ভাটার পার্শ্ববর্তী গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বড়াল নদী ঘেঁষে গড়ে তোলা এই ইটভাটার জায়গায় আগে বিভিন্ন ফসলের আবাদ হতো। এলাকায় গরু খামারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া এবং জমিগুলো উঁচু স্থানে হওয়ায় স্থানীয় কৃষকেরা এই জমিতে ঘাসের আবাদ করতে শুরু করেন। ফলে সব মৌসুমে এই জমিগুলো কৃষকদের ঘাসের চাহিদা পূরণ করে আসছিল। পরে প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা কৌশলে এক বছেরের মধ্যেই এই এলাকায় প্রায় ৩০ বিঘা জমি কিনে ও ইজারা নিয়ে নিজেদের আয়ত্তে নেয়। ২০১৬ সালে ওই সব আবাদি জমি ধ্বংস করে ইটভাটা করেন তারা। ৫৫ ফিট উচ্চতার চিমনিসহ এই ইটভাটা যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই নির্মাণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এমনকি আজ পর্যন্ত পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই চলছে ইট পোড়ানোর কাজ। পরে কৌশলে আরো ১০ বিঘা জমি ভাটায় যুক্ত করেন মালিকরা। ভাটা নির্মাণের পরে ১ বছর ভাটার ইট নদীপথে পরিবহন করা হতো। ভাটার দক্ষিণপাশে থাকা বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের (ওয়াপদা) খাল থাকায় সরাসরি বাঁধের সঙ্গে ভাটার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। খালের ভেতরে থাকা পায়ে চলা রাস্তা ব্যবহার করে ভাটার মালামাল পরিবহন করা হতো। এতে খরচ বেড়ে যেত। এ কারণে ভাটামালিকরা স্থানীয় চেয়ারম্যান সরোয়ার হোসেনকে দিয়ে পিআইও অফিসে সেতুর আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের কর্মকর্তারা প্রথমে নির্মাণস্থল পরিদর্শন করে সেতু নির্মাণে আপত্তি জানান। ভাটামালিকরা তাদের ম্যানেজ করেন এবং কৌশলে ওই সেতু নির্মাণে স্থানীয় সংসদ সদস্যের ডিও লেটারের ব্যবস্থাও করেন। পরে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৫৪ লাখ চার হাজার ৬৫০ টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্প পাস হয়। অর্থবছরের শেষে ২০১৭ সালের জুনে মোস্তাক ট্রেডার্স সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করে। নির্মাণ শেষে সেতুর দুই পাশে খালের মধ্যে নিজ খরচেই রাস্তা নির্মাণ করে নেন ভাটামালিকরা। ইটভাটার মালিক আবদুল আলীম দাবি করে বলেন, ‘সেতু বানানোর জন্য আমরা কোনো দপ্তরে যোগাযোগ করিনি।’ ফরিদপুর সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘এখানে সেতুর চিন্তা আগেই ছিল তবে ইটভাটা নির্মিত হওয়ার পরে সেতু বাস্তবায়িত হওয়ায় এই অভিযোগ উঠেছে।’ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বলেন, ওই সময়ে নির্মাণস্থল পরিদর্শন করে সেতু নির্মাণে আপত্তি জানিয়েছিল অফিস। কিন্তু স্থানীয় সংসদ সদস্যের ডিও লেটার ও রাজনৈতিক চাপের কারণেই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহাম্মদ আলী বলেন, যেহেতু সেতুটি নির্মিত হয়েই গেছে, সেহেতু এখন আর কিছু করার নেই।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর