প্রায় ছয় মাস ধরে বিক্ষোভে জর্জরিত চীনশাসিত হংকং। রোববার বিক্ষোভের সমর্থনে কালো পোশাক পরে শহরটির রাস্তায় নেমে এসেছে সর্বস্তরের জনগণ। সরকার-বিরোধী বিক্ষোভের সমর্থনে মিছিল করেছে তারা। ‘স্বাধীনতার জন্য লড়ো, হংকংয়ের পাশে দাঁড়াও’ স্লোগান দিয়ে ভিক্টোরিয়া পার্ক থেকে কজওয়ে বে হয়ে চেটার রোড পর্যন্ত পদযাত্রা করেছে ছোট থেকে বড় সকল সরকার-বিরোধী কর্মীরা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রোববারের শান্তিপূর্ণ মিছিলের আয়োজন করেছে সিভিল হিউম্যান রাইটস ফ্রন্ট (সিএইচআরএফ)। এ সংগঠনটিই জুন মাসে লাখো মানুষের মিছিলের আয়োজন করেছিল। ১৮ই আগস্টের পর এই প্রথম তাদের ফের মিছিল আয়োজনের অনুমতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। মিছিলে অংশগ্রহণকারী ৪০ বছর বয়সী এক নারী বলেন, আমি আমার স্বাধীনতার জন্য আমৃত্যু লড়াই করে যাবো। কারণ আমি হংকংয়ের একজন বাসিন্দা।
আজকের দিনটি হংকং ও আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের পাশে দাঁড়ানোর দিন। সাবেক বৃটিশ কলোনি হংকং গত শতকের শেষের দশকে চীনের সঙ্গে যুক্ত হয়। কিন্তু ‘এক দেশ, দুই নীতি’ ব্যবস্থার অধীনে বেশ খানিকটা স্বায়ত্তশাসন উপভোগ করে শহরটি। সামপ্রতিক সময়ে অনেক সমালোচক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, হংকংয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ কঠোর করছে চীনের কেন্দ্রীয় সরকার। চলতি বছর হংকং কর্তৃপক্ষ হংকং থেকে চীনের মূল ভূখণ্ডে আসামি প্রত্যর্পণ একটি বিলের প্রস্তাব উত্থাপন করে। এতে শহরটির বিচার ব্যবস্থায় বেইজিংয়ের প্রভাব বৃদ্ধির আশঙ্কা প্রকাশ করেন অনেকে। বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। জুনের শুরুর দিকে ১০ লাখের বেশি মানুষ বিলটি প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ করে। এরপর থেকে টানা বিক্ষোভ চলতে থাকে সেখানে। রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভের মুখে বিল বাতিল ঘোষণা করে হংকং সরকার। তবে ততদিনে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পায়। ওঠে সরকার পরিবর্তনের দাবি। গত মাসে জেলা পরিষদ নির্বাচনের আগ দিয়ে বিক্ষোভ কিছুটা স্তিমিত হয়। নির্বাচনে ব্যাপক ব্যবধানে জয়ী হয় গণতন্ত্রপন্থিরা। তবে সামপ্রতিক সপ্তাহে তা ফের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠছে। রোববারের বিশাল মিছিল তারই দৃষ্টান্ত।
শনিবার পুলিশ জানিয়েছে, ছুরি, আতসবাজি, গুলি, বন্দুক সহ নানা ধরনের অস্ত্র সহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছয় মাসের মধ্যে এই প্রথম এধরনের অস্ত্র জব্দ করেছে পুলিশ।