মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া প্রান্তে গতকাল দুপুরে স্থায়ীভাবে বসেছে পদ্মা সেতুর ১৮তম স্প্যান (৩-ই)। নদীর মাঝ পয়েন্টে ১৭ ও ১৮ নম্বর পিলারের উপর এ স্প্যান তোলা হয় দুপুর সাড়ে ১২টায়। এতে সেতুর দৃশ্যমান হয়েছে ২ হাজার ৭শ’ মিটার অবকাঠামো। এর আগে গত ২৬শে নভেম্বর দুপুর সোয়া ২টার দিকে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের (৪-ডি) স্প্যানটি ২২ ও ২৩ নম্বর পিলারের উপর স্থায়ীভাবে বসানোর মাধ্যমে পদ্মার মূলসেতুর ২ হাজার ৫৫০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছিল। এ ছাড়া চলতি এ মাসে আরো দুটি স্প্যান ২১ ও ২২ নম্বর পিলার এবং ১৮ ও ১৯ নম্বর পিলারের উপর স্থাপন করার কথা জানিয়েছেন পদ্মা সেতু প্রকল্পের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. হুমায়ন কবীর। পদ্মা সেতু প্রকল্পের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. হুমায়ন কবীর জানান, পদ্মা নদী এখন অনেকটা শান্ত। আগের মতো স্রোত নেই। নদী শান্ত হওয়ায় সেতুর কাজে এসেছে ব্যাপক গতি।
গেল বর্ষা মৌসুমে ৪ মাসে বসানো গেছে মাত্র ১টি স্প্যান। সেখানে গত এক মাসেরও কম সময়ে বসতে যাচ্ছে ৩টি স্প্যান। গত ১৯শে নভেম্বর ১৬তম স্প্যান ও ২৬শে নভেম্বর ১৭তম স্প্যান বসানোর পর গতকাল দুপুরে স্থাপন করা হলো ১৮তম স্প্যান। এদিকে, মাওয়ার কুমারভোগ ইয়ার্ড থেকে গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় ক্রেনে ১৮তম স্প্যান পিলারের কাছে নেয়া হয়। এরপর দুপুর ১টার দিকে ১৭ ও ১৮ নম্বর পিলারের উপর স্প্যানটি স্থায়ীভাবে স্থাপন করা হয়। তিনি জানান, সব চ্যালেঞ্জ জয় করে এগিয়ে যাচ্ছে মূল সেতুর কাজ। পিলারের পাশাপাশি স্প্যান, রোডওয়ে ও রেলওয়ের কাজও এগিয়ে চলছে। পুরো সেতুতে ২ হাজার ৯৩১টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে। আর রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে ২ হাজার ৯৫৯টি। সেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে পুরো প্রস্তুত এখন ৩৩টি। ৪২টি পিলারের উপর ৪১টি স্প্যান বসানো হবে। প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার। এ পর্যন্ত পুরো প্রকল্পের কাজে অগ্রগতি হয়েছে ৭৬ ভাগ। এর মধ্যে সেতুর কাজে অগ্রগতি হয়েছে ৮৫ ভাগ আর নদী শাসনের কাজ ৬৫ ভাগ। দ্বিতলবিশিষ্ট কংক্রিট আর স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ৭২ ফুট প্রস্থের পদ্মা সেতু। ভায়াডাক্ট ৩ দশমিক ১৮ কিলোমিটার। উচ্চতা ৬০ ফুট, চার লেনের সড়ক ও নিচের তলায় ট্রেন লাইন থাকবে। আরো থাকছে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগ পরিবহন সুবিধা। কাজ করছে প্রায় চার হাজার মানুষ, ভায়াডাক্ট পিলার ৮১টি, উচ্চতা হবে ৬০ ফুট, পাইলিং গভীরতা ৩৮৩ ফুট। মোট পিলারের সংখ্যা ৪২টি, প্রতি পিলারের জন্য পাইলিং হবে ৬টি, মোট পাইলিংয়ের সংখ্যা ২৬৪টি।