× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

টাইমের ‘পার্সন অব দ্য ইয়ার’ গ্রেটা থানবার্গ

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৪ বছর আগে) ডিসেম্বর ১১, ২০১৯, বুধবার, ৮:১৪ পূর্বাহ্ন

প্রভাবশালী মার্কিন সাময়িকী ‘টাইম ম্যাগাজিন’ এর চলতি বছরের ‘পার্সন অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে সুইডিশ কিশোরী পরিবেশকর্মী গ্রেটা থানবার্গ। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সোচ্চার হয়ে আন্তর্জাতিক খ্যাতি পেয়েছে ১৬ বছর বয়সি গ্রেটা। বুধবার তাকে বছরের সেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে নির্বাচিত করার ঘোষণা দেয় টাইম ম্যাগাজিন।
বিশ্বের সবচেয়ে কমবয়সী ও প্রভাবশালী পরিবেশকর্মীদের একজন গ্রেটা। ১৫ বছর বয়সে ক্লাস বাতিল করে সুইডিশ পার্লামেন্টের বাইরে গিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে সে। সুইডিশ ভাষায় একটি ব্যানারে ‘জলবায়ুর জন্য স্কুল ধর্মঘট’ লিখে বিক্ষোভে নামে কিশোরী। এরপর থেকে অল্প সময়ে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে তার বিক্ষোভের খবর। দেশে দেশে তার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা। ক্লাস বাতিল করে নিজ সরকারের প্রতি জলবায়ু পরিবর্তন থামাতে পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে আন্দোলনে নামে তারা।
তাদের ওই বিক্ষোভ ‘ভবিষ্যতের জন্য শুক্রবার’ আন্দোলন হিসেবে পরিচিত পায়।
গ্রেটার সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হচ্ছে তার খোলাখুলি ও সাবলীল বক্তব্য। বিশ্ব নেতাদের নজর কাড়তে বাধ্য হয়েছিল তার বক্তব্যের ভাষা। এখন পর্যন্ত জাতিসংঘ, মার্কিন কংগ্রেসসহ বহু আন্তর্জাতিক সংস্থার নানা আয়োজনে উচ্চ-পর্যায়ের নেতাদের সামনে দেয়া তার বক্তব্য বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
অল্প বয়সে গ্রেটার ‘এসপারজার সিনড্রোম’ ধরা পড়ে। এই সিনড্রোমের কিছু সুবিধা আছে। যেমন, এ সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশুদের ভাষার বিকাশ সময়মতো হয়, বুদ্ধিমত্তা গড়পড়তা শিশুদের তুলনায় বেশি হয়, শৃঙ্খলা বজার রাখতে সবসময় তৎপর থাকে। গ্রেটা জলবায়ু পরিবর্তন স¤পর্কে প্রথম জানে ৮ বছর বয়সে। এরপর থেকেই বৈশ্বিক এই সমস্যাটি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে শিশু গ্রেটা। এমনকি বিষণèতাও দেখা দেয় তার মধ্যে। গত বছর মার্কিন গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে সে জানায়, ‘আমার জন্য ব্যাপারটা খুব অদ্ভুত ঠেকতো। মানুষ, একটি প্রাণী প্রজাতী। এই প্রজাতি পৃথিবীর জলবায়ু পাল্টে দিতে সক্ষম।’
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে উদ্বেগ থেকে এক পর্যায়ে মাংস খাওয়া ছেড়ে দেয় গ্রেটা। বাদ দিয়ে দেয় বিমানে ভ্রমণ করা। ব্যক্তি পর্যায়ে কার্বন নির্গমন কমানোর চেষ্টার জন্যই তার এসব পদক্ষেপ। চলতি বছর জাতিসংঘের একটি সম্মেলনে যোগ দিতে দুই দিন ধরে কার্বন নির্গমন করে না এমন একটি নৌকায় করে নিউ ইয়র্ক পৌঁছায় সে। ওই সম্মেলনে বিশ্ব নেতাদের প্রতি তার ভাষণ ব্যাপক সাড়া ফেলে। বিশ্বনেতাদের বিরুদ্ধে, ফাঁকাবুলি দিয়ে তার শৈশব ও স্বপ্ন ভেঙে দেয়ার অভিযোগ আনে গ্রেটা।
সম্মেলনে গ্রেটা বলেছিল, ‘মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মানুষ মরছে। পুরো বাস্তুসংস্থান ধসে পড়ছে। আমরা গণবিলুপ্তির শুরুর দিকে আছি। আর আপনারা কেবল অর্থ নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির রূপকথা শোনাতে পারেন। কত সাহস আপনাদের!’ তার ‘কত সাহস আপনাদের!’ (হাউ ডেয়ার ইউ) লাইন বিশ্বজুড়ে আন্দোলনের ¯ে¬াগানে পরিণত হয়।
এ বছর মার্কিন কংগ্রেসে আইনপ্রণেতদের উদ্দেশেও বক্তব্য রেখেছিল গ্রেটা। বক্তব্য দেয়ার জন্য একটি লিখিত প্রতিলিপি তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু গ্রেটা ওই প্রতিলিপি পড়ে বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি। এর বদলে সে জাতিসংঘের জলবায়ু সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছিল। মার্কিন আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে বলেছিল, ‘ আমি চাই না, আপনারা আমার কথা শুনুন। আমি চাই, আপনারা বিজ্ঞানীদের কথা শুনুন। বিজ্ঞানের পেছনে ঐক্যবদ্ধ হন।’
চলতি বছর গ্রেটা ও আরো ১৫ তরুণ জলবায়ুকর্মী জাতিসংঘের শিশু অধিকার কনভেনশনের আওতায় পাঁচ দেশের বিরুদ্ধে আইনি অভিযোগ দায়ের করে। দেশগুলো হচ্ছে- ব্রাজিল, জার্মানি, আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স ও তুরস্ক। এ দেশগুলো বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কার্বন নির্গমনের উৎস। গ্রেটা ও অন্যান্যরা অভিযোগ করে, এই পাঁচ দেশ জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
তার কাজের জন্য চলতি বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্যও মনোনীত হয়েছিল গ্রেটা। নোবেল পুরস্কারের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী মনোনয়নপ্রাপ্তদের একজন সে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর