× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কুসুম কুটিরে মারা গেলেন পার্বতী দেবর গ্রেপ্তার

এক্সক্লুসিভ

মানবজমিন ডেস্ক
৮ ডিসেম্বর ২০১৯, রবিবার

তথাকথিত কুসুম কুটির বা ঋতুকালীন বিশেষ নিঃসঙ্গ ঘরে পার্বতী বুডা রাওয়াত (২১) নামে এক যুবতী মারা গেছেন। এ অভিযোগে নেপালের পুলিশ তার দেবরকে গ্রেপ্তার করেছে। পার্বতীকে ঋতুকালীন সময়ে একটি নিঃসঙ্গ কুটিরে রাখা হয়েছিল। তীব্র শীতের হাত থেকে রক্ষা পেতে তিনি এর ভেতরে আগুন জ্বালিয়েছিলেন। কিন্তু এ থেকে ধোঁয়ায় ভরে যায় তার ঘর। ফলে শ্বাসরোধ হয়ে মারা যান পার্বতী। সোমবার ওই ঘর থেকে তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এ খবর দিয়ে অনলাইন বিবিসি বলছে, ঋতুকালীন এবং সন্তান জন্মদানের পর নারীদের নাপাক আখ্যা দিয়ে রাখা হয় বিশেষ ধরনের বিচ্ছিন্ন ঘরে।
এ রীতিকে স্থানীয়ভাবে বলা হয় চৌপদী। এ ঘটনায় এরই মাঝে সেখানে অনেক নারী মারা যাওয়ায় তীব্র বিরোধিতা করা হয় এ চর্চার। এরই প্রেক্ষিতে সরকার এই চর্চাকে নিষিদ্ধ করে। তারপর পাবর্তী মারা যাওয়ায় প্রথম গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটলো। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে পার্বতীর দেবরকে তিন মাসের জেল ও ৩০০০ নেপালি রুপি জরিমানা করা হতে পারে।

পশ্চিমাঞ্চলীয় আছান জেলা পুলিশ বলেছে, তারা ঘটনা তদন্ত করছে। অভিযোগ আছে পাবর্তীর ২৫ বছর বয়সী দেবর ছত্রা রাওয়াত তাকে জোরপূর্বক ওই কুসুম কুটিরে থাকতে বাধ্য করেন। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত স্পষ্ট হওয়া যায়নি যে, তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে কিনা। বিবিসি লিখেছে, বহু শতাব্দীর পুরনো এই রীতি চালু ছিল নেপালে। এর অধীনে কোনো নারীর ঋতুস্রাব শুরু হলে অথবা সন্তান জন্মদানের পর তাদেরকে নাপাক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তাদেরকে জোরপূর্বক কুঁড়েঘরে অথবা গোয়ালঘরে থাকতে বাধ্য করা হয়। খাদ্য, ধর্মীয় প্রতীক এবং পুরুষদের স্পর্শ করার ক্ষেত্রে তাদের ওপর থাকে নিষেধাজ্ঞা। তাদেরকে যেসব ঘরে থাকতে বাধ্য করা হয় তা হতে পারে অস্বাভাবিক ঠাণ্ডা। ভেতরে যিনি বা যারা থাকেন তারা হামলারও শিকার হতে পারেন। এর আগে এমন ঘরে শ্বাসরোধ হওয়ার বেশকিছু ঘটনার খবর পাওয়া যায়। কমপক্ষে একটি টিনেজ বালিকা এমন ঘরে সাপের কামড়ে প্রাণ হারিয়েছে।

অবশেষে এ নিয়ে তীব্র নিন্দার ফলে ২০০৫ সালে সরকার নারী ও যুবতীদের এই রীতির অধীনে পরিবারের বাইরে রাখার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। ২০১৭ সালে একে শাস্তিযোগ্য ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। তা সত্ত্বেও কিছু প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনো এ রীতি প্রচলিত আছে। সেখানে এই রীতি খুব খারাপ ফল বয়ে আনছে। এ বছরে এমন ঘরে কমপক্ষে তিনজন নারী মারা গেছেন। এর মধ্যে একটি ঘটনায় দুটি সন্তান সহ এক মা শ্বাসরোধ হয়ে মারা গেছেন। বার্তা সংস্থা এএফপিকে নেপালের অধিকারকর্মী রাধা পাউডেল বলেছেন, পুলিশ সক্রিয়ভাবে পদক্ষেপ নিচ্ছে এটা একটা ইতিবাচক দিক। এর ফলে এই রীতি অনুসরণে অনুৎসাহিত করবে লোকজনকে। তবে এখনো এই রীতি বন্ধ করতে অনেক পথ যেতে হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর