× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলজিইডি’তে রাস্তা সংস্কারে লুটের মডেল

দেশ বিদেশ

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে
৮ ডিসেম্বর ২০১৯, রবিবার

নির্মাণ সামগ্রীর অবস্থা যা তা। নিম্নমানের ইট, বিটুমিন, বালি আর মাটি মিশ্রিত পাথর। এ দিয়েই সংস্কার করা হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ-তালশহর সড়ক। ৫ কোটি ২৭ লাখ টাকার এই কাজের মান দেখে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। ওই এলাকার ৩ ইউপি চেয়ারম্যান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রধান প্রকৌশলীর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ৫ই ডিসেম্বর আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সালাহউদ্দিন, তালশহর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবু সামা ও আড়াইসিধা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সেলিমের দেয়া ওই লিখিত অভিযোগে বলা হয়, এর আগে তারা কাজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশলীকে জানিয়েছিলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে নিম্নমানের উপকরণ ও নির্মাণ সামগ্রীর নমুনা দেয়া হয়। কিন্তু এসবের তোয়াক্কা না করে ঠিকাদার কাজ চালিয়ে যেতে থাকে।
জেলা সদরে যাতায়াতে বিকল্প সড়ক হিসেবে পরিচিত এই সড়কটির ৮ কিলোমিটার অংশের সংস্কার কাজের জন্য গত বছরের ১৬ই জুন দরপত্র আহ্বান করে এলজিইডি। মেসার্স লোকমান হোসেন অ্যান্ড মোস্তফা কামাল (জেবি) এই কাজের ঠিকাদার নিযুক্ত হয়। ৫ কোটি ২৭ লাখ টাকায় কাজ সম্পন্ন করার চুক্তি হয় ঠিকাদারের সঙ্গে। চুক্তিমতে এ বছরের জুন মাসে সংস্কার কাজ শুরু করার কথা থাকলেও প্রায় ৪ মাস পিছিয়ে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি ঠিকাদার কাজ শুরু করে। কিন্তু কাজ শুরুর পর থেকেই নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ করার অভিযোগ উঠে। শিডিউলে যে মানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করার কথা তারচেয়েও অনেক নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে কাজ করার অভিযোগ করেন এলাকার জনপ্রতিনিধি ও মানুষজন। শুক্রবার সরজমিন ওই সড়কে গিয়ে দেখা গেছে, হাতের স্পর্শেই উঠে আসছে সড়কের কার্পেটিং। নিম্নমানের ইটের খোয়া, বিটুমিন এবং মাটি মিশ্রিত পাথরসহ অন্যান্য উপকরণ দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। তল্লা গ্রামের বাসিন্দা ও মুক্তিযোদ্ধা মো. সিরাজ উদ্দিন বলেন, এই সড়কটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন পর সড়কটি সংস্কার হওয়ার খবরে আমরা আনন্দিত হয়েছিলাম। কিন্তু যেভাবে কাজ হচ্ছে তাতে আমরা হতাশ। ওই গ্রামের আরেক বাসিন্দা মো. দুলাল মিয়া জানান, সড়কের কাজ শিডিউল মতো হচ্ছে না। উপরে কিছু পাথর দিয়ে নিচে মাটি দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য হারুনুর রশীদ জানান, এই রাস্তাটি দিয়ে তিন ইউনিয়নের মানুষ চলাফেরা করে। কাজ দেখে মনে হচ্ছে এরচেয়ে নিম্নমানের কাজ আর হতে পারে না। ৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা বাজেট হলেও যে কাজ হচ্ছে তাতে দুই কোটি টাকাও লাগবে না। আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, কয়েক দফায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করার পরও তারা নিম্নমানের সামগ্রী দিয়েই কাজ করে যাচ্ছে। আমরা এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ দিয়েছি। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করা বন্ধ না হলে আমরা আন্দোলন করবো। তবে সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স লোকমান হোসেনের স্বত্বাধিকারী লোকমান হোসেন বলেন, যেটা মাটি বলা হচ্ছে সেটা পাথরের ডাস্ট। শিডিউল মোতাবেক কাজ হচ্ছে। এলজিইডি’র আশুগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মরিয়ম আখতার বলেন, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগটি আমরা খতিয়ে দেখছি। কিছু সামগ্রীতে সমস্যা থাকার কারণে আমরা ইতিমধ্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছি। এলজিইডি’র ব্রাহ্মণবাড়িয়া নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, শনিবার সকালে ওই রাস্তা পরিদর্শনে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। স্থানীয়রা যেহেতু চাচ্ছেন না তাই কাজ বন্ধ থাকবে। তিনি বলেন, এটা খুব দুঃখজনক ঘটনা। অবাক লাগে কীভাবে ইউপি চেয়ারম্যানরা উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও দুর্ব্যবহার করে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর