রংপুরের গঙ্গাচড়ায় কৃষি জমিতে আবাসন নির্মাণের প্রকল্পের প্রস্তাব করেছে সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান। চাষাবাদকৃত কৃষি জমিতে আবাসন নির্মাণের প্রস্তাবিত প্রকল্প বাতিলের দাবি করেছে স্থানীয় কৃষকগণ। তারা জেলা প্রশাসকের কাছে আবাসন প্রস্তাব বাতিল চেয়ে আবেদন করেছে। ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের প্রস্তাবেই গত ৩ বছরেই আরো ৪টি আবাসন প্রকল্প নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এটি তার আবাসন নির্মাণের পঞ্চম প্রস্তাব। এসব অভিযোগ জানালেন স্থানীয় কৃষকরা। স্থানীয় কৃষকরা জানায়, মর্নেয়া ইউনিয়নের নিলারপাড়া এলাকায় ২৩ একর খাস জমি রয়েছে। এর মধ্যে ৩ দশমিক ৫ একর জমি আবাসন প্রকল্পের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। যার সাবেক দাগ নং ৫৩৬, হাল দাগ নং ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৯, ৩০, ৩১ ও ৪১।
দাগভুক্ত জমিগুলো রয়েছে একই প্লটে। ওই জমিগুলো স্থানীয় ২২ টি ভূমিহীন, দিনমজুর ও ক্ষুদ্র-প্রান্তিক চাষি পরিবার দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন খাদ্যশষ্য ফসল চাষাবাদসহ ভোগদখল করে আসছেন। এছাড়া জমিগুলো ৩ ফসলী ও ৮টি ভূমিহীন পরিবারের বসতবাড়ি রয়েছে এবং বিদ্যুৎলাইন স্থাপন করা হয়েছে। সরজমিন গেলে স্থানীয় আবদুুল ওয়াহেদ আলী (৩৫), (৩৫), মফিজ শেখ (৭০), সাইয়েদ আলী (৫৫), শাহীনুর (২৬), হযরত আলী (৫০)সহ অনেকে জানান, প্রস্তাবিত নিলারপাড়া আবাসন প্রকল্পের ৩ ফসলী জমিগুলোতে প্রকল্প নির্মাণ করলে আমাদের ৮টি পরিবারকে উচ্ছেদ হতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে আমাদের ২২টি পরিবারকে আবাদি জমি হারিয়ে পথে বসতে হবে। তারা আরো জানান, এখানে অনেক (২৩ একর) খাস জমি রয়েছে। সেখানে কোনো বসতবাড়িও নাই এবং ওই জমিগুলো ৩ ফসলীও নয়। সে জমিগুলোতে প্রকল্প নির্মাণ করলে নিরাশ্রয় পরিবারগুলো উপকৃত হতো। সেই সঙ্গে সরকারের মহৎ উদ্দেশ্যও সফল-সার্থক হতো। স্থানীয়রা আরো জানান, মর্নেয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক আলীর প্রস্তাবে ও প্রচেষ্টায় গত ৩ বছরেই আরো ৪টি আবাসন প্রকল্প এই ইউনিয়নে নির্মাণ করা হয়েছে। সে সব আবাসনে এখনও অনেক ঘর খালি রয়েছে। অথচ কাগজপত্রে বসতবাড়ি আছে এমন অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারের নামে সে সব ঘর বরাদ্দ দেখানো হয়েছে। তারা আবাসনে ঘর বরাদ্দ নিয়ে নিজ দখলে রেখেছেন। তবে আবাসনের বাইরে নিজস্ব বাড়িতেই তারা বসবাস করছেন। এ অবস্থায় স্থানীয়রা প্রস্তাবিত আবাসন প্রকল্পের বসতবাড়িসহ ৩ ফসলী জমির স্থান পরিবর্তন করে অন্যত্র বসতহীন ও ১ ফসলী জমিগুলোতে প্রকল্পটি স্থানান্তরের দাবি করেন। এ বিষয়ে মর্নেয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক আলী জানান, ওই জমিগুলো খাস হওয়ায় আমি আবাসন নির্মাণের জন্য প্রকল্পের প্রস্তাব দাখিল করেছি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, আবাসন প্রকল্পের প্রস্তাবিত জমিগুলো তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।