নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার সুখদেবপুর-বানিয়াহারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রুনা আক্তার (১৪) কে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে বাবা ও সৎ মা’কে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার বড়তলী-বানিয়াহারী ইউনিয়নের সুখদেবপুর গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ এ ঘটনায় নিহত ওই স্কুলছাত্রীর লাশ উদ্ধার করার পর তার বাবা রফিকুল ইসলাম ও সৎ মা হ্যাপী আক্তারকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সুখদেবপুর গ্রামের মৃত আলী হোসেনের ছেলে রফিকুল ইসলামের সঙ্গে গত প্রায় ১৬ বছর আগে একই গ্রামের মৃত আবদুল খালেকের মেয়ে শাবানা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবনে চার সন্তানের জন্ম হয়। ওই চার সন্তানের মধ্যে স্কুলছাত্রী রুনা তাদের প্রথম সন্তান।
রফিকুল ও তার স্ত্রী শাবানার মধ্যে গত প্রায় দুই বছর আগে দাম্পত্য কলহ দেখা দিলে রফিকুল স্ত্রী শাবানাকে মারধর করে বড় মেয়ে রুনাকে নিজের কাছে রেখে অপর তিন সন্তানসহ শাবানাকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। এর কয়েকদিন পরেই রফিকুল পার্শ্ববর্তী বারহাট্টা উপজেলার সিংধা ইউনিয়নের মল্লিকপুর গ্রামের আবদুস ছাত্তারের মেয়ে হ্যাপী আক্তারকে বিয়ে করে বাড়ি নিয়ে যান।
পরে তাদের দাম্পত্য জীবনেও একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। এরপর থেকেই সৎ মা হ্যাপী আক্তার স্কুলছাত্রী রুনার ওপর বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন।
গত দু’দিন ধরে রুনা জ্বরে ভুগছিলো। বুধবার দুপুরে রুনা জ্বর নিয়ে ঘুমিয়ে থাকে। আর তার বাবা রফিকুল ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালানোর উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। এই সুযোগে সৎ মা হ্যাপী আক্তার স্কুলছাত্রী রুনাকে ঘুমন্ত অবস্থায় ঘরে একা পেয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। বিষয়টি প্রতিবেশীরা টের পেলে সৎ মা হ্যাপী আক্তার দ্রুত বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাক করে। কিন্তু প্রতিবেশীরা তাকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে সৎ মা হ্যাপী ও বাবা রফিকুলকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
বুধবার রাতে মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শওকত আলী জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রজু করা হয়েছে। নিহতের বাবা ও সৎ মাকে জিজ্ঞাসাবাদদের জন্য আটক করা হয়েছে। আর আজ সকালে নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে।